X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সৌদি যুবরাজকে পাশ কাটাতে চাইছেন বাইডেন?

বিদেশ ডেস্ক
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৬:০২আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৮:১৩
image

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সখ্যতা থাকলেও এখন আর তা বজায় রাখতে রাজি নয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। এরইমধ্যে তারা ইঙ্গিত দিয়েছে, যুবরাজের সঙ্গে যেকোনও রকমের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ কমিয়ে আনা হবে। শুধু তাই নয়, অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তৈরি একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন কংগ্রেসে উপস্থাপন করবেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘আচরণগত পরিবর্তন’ আনবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে বাইডেন প্রশাসন। সব কিছু বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে, যুবরাজকে পাশ কাটিয়ে চলতে চাইছেন নতুন প্রেসিডেন্ট।

সৌদি আরবের বাদশা সালমান জীবিত থাকলেও তার পুত্র যুবরাজ মোহাম্মদকে ক্ষমতার মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বাদশা’র বদলে ৩৫ বছর বয়সী যুবরাজকেই প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যায়। মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে কাজ করতে পছন্দ করতো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন  ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনারও। ২০১৮ সালে ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের তৈরি একটি তদন্ত প্রতিবেদনও ধামাচাপা দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। বাইডেন নির্বাচনি প্রচারণার সময় জামাল খাশোগি হত্যায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সম্পর্ক নতুন করে পর্যালোচনা করার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।

এ সপ্তাহে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি জানিয়েছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পুনঃমূল্যায়ন করবেন জো বাইডেন। যুবরাজ নয় বরং বাদশাহ সালমানের সঙ্গেই আলোচনা করবেন তিনি। সাকি বলেন, ‘প্রথম থেকেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি যে, আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করতে যাচ্ছি। আলোচনা হবে সমপর্যায়ের ব্যক্তিদের মধ্যে। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সম-পদ হলো সৌদি আরবের বাদশা সালমান। আশা করি, উপযুক্ত সময়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হবে।’ 

আবার বাইডেন প্রশাসনের নতুন গোয়েন্দা প্রধান জানিয়েছেন শিগগিরই খাশোগি হত্যার অপ্রকাশিত সে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন যে বক্তব্য দিয়েছে তা প্রতীকী নাকি আসলেই অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র কি তাহলে সৌদি সিংহাসনের উত্তরাধিকারদের তালিকায় পরিবর্তন আনার জন্য এবং যুবরাজের পদমর্যাদা বাতিলে সৌদি বাদশাকে চাপ দিতে চাইছে?

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অগ্রাধিকারের জায়গায় সৌ্দি আরব গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে পাশে থেকেছে। তবে সে অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধ ও স্বার্থের প্রতিফলন হওয়াটা জরুরি। তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকান জনগণ আশা করে সৌদি আরবের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্বের প্রশ্নে মার্কিন নীতিমালায় আইনের শাসনের প্রাধান্য ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে। প্রাধান্যের বিষয়গুলোকে সমুন্নত রেখে সৌদি আরবের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তারা যদি তা না করে তাহলে মার্কিন স্বার্থ ও মূলবোধের সুরক্ষা নিশ্চিতের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র ছাড় দেবে না।’

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সাবেক বিশ্লেষক ও ব্রুকিংস ইন্সটিটিউশনের সিনিয়র ফেলো ব্রুস রিডেল বলেন, ‘সৌদি রাজপরিবারের কাছে বাইডেন এ বার্তাটি স্পষ্ট করে পাঠিয়েছেন যে যতদিন পর্যন্ত মোহাম্মদ বিন সালমান যুবরাজ হিসেবে সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরসূরী থাকছেন, ততোদিন সৌদি আরবকে পরিয়াহ তথা বিচ্যুত রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আমি জানি না প্রশাসন কী ভাবছে। তবে তাকে সরিয়ে দেওয়াটাই সৌদি আরবের জন্য ভালো হবে।’

দায়িত্বগ্রহণের পর প্রথম পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক ভাষণে বাইডেন ঘোষণা দেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি জোটকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করবে। ওই যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিও বন্ধ করবে তারা। অপরদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন বলেছেন, সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরালো করতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।

কার্নেগি এনডোমেন্ট’স মিডল ইস্ট প্রোগ্রামের পরিচালক মিশেল ডুনে মনে করেন, বাইডেন প্রশাসন একইসময়ে অনেকগুলো ইঙ্গিত দিতে চাইছে। একদিকে তারা বলছে ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবকে সহযোগিতা প্রদান বন্ধ করবে, ইরানের সঙ্গে চুক্তিতে ফিরতে চাইছে তারা আবার একইসঙ্গে তারা এটা বিশ্বাস করে যে নিজেদের সীমান্ত রক্ষা করাটা সৌদি আরবের বৈধ দাবি।

‘এর সঙ্গে আরও একটি নতুন ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে যে নতুন প্রশাসন মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বিনিয়োগে যাবে না। তার মানে উত্তরসূরী পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তারা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব খাটাতে চাইছে। আমি ঠিক জানি না। তারা হয়তো কিঞ্চিত দূরত্ব তৈরি করতে চাচ্ছে।’ বলেন ডুনে।

/এফইউ/
সম্পর্কিত
ইসরায়েলের আকরে শহরে হামলার দাবি করলো হিজবুল্লাহ
গাজার হাসপাতালে গণকবর, আতঙ্কিত জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ৫ অভিবাসী নিহত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!