আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার জন্য যারা মায়াকান্না করছেন, যদিও বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিন দিন ধরে আমরা মিডিয়ায় এর জন্য সুশীল কথা শুনছি, কিন্তু গুম হওয়া পরিবারগুলোর জন্য কোনোদিন সুশীলদের মুখ থেকে সহানুভূতির শব্দ শুনলাম না।
বুধবার (২৫ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মায়ের ডাক এবং মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র আয়োজিত ‘নির্যাতনের শিকারদের সহায়তা, বিচার ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে’ জাতীয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, এই পরিবারগুলোর জন্য কী গণমাধ্যমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে? এই হচ্ছে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য—সময় বদলায়, কিন্তু তার বয়ান বদলায় না। এমন এক পরিবেশ তৈরি করে দেয়, যেখানে নুরুল হুদার গলায় জুতার মালা পরানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়, হাজার হাজার হারিয়ে যাওয়া মানুষের গল্পের মূল্যায়ন নেয়।
তিনি বলেন, একজন মা এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাই, আর কত কাঁদলে আমরা বিচার পাবো? এইটা বলে দেন। তাহলে আমরা আরও কিছুদিন কাঁদবো, তারপর থামবো।’
এবি পার্টির এই নেতা বলেন, ‘আমার ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ভাঙতে পারছি না, এফডিআর ভাঙতে পারছি না, জমির মিউটেশন করতে পারছি না, মেয়ের বিয়ে দিতে পারছি না।’
‘সমাজে একটা ট্যাবু আছে—বাবা না থাকলে, তার ওপরে গুজব থাকে। ও মাস্তান ছিল, চাঁদাবাজ ছিল, বিএনপি করতো’—এইসব রটানো হয়। সেই কারণে মেয়ের বিয়েতে সমস্যা হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন বলেন, ১০ মাস পার হয়ে গেলেও কতজন মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শহীদ হয়েছেন, কতজন গুম হয়েছেন—আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না; যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই তালিকাটি নির্মোহভাবে তৈরি করা জরুরি ছিল এবং রাষ্ট্রের উচিত ছিল প্রত্যেক পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসলে এই বিষয়গুলো নিশ্চিতভাবে করবে—এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি। প্রত্যেক শহীদ ও গুম হওয়া পরিবারের পাশে আমরা থাকবো, তদন্ত করবো, আর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যেন কখনও ‘আয়নাঘর’ তৈরি না হয়—তার নিশ্চয়তা দেবো।
সভায় গুম এবং নির্যাতনের শিকার হওয়া অনেক পরিবারের সদস্যরা তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নির্মমতার বিবরণ তুলে ধরেন। এ ছাড়াও সেখানে বক্তব্য রাখেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব প্রমুখ।