X
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪
২০ বৈশাখ ১৪৩১

শততম ওয়ানডে জয়ের সঙ্গে সিরিজও বাংলাদেশের

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০১ অক্টোবর ২০১৬, ১৮:৫৯আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০১৬, ২২:১২

 

শততম ওয়ানডে জয়ের সঙ্গে সিরিজও বাংলাদেশের দৃশ্যটা এমনই হওয়ার কথা ছিল। যারা ঘরের মাঠে পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে মাটিতে নামিয়ে নিয়ে আসে, তারা আফগানিস্তানের বিপক্ষে সহজ জয় পাবে, এমন ভাবাটাই তো স্বাভাবিক। অথচ প্রথম দুই ম্যাচে ঘাম ঝড়ানো পারফরম্যান্সে উল্টো অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয় বাংলাদেশ। সেটারই জবাব আজ (শনিবার) তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে দিলো মাশরাফিরা। অঘোষিত ‘ফাইনালে’ আফগানদের ১৪১ রানে হারিয়ে সিরিজ তো বটেই সঙ্গে ওয়ানডেতে শততম জয়ের মাইলফলকটাও স্পর্শ করলো বাংলাদেশ।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা স্বাগতিকদের ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৭৯ রানের জবাবে আফগানরা ৩৩.৫ ওভারে অলআউট হয় ১৩৮ রানে। দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বড় স্কোরের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা তামিম ইকবাল জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ১১৮ বলে খেলেছেন ১১৮ রানের অসাধারণ এক ইনিংস।

আফগানিস্তান বোলারদের ওপর দিয়ে রীতিমত ঝড় বইয়ে দিয়েছেন সাব্বির রহমান। অনেক দিন পর তার আসল চেহারা দেখা মিলল। তামিম ইকবাল অবশ্য প্রথম ম্যাচেই দেখিয়েছিলেন ঝলক। এক ম্যাচ বিরতি দিয়ে এই ওপেনার হাজির হলেন আরও ভয়ঙ্কর রূপে। তাতে ফিরে পাওয়া গেল ‘বদলে যাওয়া’ বাংলাদেশকে। তামিম পেলেন সেঞ্চুরি আর সাব্বির করলেন হাফসেঞ্চুরি। তাদের গড়ে দেওয়া ভিতটা অবশ্য ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেননি মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা। এর পরও শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে স্বাগতিকরা স্কোরে জমা করেছে যে ২৭৯ রান।

অথচ একটা সময় ৩০০ রান হওয়াটা স্বাভাবিকই মনে হচ্ছিল। তামিম ও সাব্বির যে তাণ্ডব চালিয়েছেন আফগানিস্তান বোলারদের ওপর, তাতে রান পাহাড়ের নিচেই পড়ার কথা সফরকারীদের। তবু শেষ পর্যন্ত অতদূর যে স্কোরটা এগিয়েছে, তা মাহমুদউল্লাহর ২২ বলে হার না মানা ৩২ রানের ঝোড়ো ইনিংসটির কল্যাণে।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিম-সাব্বির যোগ করেন ১৪০ রান। শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না খুব একটা। চরম খারাপ সময় কাটানো সৌম্য সরকার আবারও ব্যর্থ হয়ে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। মিরওয়াইস আশরাফের বলে ১১ রানে তিনি ফেরেন উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ শাহজাদের গ্ল্যাভসবন্দি হয়ে। এর পরই আসলে দেখা মেলে বাংলাদেশের দুর্দান্ত ব্যাটিং। আফগান বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলেছেন তামিম-সাব্বির। দুজনই পূরণ করেন হাফসেঞ্চুরি। তামিম তো ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরিও পূরণ করেন এই ম্যাচে। সাব্বির অবশ্য এগোতে পারেননি বেশিদূর। রহমত শাহর বলে তিনি আউট হন ৬৫ রান করে। ৭৯ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছিলেন ৬ চার ও ৩ ছক্কায়।

সাব্বির আউট হলেও ভুল করেননি তামিম। প্রথম ওয়ানডেতে ৮০ রানে আউট হওয়া তামিম এবার ঠিকই তুলে নিয়েছেন সেঞ্চুরি। যদিও তাতে আছে ভাগ্যের ছোঁয়াও। ব্যক্তিগত ১ রানের সময় আজগর স্ট্যানিকজাই অমন সহজ সুযোগ ক্যাচ ফেলে না দিলে তামিম তো আগেই ফেরেন প্যাভিলিয়নে। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন বড় রানের ভিত। মোহাম্মদ নবীর বলে আউট হওয়ার আগে ১১৮ বলে খেলেছেন ১১৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ১৫৮ মিনিটের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১১ চার ও ২ ছক্কায়।

তামিমের আউট হওয়ার পরই অবশ্য পাল্টে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের চিত্র। মাত্র ৯ রান যোগ করতেই যে স্বাগতিকরা হারায় গুরুত্বপূর্ণ ৩ উইকেট। সাকিব আল হাসান খুব বেশি অবদান রাখতে পারেননি, ভালো শুরুর পরও ফিরে যান ১৭ রান করে। এর পর পরই আউট ফর্ম হাতরে বেড়ানো মুশফিকুর রহিম। আবারও রশিদ খানের ঘূর্ণিতে এলবিডাব্লিউ হয়ে যায় ১২ রানে। আশা জাগানো মোসাদ্দেক হোসেনও ব্যর্থ। অভিষেকে উজ্জ্বলতা ছড়ানো মোসাদ্দেক আউট মাত্র ৪ রানে। ওই বিপর্যয়ের পর মাহমুদউল্লাহ অসাধারণ ব্যাটিংয়ে আফগানদের দিকে ২৮০ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ।

কঠিন সেই লক্ষ্যের শুরুতেই আফগানিস্তান হারায় ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদকে। মাশরাফি বিন মর্তুজার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান শাহজাদ রানের খাতা খোলার আগেই। শুরুতেই উইকেট হরানোর চাপ কাটিয়ে দলীয় হাফসেঞ্চুরিও পূরণ করে সফরকারীরা। যদিও এর পরই আঘাত হানেন মোশাররফ রুবেল। বাংলাদেশি স্পিনার নওরজ মঙ্গলকে (৩৩) এলবিডাব্লিউ করার পর হাশমতউল্লাহ শাহিদিকেও (০) ফেরালে আবার চাপে পড়ে আফগানরা। অধিনায়ক আজগর স্ট্যানিকজাইও (১) রান আউট হয়ে ফেরেন সাকিব আল হাসানের সরাসরি থ্রোতে। এর পর তাসকিনের বলে সলিমুল্লাহ শেনওয়ারি (১৩) মুশফিকুর রহিমের গ্ল্যাভসে ধরা পড়লে আফগানরা হারায় পঞ্চম উইকেট।  খানিক পর এই তাসকিনের বলেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন রহমত শাহ (৩৬)। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম করা মোহাম্মদ নবীও যোগ দেন ব্যর্থতার মিছিলে। দীর্ঘ ৮ বছর পর জাতীয় দলে ফিরে চমক দেখানো মোশাররফের বলে আউট হন তিনি মাত্র ৩ রান করে। ৮৯ রানে ৭ উইকেট হারানো আফগানদের জয়ের স্বপ্ন আসলে তখনই মিলে গিয়েছিল দূর দিগন্তে। বাকি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতার, সেটাও শেষ হয় দৌলত জারদানের আউটের মধ্যে দিয়ে।

তাতে সিরিজ জয়ের সঙ্গে শততম ওয়ানডে জেতার আনন্দে মাতে গোটা বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৭৯/৮ (তামিম ১১৮, সাব্বির ৬৫, মাহমুদ ৩২*, সাকিব ১৭, মুশফিক ১২; রশিদ ২/৩৯, নবী ২/৪১)।

আফগানিস্তান : ৩৩.৫ ওভারে ১৩৮ (রহমত ৩৬, নওরজ ৩৩, নাজিবুল্লাহ ২৬, রশিদ ১৭; মোশাররফ ৩/২৪, তাসকিন ২/৩১)।

ফল : বাংলাদেশ ১৪১ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তামিম ইকবাল।

ম্যান অব দ্য সিরিজ : তামিম ইকবাল।

/কেআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
অনেক নার্ভাস ছিলেন সাইফউদ্দিন
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
বকশিবাজার মোড়ে বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
১২ বছর পর মুম্বাইয়ের মাঠে কলকাতার জয়
১২ বছর পর মুম্বাইয়ের মাঠে কলকাতার জয়
বেড়িবাঁধে উন্নত নিরাপত্তা ও গতিশীলতা: মেয়র আতিকের কাছে ইউল্যাবের আবেদন
বেড়িবাঁধে উন্নত নিরাপত্তা ও গতিশীলতা: মেয়র আতিকের কাছে ইউল্যাবের আবেদন
সর্বাধিক পঠিত
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
মুক্তি পেলেন মামুনুল হক
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
যশোরে আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
২৫ জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা শনিবার বন্ধ
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
কেমন থাকবে আগামী কয়েকদিনের আবহাওয়া?
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা
নদীতে ধরা পড়ছে না ইলিশ, কারণ জানালেন মৎস্য কর্মকর্তা