X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সূর্যমুখী চাষে লাভবান কৃষক

নীলফামারী প্রতিনিধি
৩০ মার্চ ২০২১, ১১:০৭আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২১, ১১:০৭

সূর্যমুখীতে ছেয়ে গেছে নীলফামারী জেলার ফসলের মাঠ। ক্ষেতজুড়ে থাকা সূর্যমুখীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন শত শত মানুষ। ফুলের সৌন্দর্যকে নিজের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি করছেন অনেকেই।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, এবার জেলায় ২৬৫ হেক্টর (১, ৯৯০ বিঘা) জমিতে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। গত বছর সূর্যমুখীর চাষ হয়েছিল ৯৭ হেক্টর জমিতে। এবারে চাষ বেড়েছে ১৬৮ হেক্টর।

সূর্যমুখীর ক্ষেত

সদর উপজেলার কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব গুড়গুড়ী গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী জানায়, এবার আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ৫ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। ফুল থেকে তেল, খৈল ও জ্বালানীর জন্য খড়ি পাওয়া যায়। প্রতি কেজি বীজ থেকে কমপক্ষে আধা লিটার থেকে পৌনে এক লিটার তৈল পাওয়া যায়। প্রতি একরে ৭-৮ মণ পর্যন্ত বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। আর এতে তেল উৎপাদন হবে প্রতি একরে ১৪০-২০০ লিটার পর্যন্ত। প্রতি লিটার তেলের বাজার সর্বনিন্ম ২৫০ টাকা। প্রতি একর জমিতে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৭০০ টাকা।  এতে খরচ বাদে কৃষকের লাভ হবে ৪৩ হাজার।

নীলফামারী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, এখানে প্রত্যেক বছর বন্যার কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। বন্যার পর জমিতে প্রচুর পরিমাণ পলি পড়ে। এই জমিতে তেল জাতীয় ফসল চাষে উপযোগী।

বন্যার কারণে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরই পরিপেক্ষিতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জেলায় এক হাজার ৮০০ জন কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে চাষাবাদ করা হয়েছে নীলফামারী সদরে। কৃষককে সূর্যমুখী চাষের জন্য বিনামূল্যে বীজ সার দেওয়া হয়েছে।

সূর্যমুখীর ক্ষেত

এখানকার আবহাওয়া ও মাটি উপযোগী হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। গত বছরের চেয়ে এবার ১৬৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখির বেশি চাষ হয়েছে। পাশাপাশি ফুল থেকে উৎপাদিত তেল ও খৈল বিক্রি করে লাভবান হবেন কৃষকরা। মূলত ভোজ্যতেল ও গরুর জন্য খৈল তৈরির উদ্দেশ্যে সূর্যমুখী চাষের উদ্যোগ নেয় কৃষি বিভাগ। ফুল চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৬-৭ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এই চাষে ঝুঁকছেন অন্য কৃষকরাও।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠিয়ে ছিলাম, কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সহযোগিতা করার জন্য। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি পুনর্বাসনের আওতায় উপজেলায় ১ হাজার ৮০০ কৃষককে সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য বীজ সহায়তা দেওয়া হয়।’ 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান এ বছর জেলায় ১ হাজার ৮০০ কৃষককে সূর্যমুখী চাষের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয়। বিনা মূল্যে বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। সূর্যমুখী চাষের কারণে দেশ তেল সমৃদ্ধ হবে। সরিষার তেলের চেয়ে সূর্যমুখী তেলের মান খুবই ভালো। বিঘাতে প্রায় ৮ থেকে সারে ৮ মণ ফলন হয়। সূর্যমুখী চাষ সারাদেশে ছড়িয়েছে দিতে পারলে তেল আমদানি করতে হবে না। এতে খরচ কমে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখীর চাষ লাভজনক।  থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের চাষ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। দেশের নোয়াখালী জেলায় তেল তৈরির একমাত্র মেশিন সেখানে স্থাপন করা হয়। আশা করি, আস্তে আস্তে এই তেল ও সূর্যমুখী চাষ দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। নীলফামারীর মাটি সূর্যমুখী চাষের জন্য খুবই উপযোগী ও পরিবেশ বান্ধব।

 

/এসটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
যাত্রা শুরু করলো ইউএস-বাংলার ‘এয়ারবাস’
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
ব্রাইটনকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সতর্ক ম্যানসিটি
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
পরিবারের অভাব দূর করতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন রাকিব
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
কেমন চলছে ভারতের লোকসভার দ্বিতীয় দফার ভোট?
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
খুলনায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ