শেষ তিন ওভারে খুলনা টাইগার্সের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২২ রানের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই রান মামুলিই হওয়ার কথা। কিন্তু শেষ তিন ওভারে খুলনার ব্যাটাররা যা করলেন সেটি অবিশ্বাস্য! মেহেদী হাসান মিরাজের দল তিন ওভারে ১৩ রান তুলতে হারায় ৬ উইকেট! আর তাতেই অবিশ্বাস্যভাবে জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করে তারা। তাও আবার রংপুরের রাইডার্সের মতো দলের বিপক্ষে। চলতি বিপিএলে কোনও দলই হারাতে পারছে না রংপুরকে। আগের ম্যাচে ফরচুন বরিশাল সুযোগ পেয়েও জয় হাতছাড়া করেছে, আজ খুলনাও হাতছাড়া করলো জয়। শেষ তিন ওভারে রংপুরের বোলারদের দৃঢ়তায় রংপুর ৮ রানের জয় নিশ্চিত করে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে রংপুর ১৮৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায়। জবাবে খেলতে নেমে জয়ের পথেই ছিল দলটি। ১১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে দলটি তুলে ফেলেছিল ১৩৭ রান। চতুর্থ উইকেটে আফিফ হোসেন ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন মিলে ১৪ বলে গড়েছিল ২৮ রানের জুটি। আফিফ আউট হতেই জুটি ভাঙ্গে। এরপরই মূলত শুরু হয় খুলনার ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল।
১৮ ওভারের প্রথম বলে আফিফ আউট হওয়ার পর ওই ওভারে চার রান নিতে পারে খুলনা। শেষ দুই ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮ রানের। দুই উইকেট হারিয়ে খুলনা তুলে নেয় ৬ রান। ফলে শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১২ রানের। সাইফউদ্দিনের এই ওভারে খুলনার ব্যাটাররা চাপটা নিতেই পারলেন না। দুই রানআউটে শেষ ওভারে তারা হারায় তিনটি উইকেট, রান নিতে পারে ৩। আর তাতেই খুলনার ইনিংস শেষ হয় ১৭৮ রানে। রংপুর ৮ রানে ম্যাচ জিতে সাতে সাত জয় নিয়ে ১৪ পয়েন্টে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে। রংপুরের আশপাশেও কোনও দল নেই।
রংপুরের বোলারদের মধ্যে আকিফ জাবেদ দারুণ বোলিং করেছেন। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়েই মূলত খুলনার ব্যাটাররা খেই হারিয়েছে। ২৯ রানে তার শিকার তিনটি উইকেট। এছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মেহেদী হাসান দুটি করে উইকেট নেন। টানা ম্যাচ খেলার ধকল সামলাতে পারেননি নাহিদ রানা। ৩ ওভারে ৩৭ রান খরচ করে উইকেট শূন্য ছিলেন এই পেসার।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা করে ধীরগতির। তবে পাওয়ার প্লে-তে তাদের শুরুটা হয় নড়বড়ে। ৩০ রান তুলতেই সাজঘরের পথ ধরেন স্টিভেন টেলর (১৩) ও সাইফ হাসান (৭)। শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে অনেকটা সময় লেগেছে রংপুরের। ১৪ ওভার শেষেও তাদের রান ছিল ৩ উইকেটে ১০৫। সেখান থেকেই শুরু দলটির দুই পাকিস্তানি ব্যাটার খুশদিল শাহ এবং ইফতিখার আহমেদের তাণ্ডব। তাতে শেষ ৬ ওভারে দলের সংগ্রহে যোগ হয়েছে ৮১ রান। আর ২০ ওভার শেষে রংপুরের পুঁজি ৫ উইকেটে ১৮৬।
খুলনার বোলারদের দুঃস্বপ্ন দেখিয়ে ৩৫ বলে ৪ চার এবং ৬ ছক্কায় ৭৩ রানে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার। আর ৫ চারে ৪৩ রান করে হাসান মাহমুদের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ইফতিখার। চতুর্থ উইকেটে এই দুই ব্যাটার মিলে ৫৭ বলে গড়েন ১১৫ রানের জুটি। তাদের জুটিতেই শেষ পর্যন্ত ১৮৬ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় রংপুর।
খুলনার পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট পেয়েছেন দুই পেসার আবু হায়দার রনি এবং হাসান মাহমুদ।