মাঠ কাঁপানো খেলোয়াড় কিংবা রুপালি পর্দার তারকাদের রাজনীতির মাঠে নামার নজির বিশ্বজুড়েই। তবে ভিন্নপথে হেঁটেছেন এক সময়ের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ সোহেল তাজ। শুধু সংসদ সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ নয়, একেবারেই রাজনীতি ছেড়ে নেমেছেন স্বাস্থ্য সুরক্ষার লড়াইয়ে। দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভূমিকা রাখতে কাজ করছেন তিনি।
বাংলাদেশের জাতীয় চার নেতার অন্যতম তাজউদ্দীন আহমদ, যিনি একইসঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার ছেলে তানজিম আহমেদ সোহেল ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডে চালু করেছেন জিম। সেখানে ৭৫১ নম্বর ভবনের সাততলায় তার ‘ইনস্পায়ার ফিটনেস বাই সোহেল তাজ’ শরীরচর্চা কেন্দ্র।
বুধবার (৩ মার্চ) ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকাল ৫টা, নিজেই গাড়ি চালিয়ে চলে এলেন সোহেল তাজ। মিনিট দশেক পরেই সেখানে হাজির যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। সঙ্গে তার ভাই জেমকন গ্রুপের পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদ।
একসময়ের রাজনৈতিক সহকর্মী নন শুধু, সোহেল তাজের বন্ধু কাজী নাবিল আহমেদ। বন্ধুকে নিজের শরীরচর্চা কেন্দ্র, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে নিজের ভাবনা, উদ্যোগ নিয়ে নানা কথা বললেন সোহেল তাজ।
সুস্থতার জন্য শরীরচর্চার বিকল্প নেই উল্লেখ করে সোহেল তাজ জানালেন, সারাদেশে ব্যায়াম চর্চা ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে কোনও কার্পণ্য করেননি তিনি। সোহেল তাজ বলেন, বিশ্বসেরা ভারটেক্সের ব্যায়ামের যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে এই ব্যায়ামাগারে। করোনা মহামারিতে সংক্রমণের কথা বিবেচনা করে ব্যায়ামাগারের বায়ু ব্যবস্থাপনায় রাখা হয়েছে বিশেষ প্রক্রিয়া। বিশুদ্ধ বাতাস প্রবেশের যেমন ব্যবস্থা রয়েছে, তেমনি ভেতরের বাতাস বের করে দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। যে স্থান দিয়ে ভেতরে বাতাস প্রবেশ করছে সেখানে বসানো হয়েছে ইউভি লাইট। যার কারণে যে বাতাস প্রবেশ করছে তা জীবাণুমুক্ত হচ্ছে।
রাজনীতি ছেড়ে শরীরচর্চা নিয়ে ভালো আছেন বলেই হেসে ওঠেন সোহেল তাজ। নিজের অতীত স্মৃতিও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান আমি। বাবাকে হত্যা করার পর মা যোগ দেন রাজনীতিতে। বাসায় খাওয়া দাওয়ার কোনও তদারকি ছিল না তেমন। আমিও মিষ্টি খেতাম প্রচুর। মোটা হওয়ায় আমাকে খেপাতো অনেকে। স্কুলে যখন আমাকে ফুটবল টিমে নিলো না, মনস্থির করলাম যেভাবেই হোক স্কুলের ফুটবল দলে নাম লেখাতে হবে। টিভিতে অলিম্পিক খেলা এবং খেলোয়াড়দের দেখে শরীরচর্চায় মনোযোগী হলাম। বাসার সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠানামা শুরু করলাম।’
সোহেল তাজ বলেন, ‘ব্যায়াম শুধু শরীরই ঠিক করে না, মানসিক কনফিডেন্সও বাড়িয়ে দেয়।’ এরপর কাজী নাবিল আহমেদকে জিম ঘুরিয়ে দেখান সোহেল তাজ। দেখাতে থাকেন ব্যায়াম করার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। প্রায় প্রতিদিনই বিকাল ৫টার পর থেকে এখানে সময় দেন তিনি। নিজে ব্যায়াম করেন, অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দেন।
নাবিল আহমেদকে খাদ্যাভ্যাস নিয়েও পরামর্শ দেন সোহেল তাজ। বলেন, ‘তিন বেলার বেশি খাবার খাই না’। ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘কখনও জুস খাবেন না।’
সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবনচর্চায় সোহেল তাজের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। বলেন, ‘তার (সোহেল তাজ) এ কাজে আমি অত্যন্ত অনুপ্রাণিত। আমাদের আরও বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে। আর এ কাজের অন্যতম পদ্ধতি হচ্ছে শরীরচর্চা করা। আমি তার এ উদ্যোগের সফলতা কামনা করছি।’