X
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
১৫ বৈশাখ ১৪৩১

টয়লেট থাকাটাই কি সব?

তাহমিদুল ইসলাম
১৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৬:৩১আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৩, ২১:১৮

আজ বিশ্ব টয়লেট দিবস। আপনি সেই ভাগ্যবানদের একজন যিনি নিশ্চিন্তে টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন, যেখানে বাংলাদেশে এখনও প্রায় এক শতাংশ বা ২০ লাখ মানুষের কোনও টয়লেট সুবিধা নেই, আরও প্রায় ৬৮ লাখ মানুষ কাঁচা/খোলা/ঝুলন্ত ল্যাট্রিন ব্যবহার করেন।

প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী এই দিনটি স্যানিটেশন সংকট নিরসন এবং সবার জন্য নিরাপদ টয়লেট নিশ্চিতকরণে সবার ভূমিকা স্মরণে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও পরিসংখ্যানগতভাবে বাংলাদেশের অর্জন উল্লেখযোগ্য। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে যেখানে মাত্র ২.৫ শতাংশ মানুষের টয়লেট ছিল না, তখন ভারতে প্রায় ৪৮% মানুষ খোলা স্থানে মলত্যাগ করতেন। যদি এই মুহূর্তে জেএমপি ২০২৩ রিপোর্ট অনুযায়ী নিরাপদভাবে পরিচালিত স্যানিটেশনের কভারেজ ৩১ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে, যা গত দুই বছর আগেও ৩৯ শতাংশ ছিল।

বর্তমানে স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যে অস্পষ্টতা, যা জনস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে। ডায়রিয়া, কলেরা এবং টাইফয়েডসহ যেকোনও পানিবাহিত রোগ বিস্তারে এই অনিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা বিশেষ ভূমিকা রাখছে এবং জনসাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে, সেই সঙ্গে শিশুরা অপুষ্টি, স্টান্টিংয়ের মতো কারণে দুঃখজনকভাবে জীবন হারাচ্ছে। অথচ সদ্য প্রকাশিত জাতীয় ওয়াশ অ্যাকাউন্টস রিপোর্টে দেখা গেছে, পরিবারগুলো প্রতিবছরে শুধু নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধির জন্য গড়ে প্রায় ১১ হাজার ৫৭৪ টাকা খরচ করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, স্যানিটেশনে বিনিয়োগ করা প্রতিটি টাকা উন্নত স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা এবং চিকিৎসা সঞ্চয়ের মাধ্যমে যথেষ্ট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দেয়। এই বিশ্ব টয়লেট দিবসে, আমাদের মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া স্যানিটেশনের উন্নয়নে কিছু অঙ্গীকার করা অপরিহার্য, এবং যার প্রতিপালনে সরকার, বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ এবং জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা লাগবেই। আমরা উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ দূর করতে পারি, যা সবার জন্য মানসম্মত ও নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে পারবে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে সরকারকে সহযোগিতা করবে। যেখানে টেকসই স্যানিটেশন এন্টারপ্রাইজ এবং উদ্ভাবন বাড়াতে সরকার ও এনজিওগুলোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন উন্নত স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে আরও কঠিন করে তুলেছে। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে, আমাদের অবশ্যই একটি পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত এবং আরও ন্যায়সংগত ভবিষ্যতের জন্য সম্মিলিতভাবে চেষ্টা চালাতে হবে। এখনই সময় পদক্ষেপ নেওয়ার, যাতে “পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ, রূপান্তরিত বাংলাদেশ” এই অঙ্গীকার পালনে আমরা সম্মিলিতভাবে অবদান রাখতে পারি। একইসঙ্গে, বেসরকারি খাত তহবিল বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে অবদান রাখতে পারে। সুশীল সমাজ সংস্থাগুলো জনসাধারণের চাহিদাকে কেন্দ্র করে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতির প্রচার করতে পারে।

এই বিশ্ব টয়লেট দিবসটি হয়ে উঠুক বাংলাদেশের রূপান্তরমূলক পরিবর্তনের একটি অনুঘটক।

লেখক: উন্নয়নকর্মী, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ

সহ-লেখক: অরিত্র অংকন মিত্র, হাসিন জাহান; ওয়াটারএইড বাংলাদেশে কর্মরত, উন্নয়নকর্মী। 

/এসএএস/এমওএফ/

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব।

বাংলা ট্রিবিউনের সর্বশেষ
কাঁচা আম দিয়ে টক-মিষ্টি ললি বানাবেন যেভাবে
কাঁচা আম দিয়ে টক-মিষ্টি ললি বানাবেন যেভাবে
নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
নিউ ইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বিএনডিপি ডিবেটার হান্ট ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বিএনডিপি ডিবেটার হান্ট ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সদস্য হলেন কাজী নাবিল আহমেদ ও সেলিম মাহমুদ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড সদস্য হলেন কাজী নাবিল আহমেদ ও সেলিম মাহমুদ
সর্বশেষসর্বাধিক

লাইভ