প্রথম টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ফল: বাংলাদেশ ১৫০ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: তাইজুল ইসলাম
নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ৭১.১ ওভারে ১৮১, লক্ষ্য ৩৩২ ( প্যাটেল ০*; সোধি ২২, সাউদি ৩৪, মিচেল ৫৮, জেমিসন ৯, ব্লান্ডেল ৬, কনওয়ে ২২, নিকলস ২, উইলিয়ামসন ১১, ল্যাথাম ০)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১০০.৪ ওভারে ৩৩৮ (মিরাজ ৫০*, শরিফুল ১০, নাঈম ৪, তাইজুল ০, সোহান ১০, মুশফিকুর ৬৭, দীপু ১৮, শান্ত ১০৫; জাকির ১৭, জয় ৮, মুমিনুল ৪০), লিড ৩৩১ রানের।
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ১০১.৫ ওভারে ৩১৭ (এজাজ প্যাটেল ১*; ল্যাথাম ২১, কনওয়ে ১২, হেনরি নিকোলস ১৯, ড্যারিল মিচেল ৪১, টম ব্লান্ডেল ৬, গ্লেন ফিলিপস ৪২, কেন উইলিয়ামসন ১০৪, ইশ সোধি ০, কাইল জেমিসন ২৩, টিম সাউদি ৩৫)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৮৫.১ ওভারে ৩১০ (জয় ৮৬, শান্ত ৩৭, মুমিনুল ৩৭, সোহান ২৯)
২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে টেস্টের স্মরণীয় জয়টি পেয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথমবার কিউইদের তাদের মাটিতে হারানোর কীর্তি গড়েছিল। এবার ঘরের মাঠে প্রথমবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। সিলেটে প্রথম টেস্টে সফরকারীদের হারিয়েছে ১৫০ রানের ব্যবধানে।
অসাধারণ এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান তাইজুল ইসলামের। তার ঘূর্ণিতে চতুর্থ দিন সফরকারীরা ৩৩২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১১৩ রানে হারায় ৭ উইকেট। যার চারটি নেন তাইজুল। পঞ্চম দিন জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল তিন উইকেটের। সেখানে মিচেল বেশকিছুক্ষণ প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে ফিফটির দেখা পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারেননি। নাঈম হাসান তাকে ৫৮ রানে থামালে বাংলাদেশ জয়ের কাছাকাছি চলে আসে। কিন্তু নবম উইকেটে সাউদি বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে কমাতে থাকেন রানের ব্যবধান। শেষ পর্যন্ত তাকে ৩৪ রানে থামিয়ে জয়টা তরান্বিত করেছেন তাইজুল। এই বামহাতি তার পর সোধিকে ফিরিয়ে লেজ ছেঁটে দিলে ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় স্বাগতিক দল।
জয়ের অন্যতম কারিগর তাইজুল দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৫ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন। সব মিলে নিয়েছেন ১০টি। টেস্টে ১২তম বারের মতো ৫ উইকেট শিকার করেছেন তাইজুল। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবারই প্রথম।
নাঈম হাসান দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০ রানে নিয়েছেন দুটি। একটি করে নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
সাউদিকে ফিরিয়ে পঞ্চম উইকেট তুলে নিলেন তাইজুল
মিচেল-সোধি মিলে যা করছিলেন তার চেয়েও বেশি আক্রমণাত্মক ছিল সাউদি-সোধি জুটি। পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়ে আনছিলেন তারা। বিশেষ করে কিউই অধিনায়ক সাউদি ছিলেন বেশি আগ্রাসী। তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে জয়ের আরও কাছে নিয়ে গেছেন বামহাতি তাইজুল। এই উইকেট নিয়েই পঞ্চম উইকেট শিকার করেছেন তিনি। সাউদি ফিরেছেন ৩৪ রানে। নবম উইকেটে এই জুটিতে যোগ হয়েছে ৪৬।
রিভিউ নিয়ে রক্ষা পেলেন সোধি
পথের কাঁটা মিচেলকে ফিরিয়ে জয়ের পথটা সহজ করেছে বাংলাদেশ। এখন প্রয়োজন আর দুই উইকেট। কিন্তু সাউদি-সোধি মিলে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় রয়েছেন। এই অবস্থায় ৬৩তম ওভারে নাঈমের বলে আউট হয়েছিলেন সোধি। ব্যাট-প্যাড হয়েছিলেন ভেবে অন ফিল্ড আম্পায়ার তাকে আউট দিয়েছিলেন। রিভিউ নিলে পরে জীবন পেয়েছেন কিউই ব্যাটার। রিপ্লেতে দেখা গেছে বল ব্যাটের কোথাও স্পর্শ করেনি। এমনকি এলবিডাব্লিউ হননি তিনি।
কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো মিচেলকে ফেরালেন নাঈম
বাংলাদেশ জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকলেও গতকাল থেকে সেই জয়ের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ড্যারিল মিচেল। প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশকে হতাশ করছিলেন। অষ্টম উইকেটে সোধিকে নিয়ে গড়েছেন ৩০ রানের জুটি। পঞ্চম সকালে ফিফটিও তুলে নেন। বাংলাদেশের জয় উৎসবকে বিলম্বিত করতে থাকা এই ব্যাটারকে অবশেষে ফিরিয়েছেন অফস্পিনার নাঈম হাসান। সুইপ করতে গিয়ে তাইজুলের ক্যাচে পরিণত হয়েছেন মিচেল। তিনি আউট হয়েছেন ৫৮ রানে।
শেষ ৩ উইকেটের খোঁজে বাংলাদেশ, মিচেলের ফিফটি
সিলেটে প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য দিয়ে চতুর্থ দিন বিকালেই জয়ের সুবাস পেতে থাকে বাংলাদেশ। তাইজুল, মিরাজ, নাঈমদের ঘূর্ণিতে সফরকারী ব্যাটারদের নাভিশ্বাস উঠেছে। গতকালকেই বাংলাদেশ ৭ উইকেট তুলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ডের। শেষ দিন জিততে তাদের আর ৩ উইকেট দরকার। ড্যারিল মিচেল আর ইশ সোধি এখনও অপরাজিত আছেন। গতকাল ৪৪ রানে অপরাজিত থাকা মিচেল শেষ দিন সকালে নবম টেস্ট ফিফটি তুলে নিয়েছেন।