X
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
৩১ বৈশাখ ১৪৩১

পারফরম্যান্সের কারণেই জুনিয়র টাইগার নিয়ে আশাবাদী মিজানুর

রবিউল ইসলাম
২২ জানুয়ারি ২০১৬, ২০:৫৮আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০১৬, ২১:১১

আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে শুরু হচ্ছে ১১তম আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আসর। এরই মধ্যে সবগুলো দলই বাংলাদেশে এসে পড়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শেষে বসে নেই বাংলাদেশও। উদ্বোধনী ম্যাচ যে ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে সেই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রধান কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের নেতৃত্বে অনুশীলন করে চলছে জুনিয়র টাইগাররা।  যুব দলের প্রধান কোচ মিজানুর রহমান বাবুল এবং পরামর্শক স্টুয়ার্ট ল

ঘরের মাঠে মেগা আসর। এ আসরে শিরোপা জিতে চমক দেখানোই এখন বাংলাদেশের যুবাদের মূল লক্ষ্য। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাফল্যের পর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের প্রত্যাশা বেড়ে গেছে। মেহেদি হাসান মিরাজরাও লক্ষ্য পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক সিরিজে বাংলাদেশের যুবারা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দেয় ৩-০ ব্যবধানে। এই সিরিজের মাধ্যমে দলের প্রধান কোচ মিজানুর রহমান বাবুল দলের শেষ মুহূর্তের ভুলত্রুটিগুলোও সেরে ফেলার চেষ্টা করেছেন। প্রস্তুতি নিয়ে ভীষণ খুশি তিনি।

আগের রেকর্ড অনুযায়ী যুবাদের বিশ্বকাপের মূল পর্বে বাংলাদেশের সাফল্য নেই বললেই চলে। এবার সুপার লিগে খেলতে প্রত্যয়ী যুব দলের কোচ মিজানুর রহমান। তবে একটি একটি ম্যাচ ধরে শিষ্যদের পরিকল্পনার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। গ্রুপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরই তিনি পরবর্তী পরিকল্পনায় এগোবেন বলে জানান।



আসন্ন আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ১৫ যোদ্ধাকে নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত করেছে বাংলা ট্রিবিউন। আজ শুক্রবার থাকছে যুব দলের প্রধান কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের একান্ত সাক্ষাৎকার--

বাংলা ট্রিবিউন: বিশ্বকাপ খুব সন্নিকটে। দলের প্রস্তুতি কেমন?

মিজানুর রহমান বাবুল: আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শুরু হওয়ার আগে কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ব্যাটসম্যানরা তাদের স্বাভাবিক ফর্মে ছিলো না। কিন্তু এই সিরিজে তারা পুরোপুরি ফর্মে ফিরে এসেছে। এটা পুরো দলের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সবাই খুব আত্মবিশ্বাসী। আমি ছেলেদের পারফরম্যান্সে অনেক সন্তুষ্ট। আমার বিশ্বাস ছেলেরা মূল মঞ্চে এটা ধরে রাখতে পারবে। অধিনায়ক মিরাজকে পরামর্শ দিচ্ছেন প্রধান কোচ মিজানুর রহমান

বাংলা ট্রিবিউন: কিছু ভালো খেলোয়াড় ঠিক ছন্দে নেই, এ নিয়ে চিন্তিত কিনা?

মিজানুর রহমান বাবুল: দলের সবাই রান করেছে। এটা নিয়ে আমি চিন্তিত না। হয়তো জয়রাজ শেখ শুরুটা ভালো করে ইনিংস বড় করতে পারেনি। সবার পারফরম্যান্স ঠিকই আছে। আমার বিশ্বাস ছেলেরা জানে তাদের কী করতে হবে। সেভাবেই তাদের পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শেষে সেরা কম্বিনেশন খুঁজে পেয়েছেন?

মিজানুর রহমান বাবুল: আমি যেভাবে চাচ্ছিলাম সেভাবেই হয়েছে। আমার ধারণা ছেলেরা এখন বোঝে এখানে তাদের কী করতে হবে। আমাদের কিছু জায়গায় সমস্যা ছিলো। সেগুলো সমাধান হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে আমি অনেক সন্তুষ্ট।

বাংলা ট্রিবিউন: দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ দুই সিরিজে দুটিতেই জিতেছেন। বিশ্বকাপে ওদের বিপক্ষে আমাদের প্রথম খেলা; কী ভাবছেন?

মিজানুর রহমান বাবুল: দক্ষিণ আফ্রিকা আমাদের গ্রুপে আছে। ওদের সঙ্গে খেলার আগে মানসিকভাবে আমাদের ছেলেরা অনেক এগিয়ে থাকবে। যেহেতু আমাদের কন্ডিশনে খেলা, দর্শক সাপোর্ট আমাদের পক্ষে থাকবে। আশা করছি শুরুটা ভালো করেই করতে পারব।

বাংলা ট্রিবিউন : সুপার লিগে দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। দলগুলো নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

মিজানুর রহমান বাবুল : আমি অতো দূর চিন্তা করতে রাজি না। এখান আমার চিন্তা প্রথম রাউন্ডে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এরপর সুপার লিগে কার সঙ্গে খেলবো সেগুলো নিয়ে চিন্তা করবো। সবকিছু এক সঙ্গে চিন্তা করলে পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়তে পারে। ছেলেদেরকে বলেছি একটি একটি ম্যাচ করে এগোতে। মিজানুর রহমান বাবুর সঙ্গে কোচিং স্টাফরা

বাংলা ট্রিবিউন: শাওনের ইনজুরি তার পারফর‌ম্যান্সে কোনও প্রভাব ফেলতে পারে?

মিজানুর রহমান বাবুল: শাওন এখন সম্পূর্ণ ফিট। ওকে নিয়ে চিন্তার কোনও করণ নেই। ও যে কোনও সময় খেলার জন্য ফিট আছে। আশা করি সবাই সবার সেরাটা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। আমাদের একই জায়গায় খেলার মতো অনেক খেলোয়াড় আছে।

বাংলা ট্রিবিউন: সবসময় ভালোভাবেই টুর্নামেন্ট শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সফলতা আসে না। এ ব্যাপারটা নিয়ে আপনি কিভাবে চিন্তা করেন?

মিজানুর রহমান বাবুল: আমি ২০১০ থেকেই অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সঙ্গে আছি। ২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়াতে আমার প্লেট পর্বে খেলেছি। প্রস্তুতি ম্যাচে আমরা ভালো খেলি কিন্তু নির্দিষ্ট একটি ম্যাচে গিয়ে আমরা হেরে যাই। এবার এই দিকে আমাদের নজর রয়েছে। এটা আসলে অভিজ্ঞতার কারণেই হয়। এবার আমাদের দলে ৫ জন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছে। আমার বিশ্বাস এবার আর ভুল হবে না।

হোটেলের লবীতে ক্যামেরাবন্দী যুব দলের প্রধান কোচ মিজানুর রহমান বাবুল বাংলা ট্রিবিউন: অস্ট্রেলিয়াতে খেলেছে এমন পাঁচজন ক্রিকেটার এবার এ দলে আছে। তাদের অভিজ্ঞতা কতটুকু কাজে লাগবে বলে মনে করেন? 

মিজানুর রহমান বাবুল: এ বছর আমরা আশা করতে পারি কাপ পর্বে আমরা খেলবো। যেহেতু আমাদের নিজের মাঠে খেলা। আমাদের পাঁচজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে। শুধু যে বিশ্বকাপ খেলেছে তা নয় এই বয়সে জাতীয় লিগও খেলেছে। সব মিলিয়ে আমি মনে করি কাপ পর্বে খেলার মতো আমার দল পুরোপুরি প্রস্তুত। 
 বাংলা ট্রিবিউন: এবারের বিশ্বকাপের প্রত্যাশা আগের চেয়ে অনেক বেশি। এ বিষয়টা কি চাপ তৈরি করবে? 

মিজানুর রহমান বাবুল: আমরা যদি বিগত দিনের পারফরম্যান্স দেখি তাহলে আমাদের প্রস্তুতি বেশ ভালো। আমরা ঘরের মাঠে এবং ঘরের বাইরেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও আমরা ভালো পারফরম্যান্স করেছি ও সিরিজ জিতেছি। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে আমরা দুর্দান্ত খেলেছি। আসলে পারফরম্যান্সের কারণেই এরকমটা ভাবা হচ্ছে। তবে আমি মনে করি এটা চাপ তৈরি করবে না। কেননা ছেলেরা যার যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আত্মবিশ্বাসী। 

বাংলা ট্রিবিউন: তাহলেও এবার কি যুব বিশ্বকাপের আক্ষেপটা ঘুচাতে পারবেন? 

মিজানুর রহমান বাবুল: আগেই বলেছি, এতো দূরের কিছু ভাবছি না। আমাদে পরিকল্পনা একটি একটি করে ম্যাচ নিয়ে। নিজেদের পরিকল্পনাগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন করতে পারলে অবশ্যই শিরোপা জেতা সম্ভব। সবাই কঠোর পরিশ্রম করছে। এখন শুধু মাঠের খেলা বাকি। 

বাংলা ট্রিবিউন : আপনার দলের শক্তিশালী দিক কোনটি? 

মিজানুর রহমান বাবুল: আমাদের স্পিন আক্রমণই সেরা। এর সঙ্গে ফিল্ডিংটাও ভালো হয়েছে। আমি মনে করি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে ব্যাটিংটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। সেটাও কেটে গেছে। 

বাংলা ট্রিবিউন: অধিনায়ক মিরাজকে নিয়ে কতটুকু প্রত্যাশা করেন? 

মিজানুর রহমান বাবুল : মিরাজ এই বয়সে খুব ভালো অধিনায়ক। খেলাটা সে খুব ভালো বোঝে। কখন কী সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এই ব্যাপারে তার ভালো ধারণা রয়েছে। আসলে ছোটবেলা থেকেই অধিনায়কত্ব করেছে মিরাজ। অনূর্ধ্ব-১৫ দল থেকে শুরু করে অনেকদিন ধরেই অধিনায়কত্ব করে আসছে। ২০১৪ বিশ্বকাপেও অধিনায়কত্ব করেছে। এখন আরও পরিপক্ক হয়েছে। এখন আর বাইরে থেকে কিছু বলতে হয় না। এছাড়া মিরাজ নতুন বলে বোলিং করতে পারে। বিপদের সময় ত্রাতার ভূমিকা পালন করতে পারে। এসব কারণে তার অধিনায়কত্বটা আরও বের হয়ে আসে। এছাড়া সে টিমমেট হিসেবেও চমৎকার। টিম যখন বিপদে থাকে, তখন সবাইকে নিয়ে আক্রমণে যাওয়ার ভালো ক্ষমতা রয়েছে তার। সবচেয়ে বড় কথা মিরাজ দূরদর্শী।

 

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন 

/এমআর/

সম্পর্কিত
বাংলা ট্রিবিউনকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনপ্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ছে, পিছিয়ে থাকতে চায় না বাংলাদেশ
‘স্মার্ট অর্থনীতি প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা রাখবে ব্যাংকগুলো’
আলাপচারিতায় ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম ও মানস ঘোষমুজিবনগরে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও সংবাদ সংগ্রহ
সর্বশেষ খবর
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথমবার সাক্ষ্য দিলেন তার সাবেক আইনজীবী কোহেন
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথমবার সাক্ষ্য দিলেন তার সাবেক আইনজীবী কোহেন
কাজী নজরুলের বায়োপিক, কে থাকছেন কবির ভূমিকায়
কাজী নজরুলের বায়োপিক, কে থাকছেন কবির ভূমিকায়
আগামী বছর পাকিস্তানে ঐতিহাসিক সফরে যাবে আয়ারল্যান্ড
আগামী বছর পাকিস্তানে ঐতিহাসিক সফরে যাবে আয়ারল্যান্ড
বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকে নারীদের তাড়া করে গুলি ছুড়লো বিএসএফ
বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকে নারীদের তাড়া করে গুলি ছুড়লো বিএসএফ
সর্বাধিক পঠিত
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল
শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল
শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
শেখ হাসিনার তিন গুরুত্বপূর্ণ সফর: প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ইয়াহিয়া সিনওয়ার: যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটিয়েছেন, শেষও কি তার হাতে?
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনইয়াহিয়া সিনওয়ার: যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটিয়েছেন, শেষও কি তার হাতে?
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
রেল মন্ত্রণালয়ের গাড়ি নিয়ে চুরি করতে গিয়ে গ্রেফতার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ড্রাইভার
রেল মন্ত্রণালয়ের গাড়ি নিয়ে চুরি করতে গিয়ে গ্রেফতার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ড্রাইভার