৩০ বছর বয়সে অভিষেক হলো ফজলে মাহমুদ রাব্বির। রবিবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুরে বাংলাদেশের ১২৯তম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্যাপ পড়েছেন। রঙিন পোশাকে যদিও তার শুরুটা হলো বিবর্ণ! প্রস্তুতি ম্যাচের ব্যর্থতা টেনে আনলেন অভিষেকেও। গত শুক্রবার ১৩ রান করলেও আজ বিদায় নিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই।
সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান ফজলে রাব্বির মাথায় ওয়ানডে ক্যাপ পড়িয়ে দেন।
২০০৪ সাল থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ বাঁহাতি অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি। পুরো ক্যারিয়ারেই উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছেন। গত ৩-৪ বছর ধরে তার ব্যাট ধারাবাহিক থাকায় তার প্রতিদান পেলেন অভিষিক্ত হয়ে।
গত কয়েক বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটের পাশাপাশি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্স এবং সাকিবের ইনজুরিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দলে সুযোগ মেলে ফজলে রাব্বির। তবে সে সুযোগের প্রতি সুবিচার করতে পারলেন না। প্রস্তুতি ম্যাচে নড়বড়ে ব্যাটিংটা ধরে রাখলেন প্রথম ম্যাচেও। প্রস্তুতিতে আউট হন ১৩ রানে আর আজকে বিদায় নিয়েছেন রানের খাতা খোলবার আগেই।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে সাকিবের পজিশনেই ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। গত ১৪ বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে কখনো ওপেনিং, কখনো মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করেছেন। ওয়ানডে সিরিজের আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ওপেনিংয়ে খেলেছিলেন। সেখানেও জ্বলে উঠতে পারেননি ভালোমতো।
তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ সমৃদ্ধ তার ক্যারিয়ার। ৮০টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা থা্কা এই ব্যাটসম্যান ৪ সেঞ্চুরি ও ১২ হাফসেঞ্চুরির সাহায্যে ২ হাজার ২০০ রান করেছেন। গত প্রিমিয়ার লিগে ২ সেঞ্চুরি ও ৩ হাফসেঞ্চুরিতে ৪৭.২০ গড়ে ৭০৮ রান করেছেন।
গত জুলাই ও আগস্টে ‘এ’ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাট হাতে দারুণ ব্যাটিং করেছিলেন। সাতটি ম্যাচ খেলে করেছেন তিনটি হাফসেঞ্চুরি।
রাব্বির ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েণ্ট ২০১৪-১৫ মৌসুমের জাতীয় লিগ। ওই আসরে ৫৩.৯৩ গড়ে ৫৯৩ রান এসেছিল তার ব্যাট থেকে। ওই মৌসুমেই ফিরে পান আত্মবিশ্বাস পান। যার কারণে হয়তো আজ তিনি জাতীয় দলে খেলছেন!
এর আগে অবশ্য নিজের পারফরম্যান্সের ওপর বিরক্ত হয়ে ২০০৮ সালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিও নিয়েছিলেন। সেখানে বেশি দিন মন টেকেনি, কয়েক মাস পরই ভালোবাসার টানে ফিরে আসেন মাঠে।
বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফজলে রাব্বি বলেছেন, ‘ক্রিকেট মাঠে ব্যর্থতার হতাশা থেকে এক সময় অন্য পেশায় যাওয়ার চিন্তা করলাম। ২০০৮ সালে একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে কয়েক মাস চাকরিও করি। কিন্তু আমার মন পড়ে ছিল ক্রিকেটে। বুঝতে পারি, খেলা ছাড়া থাকতে পারবো না। এরপর ক্রিকেটে ফিরলেও পারফরম্যান্স ভালো হচ্ছিল না। বছর চারেক আগে ঠিক করলাম, পরের মৌসুমে খেলেই বিদায় জানাবো ক্রিকেটকে। কিন্তু সেবার ভালো করায় খেলাটা চালিয়ে যাই।’