X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘এরপর আর কোনও আন্দোলন-সংগ্রাম করতে পারিনি’

ঢাবি প্রতিনিধি
০৮ এপ্রিল ২০২১, ২০:০৭আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২১, ২৩:৫৩

স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পার হলেও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে পুরোপুরি গবেষণাগার হয়ে উঠতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই আক্ষেপই উঠে এসেছে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহর কথায়।

বাংলা ট্রিবিউন: স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর তো পার হয়ে গেলো। সামনের পঞ্চাশ বছর কী কী আশা করেন?

ফয়েজ উল্লাহ: স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে এসেও আমরা স্বাধীনতা খুঁজি। আমরা তো আর অতটুকু সময় পাইনি। যতটুকু দেখেছি, বিগত সরকারগুলোর সময় বাকস্বাধীনতার ওপর আঘাত এসেছে। সেটা এখনও চলছে। এখন কেউ কিছু বলতে গেলে আইসিটি আইনে মামলা দেওয়া হচ্ছে। কোনও শিক্ষার্থী কিছু লিখে ফেললেও শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। আশা করব সামনের পঞ্চাশ বছর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে নিয়ে একটা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সবার কথা বলার অধিকার নিশ্চিত হবে।বিভিন্ন খাতের দুর্নীতি শূন্যের কোঠায় নামবে। সবার অর্থনৈতিক সক্ষমতাও নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: ক্যাম্পাসে রাজনীতির সংস্কৃতির পরিবর্তন আসছে? কেমন পরিবর্তন দেখছেন?

ফয়েজ উল্লাহ: না, বিশেষ কোনও পরিবর্তন আসেনি। আমরা দেখি কিছু কিছু রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা ধরুন। আবার কিছু দিন আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাও দেখলাম। স্বাধীনতার আগে-পরের ইতিহাসের দিকে যদি তাকাই তবে দেখা যাবে সকল সংগঠনের যে একটা প্রথাবদ্ধতা ছিল, প্রতিবাদ করার ভূমিকা ছিল, সেটা এখন ন্যূনতম পর্যায়েও নেই। যারা ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন আছে তারা সরকারের বিভিন্ন উদ্দেশ্য পূরণে কাজ করছে। কোনও ছাত্র আন্দোলন হলে সেটাকে নানাভাবে অপদস্থ করছে। বলতে গেলে, ছাত্র রাজনীতিতে এখন আগের চেয়েও বেশি বাধা।

বাংলা ট্রিবিউন: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় রাজনৈতিক প্রভাব পড়ছে?

ফয়েজ উল্লাহ: আমরা কেউ রাজনৈতিক প্রভাবের ঊর্ধ্বে নই। সবকিছুই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনীতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। বিশ্বদ্যালয়গুলোতেও অনেক বেশি প্রভাব। শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে,কিন্তু দলাদলির কারণে শিক্ষার মূল্য উদ্দেশ্য তথা গবেষণাধর্মী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আমরা মনে করি একটি সুস্থ ধারার রাজনীতিই প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে আসবে।

বাংলা ট্রিবিউন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবর্ষে পা দিলো। কিন্তু র‌্যাংকিংয়ে ঢাবির অবস্থান ক্রমশ পেছাচ্ছে। এর কারণ কী?

ফয়েজ উল্লাহ: অপরাজনীতির কারণে আজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এই অবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গবেষণাধর্মী কয়টা লেখা জার্নালে দেখতে পাই? যা প্রাকাশিত হচ্ছে তাতেও চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠছে। বিশ্বদ্যালয়ের গবেষণা খাতে ন্যূনতম বরাদ্দ দেওয়া হয়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় কাজই হলো গবেষণা করা, গবেষণার মাধ্যমে নতুন কিছু বের করে আনা। অগ্রাধিকার বেশি দেওয়ার কথা ছিল এমফিল, পিইএচডির দিকে। সেদিকে দেওয়া হচ্ছে না।

বাংলা ট্রিবিউন: বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে ছাত্র সংগঠনের ভূমিকা ছিল?

ফয়েজ উল্লাহ: স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরু থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ছাত্র সংগঠনের একটা উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা আছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে। কিন্তু এরপর বলতে গেলে আর কোনও আন্দোলন-সংগ্রাম করতে পারিনি।

বাংলা ট্রিবিউন: বর্তমান ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ে সংক্ষেপে বলুন।সহাবস্থান আছে?

ফয়েজ উল্লাহ: সহাবস্থানের জন্য আমরা ২০-২৫ বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। যখন যে সরকার আসে তখন ওই সরকারের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়া অন্য কোনও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হলে থাকতে পারে না। সহাবস্থান নেই। সহাবস্থান নিশ্চিতের জন্য ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু সেটি হলো কারচুপির মাধ্যমে। সঙ্কট নিরসন হয়নি।

বাংলা ট্রিবিউন: ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ভিন্নমত গ্রহণের প্রবণতা আছে?

ফয়েজ উল্লাহ: গ্রহণের প্রবণতা থাকলে আজ একক আধিপত্য বা সহাবস্থানের প্রশ্ন আসতো না। ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আমরা একটা দাবি জানিয়েছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র সংগঠন একসঙ্গে বসে মতামত দিয়ে শিক্ষার যে আন্দোলন তা চালিয়ে যাওয়া। তা হলে শিক্ষার জায়গাটা জোরালো হতো। আমরা যেসব আন্দোলন করছি সেগুলোও সফল হতো।

/এফএ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অ্যাম্বাসেডর যুবরাজ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অ্যাম্বাসেডর যুবরাজ
অবশেষে মুক্তির বার্তা
অবশেষে মুক্তির বার্তা
এমপিপুত্র প্রার্থী হওয়ায় ‘আগুন জ্বলছে’ সেলিম প্রধানের গায়ে
এমপিপুত্র প্রার্থী হওয়ায় ‘আগুন জ্বলছে’ সেলিম প্রধানের গায়ে
সর্বাধিক পঠিত
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
চুক্তিতে মাউশির ডিজি হলেন নেহাল আহমেদ
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন