X
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সংসদে সুরঞ্জিতকে ‘তুলোধুনো’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২১ জুলাই ২০১৬, ২১:১১আপডেট : ২১ জুলাই ২০১৬, ২২:৫৫

সংসদে দলীয় সদস্যদের কাছে তুলোধুনো হলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বর্ষীয়ান এই সংসদ সদস্যের একটি মন্তব্যের জের ধরে তার কঠোর সমালোচনা করেন সরকার দলীয় নেতারা। বৃহস্পতিবার রাতে সংসদ অধিবেশন চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেশ দখলের হুমকিতে মন্ত্রী বাহাদুররা সংসদ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন’ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমন মন্তব্য করলে সঙ্গে সঙ্গে এর বিরোধিতা করেন সরকার দলের বেশ কয়েকজন সদস্য। তারা সুরঞ্জিতের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তাকে ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বলেও আখ্যায়িত করেন।

এসময় তার বক্তব্য এক্সপাঞ্জের দাবিও তোলেন সংসদ সদস্যরা। তবে সংসদের বৈঠকে এসময় সভাপতির আসনে থাকা ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, বৈঠকে মন্ত্রী নেই। এটা ঠিক নয়। তার বক্তব্যে অসংসদীয় কোনও শব্দ থাকলে তা এক্সপাঞ্জ করা হবে বলেও সংসদকে আশ্বাস দেন তিনি।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সংসদের বৈঠকে মাগরিবের বিরতির পরে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, বাংলাদেশকে তারা দখল করতে চান না। এখন দেখা যাচ্ছে সংসদের বৈঠকে প্রথম সারির কোনও মন্ত্রী নেই। অন্য মন্ত্রীরা কী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হুমকিতে ভয় পেয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেলেন কী না। এভাবে সংসদের বৈঠক চালিয়ে কী লাভ?

এরপর সরকারি দলের আরেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। কিন্তু সরকারি দলের সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, শামীম ওসমান ও ড. হাছান মাহমুদ মন্ত্রীদের সম্পর্কে সুরঞ্জিতের দেওয়া বক্তব্য এক্সপাঞ্জের দাবি জানান।

এছাড়া চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য পাঠ করে বলেন, এটা নিয়ে বিভ্রান্তির কোনও অবকাশ নেই। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আপত্তিকর কোনও কিছু বলেননি। এ নিয়ে তৈরি বিতর্ক পুরোটাই মনগড়া।

সংসদের বৈঠকে এসময় মাত্র তিনজন মন্ত্রীকে দেখা গেছে। এদের মধ্যে প্রথম সারিতে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পেছনের সারিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। এছাড়া একাধিক প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত তার বক্তব্যে আরও বলেন, সামনের সারির মন্ত্রী বাহাদুর কাউকে দেখছি না। মর্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন বাংলাদেশ দখল তারা করবেন না। সাহায্য করার জন্য উনি চেষ্টা করবেন। এতে মনে হয়, ইচ্ছা করলে তারা দখল করতে পারে এবং দখল বহালও রাখতে পারে। এ ধরনের হুমকি আমেরিকানরা দিচ্ছেন। এই হুমকিতেই কী তাহলে মন্ত্রীরা তাদের নিরাপত্তার জন্য যে যার জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন?

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, এ ধরনের হুমকি কোনও দেশের কূটনৈতিকের দেওয়া শোভনীয় নয়। এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত। এ ব্যাপারে অন্তত পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা মন্ত্রণালয় একটি জোরালো আপত্তি দেবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রথম সারির মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি নিয়ে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি আরও বলেন, এভাবে সংসদ চলার চাইতে না চলাই ভাল। বৈঠক চালাতে হলে অন্তত সামনের সারির দু’এক জন মন্ত্রী হলেও থাকতে হবে। প্রথম সারিতে রাশেদ খান মেননের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে সুরঞ্জিত সেন বলেন, উনি তো ভেজাইল্ল্যা মন্ত্রী।

এরপর ডেপুটি স্পিকার বলেন, মন্ত্রীরা কেউই নেই। এটা ঠিক নয়। তবে স্পিকার এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, তিনি সুবিধাজনক সময়ে একটি বিবৃতি দিবেন বলেও আশা করছি।

এরপর ফ্লোর নিয়ে শেখ সেলিম বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদা ও সম্মান আছে। এটা কখনো কেউ লুণ্ঠন করতে পারবে না। মার্কিন একজন কূটনৈতিক হুমকি দেবে, বাংলাদেশকে তারা দখল করবে এটা কোন ধরনের আচরণ। তিনি এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অবশ্যই ওই কূটনীতিককে ডেকে এনে এই বক্তব্যে সদুত্তর পাওয়ার ব্যবস্থা করবেন।

এরপর ফ্লোর নেন সরকার দলের অপর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি সুরঞ্জিতের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, মন্ত্রীদের অনুপস্থিতির বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি যা বলেছেন তাতে মনে হয় যেন মন্ত্রীরা পালিয়ে গেছেন। এছাড়া ‘ভেজাইল্ল্যা মন্ত্রী’ শব্দটি মনে হয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অলক্ষ্যে বলেছেন। এটা এক্সপাঞ্জ করতে হবে।

সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেন, শেখ হাসিনার মন্ত্রীর সবাই পরীক্ষীত। এই নেতারা কোনও শক্তির কাছে মাথা নত করতে পারেন না। সুরঞ্জিত সেনের বক্তব্যে এই সংসদকে অসম্মানিত করা হয়েছে। মন্ত্রিসভার সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের অসম্মানিত করা হয়েছে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত একজন সিনিয়র নেতা। হয় তিনি নিজেই বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন না হয়, তার বক্তব্যের বিতর্কিত অংশ এক্সপাঞ্জ করতে হবে।

/ইএইচএস/এমও/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আজ বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস
আজ বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিহত বৈমানিক আসিম জাওয়াদের পরিবারের সাক্ষাৎ
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিহত বৈমানিক আসিম জাওয়াদের পরিবারের সাক্ষাৎ
দাঁড়িয়ে থাকা যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন
দাঁড়িয়ে থাকা যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনায় ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝরনায় ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
সর্বাধিক পঠিত
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
ফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিফুল দিয়ে বরণ, রিট দিয়ে শুরু কোন্দল!
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প
এডিপি: সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে যে ১০ প্রকল্প
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়