বেলজিয়াম ততক্ষণে এক গোলে পিছিয়ে। বিরতির পর দলের অন্যতম তারকা কেভিন ডি ব্রুইনে মাঠে নামলেন। আর নেমেই দলের চেহারা বদলে দিলেন। দলের সমতায় ফেরা গোলের পেছনে অবদান এই মিডফিল্ডারের। আর জয়সূচক গোলটি নিজেই করেছেন ম্যানচেস্টার সিটির এই তারকা! তাতেই ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে ডেনমার্ককে ২-১ গোলে হারিয়ে নক আউট পর্বে নাম লেখালো বেলজিয়াম।
দুই ম্যাচে বেলজিয়াম ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আছে। অন্যদিকে ডেনমার্ক দ্বিতীয় হারে নক আউট পর্বে যাওয়াটা কঠিনই করে ফেললো। কোপেনহেগেনের পার্কেন স্টেডিয়ামে এই ম্যাচটির অন্য গুরুত্বও ছিল। ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচে মাঠেই হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন ডেনিশ তারকা এরিকসেন। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ম্যাচের ১০ মিনিটে খেলা বন্ধ রেখে পুরো স্টেডিয়ামের দর্শক ও দুই দলের খেলোয়াড়রা মিলে করতালিতে মুখর ছিলেন।
তার আগেই অবশ্য ডেনমার্ক এগিয়ে যায় ২ মিনিটে (৯৯ সেকেন্ডে)। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের ভুল পাস থেকে বল পেয়ে যান হইবিয়ের। টটেনহ্যামে খেলা এই মিডফিল্ডারের পাশে ইউসুফ পলসেন বক্সে ঢুকে ডান পায়ের জোরালো শটে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করেন। ইউরোর ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় দ্রুততম গোল। এর আগে রাশিয়ার দিমিত্রি কিরিচেনকো ২০০৪ সালে গ্রিসের বিপক্ষে ৬৫ সেকেন্ডে গোল করেছিলেন।
এর কয়েক মিনিট পর মায়েলার শট গোলকিপার কোর্তোয়া ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি। প্রথমার্ধে বলতে গেলে ডেনিশরা মাঠে আধিপত্য করেছে। একের পর এক আক্রমণের ঢেউ গেছে বেলজিয়ামের সীমানায়। কিন্তু ব্যবধান আর বাড়েনি।
বিরতির ঠিক আগে বেলজিয়ানদের কারাসকোর ফ্রিকিক দূরের পোস্ট দিয়ে গেলে ম্যাচে সমতা ফেরা হয়নি। তবে ড্রেসিংরুম থেকে ফিরে এসে বেলজিয়ানদের চেহারাই পাল্টে যায়। ডি ব্রুইনে মাঠে নামেন। আর তাতেই আক্রমণভাগে গতি ফেরে। দারুণ এক জয়ের দেখা পায় দলটি।
যদিও এই অর্ধে কিছুটা পাল্টাপাল্টি আক্রমণে ম্যাচ বেশ জমে উঠে। ডেনমার্ক আক্রমণ করে গোল পাচ্ছিলো না। আর বেলজিয়াম সুযোগ পেয়েই ব্রুইনের সৌজন্যে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেছে।
৫৫ মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে গোল শোধ দেয় বেলজিয়াম। লুকাকু বক্সে ঢুকে কাটব্যাক করেন ডি ব্রুইনার দিকে। ব্রুইনার পাসে টরগেন হ্যাজার্ড প্লেসিং করে ম্যাচে ১-১ এ সমতা আনেন।
৭০ মিনিটে বেলজিয়াম পায় জয়সূচক গোল। বক্সে ঢুকে ডি ব্রুইনে বা পায়ের জোরালো শটে জাল কাঁপান। ডেনমার্ক ম্যাচে সমতায় ফেরার জন্য চেষ্টা কম করেনি। ব্রেথওয়েট একাই দুটি সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। এর মধ্যে ৮৬ মিনিটে তার নেওয়া হেডটি ক্রস বারের কোনায় লেগে সমর্থকদের হতাশ করে।
বেলজিয়ামের শেষ ষোল নিশ্চিত হলেও ডেনমার্ক রয়েছে চরম অনিশ্চয়তায়। শেষ ম্যাচ তো তাদের জিততেই হবে। এরই সঙ্গে অন্য ম্যাচের ফলের দিকেও তাকাতে হবে। এক অর্থে নক আউট পর্বে ডেনিশদের জায়গা করে নেওয়াটা বেশ কঠিন।