তৃতীয় দিনের খেলা শেষে, সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ- দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ ওভারে ৩৮/২ (জাকির ১৬*, মুমিনুল ১*, শান্ত ১৫, জয় ২); বাংলাদেশ ৩০ রানে এগিয়ে।
নিউজিল্যান্ড- প্রথম ইনিংসে ৩৭.১ ওভারে ১৮০/১০ (এজাজ ০*, সাউদি ১৪, ফিলিপস ৮৭, জেমিসন ২০, স্যান্টনার ১, মিচেল ১৮, ব্লান্ডেল ০, উইলিয়ামসন ১৩, নিকোলস ১, ল্যাথাম ৪, কনওয়ে ১১);
বাংলাদেশ- প্রথম ইনিংসে ৬৬.২ ওভারে ১৭২/১০ (নাঈম ১৩*, শরিফুল ১০, তাইজুল ৬, মিরাজ ২০, সোহান ৭, দীপু ৩১, মুশফিক ৩৫, শান্ত ৯, মুমিনুল ৫, জয় ১৪, জাকির ৮)
প্রকৃতির ছিনিমিনি খেলার দিনে হতাশ করেনি বাংলাদেশ। গ্লেন ফিলিপসের আগ্রাসী ব্যাটিং বাদ দিলে দিনটা স্বাগতিকদের। নিউজিল্যান্ড ব্যাটার হাফ সেঞ্চুরি করে তাদের হতাশ করেছেন। তবে দিন শেষে বাংলাদেশই এগিয়ে। ৩০ রানের লিড নিয়েছে তারা ৮ উইকেট হাতে রেখে। ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারতো। কিন্তু আলোকস্বল্পতার কারণে বিকাল পৌনে তিনটার দিকে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। দেড় ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করেও পরিস্থিতির পরিবর্তন দেখতে না পেয়ে স্টাম্পড ঘোষণা করেন আম্পায়ার পল রেইফেল ও রড টাকার। তার ঠিক আগেই নাজমুল হোসেন শান্ত বিদায় নেন।
৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে প্রথম ওভারে আউট হন মাহমুদুল হাাসন জয়। দলীয় ৩ রানে ভেঙে যাায় উদ্বোধনী জুটি। জাকির ১৬ ও মুমিনুল হক ১ রানে অপরাজিত আছেন। দলের রান ৮ ওভারে ২ উইকেটে ৩৮ রান।
লাঞ্চের পর তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হয়। ফিলিপসের হাফ সেঞ্চুরিতে নিউজিল্যান্ড করে ১৮০ রান। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছিল ১৭২ রান।
দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ শান্ত
সিলেটে মুগ্ধ করার মতো সেঞ্চুরি করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশের অধিনায়কের কাছ থেকে ঢাকায় ভালো কিছুর প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু দুই ইনিংসেই ব্যর্থ তিনি। প্রথম ইনিংসে ৯ রানে থামেন। দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন ১৫ রান। অষ্টম ওভারে টিম সাউদির বলে মিড অফে কেন উইলিয়ামসের সহজ ক্যাচ হন শান্ত। ২৪ বলের ইনিংসে ছিল ২ চার। জাকির হাসানের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটি ভেঙে যায়। ৩৮ রানে নেই বাংলাদেশের ২ উইকেট। ৮ ওভারের খেলা শেষ হতেই আলোকস্বল্পতার জন্য ম্যাচ থামিয়ে দেন আম্পায়াররা।
৩ রানে ভেঙেছে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসানের উদ্বোধনী জুটি টিকে ছিল মাত্র ৩ বল। মাত্র ২ রান করে এজাজ প্যাটেলের বলে ড্যারিল মিচেলের ক্যাচ হয়েছেন জয়। ৩ রানে প্রথম উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
৮ রানের লিড নিয়ে অলআউট নিউজিল্যান্ড
চার সেশন পর মাঠে নেমে দ্রুত বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের বাকি ৫ উইকেট তুলে নেয়। তৃতীয় দিন এজন্য এক সেশনও পুরোটা খেলতে হয়নি। তবে গ্লেন ফিলিপসের মারকুটে ব্যাটিংয়ে লিড নেয় নিউজিল্যান্ড। ৭২ বলে ৯ চার ও ৪ ছয়ে ৮৭ রান করে আউট হন তিনি। তার সঙ্গে এদিন অষ্টম উইকেটে কাইল জেমিসন ৫৫ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের ঘুম কেড়ে নেন।
৫ উইকেটে ৫৫ রানে খেলা শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ সুবিধা করতে পারছিলেন না। বোলিংয়ে বদল এনে সুফল পায় বাংলাদেশ। নাঈম হাসান টানা দুই ওভারে দুটি উইকেট তুলে নেয়। ৯৭ রানে নেই ৭ উইকেট। তারপরই জেমিসন ও ফিলিপস জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ড। ফিফটি করেন ফিলিপস। তবে সেঞ্চুরি হয়নি তার। নাজমুল হোসেন শান্ত পেস বোলিংয়ে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। হতাশ করেননি শরিফুল ইসলাম, দুজনকেই ফেরান তিনি। আর শেষ উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। ৩৮তম ওভারে ১৮০ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে তারা লিড নেয় ৮ রানের। কিউইরা অলআউট হতেই চা বিরতির ঘোষণা আসে।
সিলেট টেস্টেও প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ৭ রানের লিড নিয়েছিল এবং হেরে যায়। এবার ফল কোনদিকে যায়, সেটাই দেখার। তাইজুল ও মিরাজ সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন।
শরিফুলের শিকার ফিলিপস
বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন গ্লেন ফিলিপস। মারকুটে ব্যাটিংয়ে নিউজিল্যান্ডকে লিড এনে দেন এই ব্যাটার। অবশেষে তাকে ফিরিয়ে স্বস্তি এনে দিলেন শরিফুল ইসলাম। ৭২ বলে ৯ চার ও ৪ ছয়ে ৮৭ রান করে নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ হন ফিলিপস। দলীয় ১৮০ রানে ৯ উইকেট হারালো নিউজিল্যান্ড। পরের ওভারে তাইজুল ইসলাম টিম সাউদিকে ফিরিয়ে তাদের অলআউট করেন। ১৪ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যাচ হন নিউজিল্যান্ড ব্যাটার।
ফিলিপসের ব্যাটে বাংলাদেশকে পেছনে ফেললো নিউজিল্যান্ড
৪৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল নিউজিল্যান্ড। একশ করা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছিল তারা। তবে বৃষ্টিতে চার সেশন পর মাঠে নেমে নতুন রূপে সফরকারীরা। নাঈম হাসানের জোড়া আঘাত বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দিলেও সাত নম্বর ব্যাটার গ্লেন ফিলিপস ম্যাচ বদলে দেন।
এই ব্যাটারের ৩৮ বলের হাফ সেঞ্চুরি নিউজিল্যান্ডকে ছন্দে ফেরায়। কাইল জেমিসনকে নিয়ে ৫৫ রানের জুটিতে লিড নেওয়ার পথ তৈরি করে তারা। শেষ পর্যন্ত টিম সাউদিকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বাংলাদেশকে পেছনে ফেললেন ফিলিপস। বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট করেছিল নিউজিল্যান্ড।
শক্ত জুটি ভেঙে দিলেন শরিফুল
হঠাৎ করে স্পিনারদের ওপর চড়াও হন গ্লেন ফিলিপস। সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তার সঙ্গে কাইল জেমিসনও দাঁত কামড়ে ক্রিজে পড়ে ছিলেন। অষ্টম উইকেটে তাদের জুটি পঞ্চাশ রানের বেশি তুলে ফেলে। ব্যবধান কমিয়ে লিড নেওয়ার আভাস দেয়। অবশেষে শরিফুল ইসলাম বল হাতে ফিরে ভেঙে দিলেন ৫৫ রানের জুটি। জেমিসনকে শাহাদাত হোসেন দীপুর ক্যাচ বানান তিনি। দলীয় ১৫২ রানে নিউজিল্যান্ডের ৮ উইকেট পড়লো। ২৮ বলে ৩ চারে ২০ রান করেন জেমিসন।
ফিলিপসের হাফ সেঞ্চুরি
কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ঢাকা টেস্টে প্রথম ব্যাটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করলেন নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস। ৩৮ বলে পঞ্চাশ ছোঁন তিনি। ততক্ষণে তার ৭ সতীর্থ প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন। ২৬তম ওভারে টানা ছয় ও চার মেরে ফিফটিতে পৌঁছান তিনি। এজন্য হাঁকান ৫ চার ও ৩ ছয়।
নাঈমের জোড়া আঘাত
ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপসের জুটি ভেঙে দেওয়া নাঈম হাসান তার পরের ওভারে আরেকটি উইকেট পেলেন। মিচেল স্যান্টনার ফার্স্ট স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ হন। ১ রানে আউট হন নিউজিল্যান্ড ব্যাটার। ৯৭ রানে তাদের ৭ উইকেট নেই।
মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে মিচেল আউট
২২তম ওভারে বল হাতে নিয়েই বাংলাদেশকে তৃতীয় দিনের প্রথম উইকেট এনে দিলেন নাঈম হাসান। তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ দুই প্রান্ত থেকে হাত ঘুরিয়ে সুবিধা করতে পারছিলেন না। অবশেষে দারুণ ফিল্ডিংয়ে ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপসের জুটি ভাঙলেন মিরাজ। মিচেলের উড়িয়ে দেওয়া বল লং অন থেকে দৌড়ে এসে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নেন তিনি। ১৮ রান করে মাঠ ছাড়েন নিউজিল্যান্ড ব্যাটার। ভেঙে গেলো ৪৯ রানের জুটি। ৯৫ রানে নেই নিউজিল্যান্ডের ৬ উইকেট।
রিভিউ হারালো বাংলাদেশ
প্রথম দিন যেভাবে শেষ হয়েছিল, চার সেশন পর মাঠে নেমে সেভাবে শুরুটা হলো না। বরঞ্চ ২০তম ওভারে রিভিউ হারালো তারা। ড্যারিল মিচেলের বিরুদ্ধে শর্ট লেগে ক্যাচের আবেদন করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আম্পায়ার সাড়া না দিলে রিভিউ নেয় স্বাগতিকরা। বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে বল নিউজিল্যান্ড ব্যাটারের গ্লাভসে লেগেছে বলে ধারণা করলেও রিভিউয়ে হতাশ হতে হয়েছে।
চার সেশন পর শুরু মাঠের লড়াই
দ্বিতীয় দিন পুরোপুরি বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। শুক্রবার তৃতীয় দিনের খেলাতেও বৃষ্টির প্রভাব ছিল। প্রথম সেশনে কোনও বল গড়ায়নি। অবশেষে চার সেশন পর মাঠে গড়ালো খেলা। ৫ উইকেটে ৫৫ রানে খেলা শুরু করেছে নিউজিল্যান্ড। ১৩তম ওভারের শেষ দুটি বল করেন তাইজুল ইসলাম।
ম্যাচ শুরুর সময় নির্ধারণ
বৃষ্টিতে ভেসে গেছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন। মিরপুর স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনেও বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ শুরু করা যায়নি। শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টায় ম্যাচ শুরুর কথা থাকলেও ভেজা আউটফিল্ডের কারণে তা পেছানো হয়। সবশেষ মাঠ পরিদর্শনের পর বেলা ১২টায় খেলা শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীতে গতকাল দিনভর বৃষ্টি ঝরেছে। আজ সকালে ম্যাচ শুরুর আগেও ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এই মুহূর্তে অবশ্য বৃষ্টি নেই। মাঠ থেকে কাভারও সরানো হয়েছে। সবশেষ ১১টায় দুই আম্পায়ার রড টাকার ও পল রেইফেল মাঠ পরিদর্শন করেন। নিউজিল্যান্ড খেলোয়াড়দেরও ওয়ার্মআপ করতে দেখা গেছে। দুই আম্পায়ার ভেজা স্থান চিহ্নিত করতে শুকাতে নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তী পরিদর্শন সাড়ে ১১টায় করা হয়েছে। আর লাঞ্চ এগিয়ে ১১টা ২০ এ নির্ধারণ করেছেন আম্পায়াররা। মানে এই টেস্টে চার সেশন বৃষ্টিতে ভেস্তে গেছে।
দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনেই অবশ্য ম্যাচটা জমিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। টস জিতে প্রথম ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট হয়েছে যদিও। তার পর ৫৫ রানেই নিউজিল্যান্ডের ৫ উইকেট তুলে নিতে পেরেছে। তাতে অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় সফরকারী দল। তারা এখনও বাংলাদেশের চেয়ে ১১৭ রানে পিছিয়ে। তাতে অল্প পুঁজি নিয়েও লিড পাওয়ার আশায় স্বাগতিকরা।