X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

লড়াই করে হারল বাংলাদেশ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৪:৪৪আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:১৫

লড়াই করে হারলো বাংলাদেশ
অসম্ভবকে আর সম্ভব করতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ৪৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রায় তিন সেশন লড়াই করলেও পঞ্চম দিনে গুটিয়ে গেছে ২৫০ রানে।  ভারতের মাটিতে প্রথম ও একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশের হারের ব্যবধান ২০৮ রান।  অবশ্য প্রতিরোধ দেওয়ার মতো বেশ কয়েকটা জুটি গড়েছিল সফরকারীরা। কিন্তু মনোযোগ হারানোতে সেই জুটিগুলো টিকতে পারেনি বেশিক্ষণ।  বাংলাদেশ খেলেছে ১০০.৩ ওভার। 
অবশ্য সকালের সেশনে তৃতীয় ওভারে সাকিবের বিদায়ের পর আশার আলো দেখাচ্ছিল মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জুটি। কিন্তু দলীয় ১৬২ রানে মুশফিককে বিদায় করে জুটি ভেঙে দেন অশ্বিন।
তবে সাকিবের বিদায়ের পরেই ধীর-স্থির ভাবে ইনিংস সামাল দেওয়া শুরু করেন অধিনায়ক মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। দুই জনের জুটিতেই আসে ৫৬ রান। কিন্তু মুশফিক রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে জমা পড়েন জাদেজার হাতে।
এই বিপর্যয়ের মাঝেই প্রতিরোধ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মাহমুদউল্লাহ। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফসেঞ্চুরি। এরমধ্য দিয়ে ২০১৫ সালের পর প্রথম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান। তার ব্যাটে ভর করেই প্রথম সেশনে ৩২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে সফরকারীরা সংগ্রহ করে ৯৯ রান।
রিয়াদ সর্বশেষ ২০১৫ সালের জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৬৭ রান করেছিলেন। এরপরে টেস্টে আর সেভাবে হাসেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট। বেশ কয়েকবার কাছে গেলেও দেখা পাননি কাঙ্ক্ষিত হাফসেঞ্চুরির।
এরপর মাহমুদউল্লাহ জুটি গড়েন সাব্বিরকে নিয়েও। প্রতিরোধ দেওয়ার চেষ্টায় ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে করেন ৫১ রান। কিন্তু এই জুটিকেও টিকতে দেয়নি স্বাগতিক বোলাররা। মধ্যাহ্ন ভোজনের বিরতির পর পর ফিরে যান সাব্বির রহমানও। ইশান্ত শর্মার বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন ২২ রানে। অবশ্য এরপর রিভিউ নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তাতেও বাঁচতে পারেননি সাব্বির।
প্রথম সেশনের পরই ধীরে ধীরে চিত্র পাল্টাতে থাকে। সাব্বিরের পর মেহেদি হাসান মিরাজ নামলেও নিজের ধীর স্থির খেলার কৌশলটা আর ধরে রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দীর্ঘ দিন পর টেস্ট হাফসেঞ্চুরি পাওয়া রিয়াদকে লং লেগে তালুবন্দী করান ইশান্ত শর্মা। শর্মার বল ঠিকভাবে পুল করতে না পারায় ভুবনেশ্বর কুমারের হাতে তালুবন্দী হন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে বিদায় নেন ৬৪ রানে। ৭টি চারের মারের সঙ্গে ১৪৯টি বল মোকাবেলা করেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। এরপর আর বেশিক্ষণ প্রতিরোধ আসেনি আগের মতো। একে একে বিদায় নেন মিরাজ (২৩), তাইজুল (৬) ও তাসকিন (১)।
শেষ দিকে তাসকিনের উইকেটটি নিয়ে দুইবার রিভিউ চাওয়া হয়েছিল। যেখানে শেষ রিভিউতেই এলবিডব্লু হয়ে সাজঘরে ফেরেন তাসকিন আহমেদ। যদিও ৭০ বল খেলে ফের নিজের ব্যাটসম্যান রুপকে জানান দিয়েছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। অপরাজিত ছিলেন ৩ রানে!

ভারতের পক্ষে এই ইনিংসে ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবিন্দ্র জাদেজা। দুটি নিয়েছেন পেসার ইশান্ত শর্মা।   

এর আগে শেষ দিনের তৃতীয় ওভারে ফিরে যান সাকিব। ফুটমার্কে পড়া জাদেজার ডেলিভারির টার্ন ও বাউন্সে সামলে খেলতে পারেননি। বল ব্যাটের একেবারে ওপরে লেগে জমা পড়ে শর্ট লেগে থাকা পূজারার হাতে। ৫০ বল খেলে সাকিব বিদায় নেন ২২ রানে।
হায়দরাবাদে এর আগে ৩ উইকেটে ১০৩ রানে চতুর্থ দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ।
পঞ্চম ও শেষ দিনে ৪৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে হলে বাংলাদেশকে ইতিহাসের পাতা ওলট পালট করতে হবে। কারণ রেকর্ড বুকে ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে এত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই।
বাংলাদেশ অবশ্য ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করে একটি ম্যাচ বাঁচিয়ে ছিল। ওইবার প্রায় দেড়দিন উইকেটে পড়ে থেকে ম্যাচটি ড্র করে বাংলদেশ। চতুর্থ দিন শেষে বিনা উইকেটে ৯৮ রান তোলে স্বাগতিকরা। এরপর পঞ্চম দিনের পুরোটা সময় উইকেটে আঁকড়ে থেকে ১৪২ ওভার ব্যাটিং করে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান সংগ্রহ করলে ম্যাচটি ড্র হয়। সেই ম্যাচটিতে বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাভেদ ওমর বেলিম ও নাফিস ইকবাল ৮৬ ওভার ব্যাটিং করে ১৩৩ রানের জুটি গড়েছিলেন। একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি বাঁচাতে হলে বর্তমানে দলের দুই থেকে তিনজন ব্যাটসম্যানকে ২০০৫ সাল ফিরিয়ে আনতে হবে।
ভারতের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ওভার ক্রিজে থেকে রেকর্ডবুকে টিকে আছে দক্ষিণ আফ্রিকার দিল্লি টেস্টটি। ওই ম্যাচে ১৪৩.১ ওভারের বিপরীতে টিকে থেকে প্রোটিয়ারা করেছিল মাত্র ১৪৩ রান। কিন্তু শেষ বিকালে হারতে হয়েছিল প্রোটিয়াদের।
চতুর্থ ইনিংসে একশোর উপরে ওভার খেলা ম্যাচ আছে আরও ৬টি। যার একটিতে জেতেনি কেউই। তিনিট ম্যাচে নিউজিল্যান্ড তিনবার ড্র করতে সমর্থ হয়েছে। বাকি একটি ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ড্র করলেও ইংল্যান্ড দুই ম্যাচের মধ্যে একটি ড্র ও একটি ম্যাচে হেরেছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত প্রথম ইনিংস: ৬৮৭/৬ ডি. (বিরাট কোহলি ২০৪, সাহা ১০৬*, বিজয়১০৮; তাইজুল ৩/১৫৬) ও দ্বিতীয় ইনিংস: ১৫৯/৪ ডি.

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩৮৮ (মুশফিক ১২৭)ও দ্বিতীয় ইনিংস: ২৫০ (মাহমুদউল্লাহ ৬৪)

ফল: ভারত ২০৮ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা: বিরাট কোহলি।


/এফআইআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
উচ্চশিক্ষা খাতকে ডিজিটালাইজেশনে আনার পরামর্শ ইউজিসির
উচ্চশিক্ষা খাতকে ডিজিটালাইজেশনে আনার পরামর্শ ইউজিসির
বিটুমিন গলে যাওয়া মহাসড়ক পরিদর্শনে দুদক
বিটুমিন গলে যাওয়া মহাসড়ক পরিদর্শনে দুদক
মিয়ানমারের ৩৮ শরণার্থীকে ফেরত পাঠালো ভারত
মিয়ানমারের ৩৮ শরণার্থীকে ফেরত পাঠালো ভারত
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস