X
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রসঙ্গ: ‘অনুমিত’ সংখ্যা

বিশ্বব্যাংকের কাছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তথ্য চাইবে বাংলাদেশ

হিটলার এ. হালিম
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৮:১৪আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, ০৮:২০

ইন্টারনেট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ‘অনুমিত’ সংখ্যা প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাংকের কাছে এর বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইবে বাংলাদেশ।বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখ প্রকাশ করায় সরকারের দুজন প্রতিমন্ত্রী এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছে জানতে চাইব, কিভাবে তারা এই সংখ্যা পেলেন।  
প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাংক গত ১৪ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১ কোটি ২০ লাখ। ওই প্রতিবেদনের ‘আ ক্লোজার লুক অ্যাট ওয়ার্ল্ডস অফলাইন পপুলেশন’ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৪৮ (১৪ কোটি ৮০ লাখ) মিলিয়ন মানুষ অফলাইনে। দেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যা ধরে হিসাব করলে দেখা যায়, মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ অনলাইনে আছে।
অন্যদিকে, গত ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর যে সংখ্যা প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, দেশের মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৫ কোটি ৪১ লাখ ২০ হাজার।
দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও বিশ্বব্যাংকের সংখ্যার মধ্যে বিরাট ফারাক দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের দুই প্রতিমন্ত্রী। তারা বলেছেন, বিশ্বব্যাংক এ সংখ্যা কোথায় পেলেন? প্রতিবেদনে প্রকাশিত এ তথ্য সত্য নয়।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক ২০১৬ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল ডিভিডেন্ট।’ বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশসহ অনেক দেশেরই তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন নিয়ে তুলনামূলক পর্যালোচনা করে যে, প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, ইতোমধ্যে তা বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছে। ভারত-শ্রীলঙ্কাসহ অনেক দেশ এই প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য নিয়ে আপত্তি করেছে। ভারত মনে করে, কেবল ইন্টারনেট অর্থনীতির ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় রেখে উন্নয়ন সূচক নির্ধারণ করা হলে তথ্যপ্রযুক্তির অন্যসব সাফল্যকে দুর্বল মনে হবে।

ইন্টারনেটের গ্রাহক সাধারণত তিন শ্রেণির হয়ে থাকে, প্রাথমিক, আত্মবিশ্বাসী ও অগ্রসর। বিশ্বব্যাংক কোন শ্রেণির ডাটা নিয়ে এমন হিসাব দিয়েছে তাও পরিষ্কার করেনি। তবে বাংলাদেশে আত্মবিশ্বাসী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে বলে মনে করেন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বিশ্বব্যাংক কোন বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে, কেউই ধারণা করতে পারছেন না। কেউ-কেউ অবশ্য বলেছেন, অফলাইন বলতে বিশ্বব্যাংক সবসময় ইন্টারনেটের বাইরে থাকা এবং অনলাইন বলতে সব সময় ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত থাকা বুঝিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু সেটি কী প্রক্রিয়ায় তা-ও জানা জায়নি। তবে, প্রতিবেদনের এক জায়গায় বলা হয়েছে, এটা বিশ্বব্যাংকের ‘অনুমিত’ হিসাব।

এদিকে, দেশে ইনটারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রকাশ করে থাকে বিটিআরসি। মোবাইলফোন অপারেটররা প্রতিমাসে ইন্টারনেটের নতুন গ্রাহকের যে তালিকা বিটিঅরসিতে পাঠায়, সংস্থাটি তা থেকে গ্রাহকের সংখ্যা হিসাব করে প্রকাশ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে বিটিআরসির একটি নির্দেশনা রয়েছে। অপারেটররা সেই নির্দেশনা ফলো করেন। বিটিআরসির নিয়ম হলো, (সক্রিয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নির্ধারণে) ৯০ দিন বা ৩ মাসের মধ্যে একজন ব্যক্তি একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই তিনি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হিসেবে চিহ্নিত হবেন।

জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ সংখ্যা বিশ্বব্যাংক কোথায় পেল কে জানে। তবে ওদের তথ্য সঠিক নয়। আমি তো মনে করি, আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৫ কোটি।

এদিকে, আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা নিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। বিটিআরসির কাছে এ বিষয়ে তথ্য রয়েছে এবং তারাই এই সংখ্যা প্রকাশ করে। মোবাইলফোন অপারেটরদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েই বিটিআরসি তা প্রকাশ করে ফলে কোথাও কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
পলক আরও বলেন, আমি বিটিআরসিকে বলব বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা বলতে। বিটিআরসি জানতে চাইবে, কিভাবে তারা এই সংখ্যা প্রকাশ করল। তাদের তথ্যের ভিত্তি বা সূত্র কী। আমরাও জানতে চাইব, বিশ্বব্যাংক কিভাবে অফলাইনে এবং অনলাইনে থাকাদের সংখ্যা বের করল।

বিশ্বব্যাংক নিজেদের তথ্য শু ধরিয়ে নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে পলক বলেন, আমরা আশা করব, বিশ্বব্যাংক তাদের এই ভুল তথ্য সংশোধন করবে।

বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী জানান, বিশ্বব্যাংক কিভাবে এ সংখ্যা প্রকাশ করল তা তার জানা নেই। তিনি জানান, কিছুদিন আগে তিনি একটি পরীক্ষা (অনেকটা জরিপের মতো) চালিয়ে দেখেছেন দেশে সক্রিয় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটির বেশি। ফলে তিনিও বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টটিতে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

/এমএনএইচ/আপ-এমএসএম

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘যুক্তরাষ্ট্রে ৯০০ শিক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনা বিএনপির অত্যাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়’
‘যুক্তরাষ্ট্রে ৯০০ শিক্ষার্থী গ্রেফতারের ঘটনা বিএনপির অত্যাচারের কথা মনে করিয়ে দেয়’
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতির শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতির শ্রদ্ধা
বেসিস নির্বাচন: তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনে নারীর অংশগ্রহণ
বেসিস নির্বাচন: তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনে নারীর অংশগ্রহণ
সর্বাধিক পঠিত
মিল্টন সমাদ্দার আটক
মিল্টন সমাদ্দার আটক
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
আজও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে, পথচারীদের জন্য শরবত-পানির ব্যবস্থা
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ
তীব্র তাপপ্রবাহ যেখানে আশীর্বাদ