X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১
টিআরএনবির গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

দেশ স্মার্ট হলেই হবে না, মানুষকেও স্মার্ট হতে হবে

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:৩৫আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ২৩:৩৫

ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন ২০২১ প্রণয়ন এবং এর সফল বাস্তবায়নের ফলে অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ফলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। সরকারি ডিজিটাল সেবাপ্রদানকারী প্ল্যাটফর্মগুলো সাধারণ মানুষের জন্য নতুন নতুন সুযোগ উন্মোচন করেছে; পাশাপাশি গড়ে তুলছে ডিজিটাল সেবা গ্রহণে তাদের মানসিকতা। ডিজিটাল কানেক্টিভিটি ইকোসিস্টেমে গঠিত শক্তিশালী অবকাঠামোর উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে করণীয় শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

বক্তারা বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১-এর চার মূল স্তম্ভ রয়েছে। এর প্রথম দু’টি হলো স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট সরকার। অপরদিকে রয়েছে স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি। এগুলো স্মার্ট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সরকারের অনন্য পদক্ষেপ এবং টেলিকম অপারেটরদের সহযোগী ভূমিকার কথা উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ’র (টিআরএনবি) সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন। টিআরএনবি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে’র সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক ড. মঞ্জুর হোসেন। দেশ স্মার্ট হলেই হবে না, মানুষকেও স্মার্ট হতে হবে

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ব বিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যখন সিক্স-জি নিয়ে কাজ করছে তখনও আমরা ফাইভ-জিতে যেতে পারিনি। আমাদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে হবে, ডাটা কমিউনিকেশন ডেভেলপমেন্ট ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশে গড়তে ইউনিভার্সিটিগুলোর সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির সমন্বয় এবং আইসিটি, তথ্য, টেলিকমসহ মন্ত্রণালয়গুলোকে সব স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের ঘর স্মার্ট, ডিভাইস স্মার্ট হলেই হবে না। প্রতিটা নাগরিককে স্মার্ট হতে হবে। এজন্য সবার জন্য প্রয়োজন শিক্ষা। শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তর হলে ডিজিটাল লিটারেসি বাড়বে। দেশ স্মার্ট হবে। এজন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

মঞ্জুর হোসেন প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমাদের রাষ্ট্রীয় পলিসিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য এখন আমাদের টেলিকম, আইটি, ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা বাড়ানো, সার্ভিস কস্ট কমানো, ডিজিটাল লিটারেসি, ডিভাইস কেনার সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কাজ করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে মোবাইল অপারেটরদের বড় ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। এজন্য প্রয়োজনে ইনসেনটিভ দেওয়া উচিত।

মহাব্যবস্থাপক, টেলিটকের আইটি অ্যান্ড বিলিং, ইনোভেশন অফিসার নুরুল মাবুদ চৌধুরী বলেন, সমন্বিত ডাটা ম্যানেজমেন্ট করতে পারলে আমরা স্মার্ট হতে পারবো। তিনি জানান, প্রতি বছর পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য টেলিটককে ২৫ মিলিয়ন মেসেজ (এমএসএস) পাঠাতে হবে। ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে এমনটা সম্ভব হয়েছে।

ডেটা সেবার প্রসারে প্রতিবন্ধকতাগুলোকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, আমাদের স্বচ্ছতা যোগাযোগ ও দুর্নীতি দূর করতে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রয়োজন। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বয়ের জায়গাটা খুব দরকার। বৈশ্বিক তুলনামূলক প্রেক্ষাপটে আমরা অনেক কম খরচে ডেটা (ইন্টারনেট) সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবুও সেটা অনেকের কাছেই সাশ্রয়ী হচ্ছে না মূলত উচ্চ কর হারের কারণে। করের বোঝা একটু কম হলে আরও সাশ্রয়ী মূল্যে গ্রাহকদের ডেটা সেবা দেওয়া সম্ভব।

বাংলালিংকের সিসিও তাইমুর রহমান বলেন, ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে টেলিকম অপারেটররা বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু পৃথিবীর সর্বোচ্চ ট্যাক্স পলিসি বাংলাদেশে। আমাদের পলিসিতে নজর দিতে হবে।

নগদের চিফ বিজনেস অফিসার শেখ আমিনুর রহমান বলেন, টেলিকম দিয়েই ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়, এখন সবার কোলাবোরেশান হলে স্মার্ট বাংলাদেশ খুব বেশি দূরে নয়। তিনি বলেন, রিমাইন্ডার সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হওয়া, পেমেন্ট সিস্টেম স্মার্ট হওয়ার দিকেও নজর দিতে হবে।

এটুআই-এর চিফ ই-গভর্ন্যান্স স্ট্র্যাটেজিস্ট ফরহাদ জাহিদ শেখ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ সফল হওয়ার পরে আইসিটি উপদেষ্টা স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য সিটিজেন, সোসাইটি, ইকোনমি ও গভর্নেন্স এই চারটি পিলারের কথা বলেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ কোয়ানটিটিনির্ভর না হয়ে কোয়ালিটিনির্ভর হবে।

মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট ডিভাইস যারা ব্যবহার করেন তাদের স্মার্ট বা ডিজিটাল লিটারেসির প্রয়োজন আছে।

জিএসএমএ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মোবাইল ফর ডেভেলপমেন্ট পরিচালক রাহুল সাহা বলেন, স্মার্ট ডিভাইসের জন্য বাংলাদেশের ট্যাক্স পৃথিবীর দ্বিতীয় শীর্ষে। এই প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।

/এইচএএইচ/এমএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা