X
বুধবার, ০৭ মে ২০২৫
২৩ বৈশাখ ১৪৩২

গ্রামভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ভাবনা

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৯ এপ্রিল ২০২১, ২০:০৮আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২১, ২০:১১

আগামী ২৩ মে থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাসের  সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে যেখানে করোনার প্রকোপ নেই বা কম এমন গ্রাম বা এলাকাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। আর পরিস্থিতির উন্নতি হলে সীমিত আকারে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তাভাবনা রয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।

গ্রাম বা এলাকাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তাবে সমর্থনও জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব মো. মাহবুব হোসেন।  তিনি বলেন, ‘এখন বোধহয় সময় এসেছে গ্রামভিত্তিক বা এলাকাভিত্তিক পলিসি নিতে হবে।’

বৃহস্পতিবার ( ২৯ এপ্রিল) ‘করোনা বিপর্যস্ত শিক্ষা : কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক ভার্চুয়াল শিক্ষা সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সমর্থন জানান।  সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনায় গণস্বাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত শিক্ষা সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান।

পিকেএসএফ এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সংলাপে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ, একশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীর, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের ভাইস চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ এবং  ঢাকা আহসানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক ড. এহসানুর রহমান। সংলাপে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালককে এম এনামুল হক।

সংলাপে শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টরা প্রস্তাব করেন, যেসব গ্রামে বা এলাকায় করোনার সংক্রমণ নেই সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।  পৌরসভা বা উপজেলা সদর বাদ দিয়ে হলেও শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া প্রয়োজন। করোনা সহজে যাবে না এমনটা মেনে নিয়েই স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

এই প্রস্তাবের পরিপেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল— যারা এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের পরীক্ষার্থী তারা প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে। অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরা একদিন করে আসবে।  একেক দিন একেকটা ক্লাস নেওয়ার, কিন্তু আমরা পারিনি।  মে মাস পর্যন্ত (২২ মে) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়াতে হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।  আমরা আশা করছি— পরিস্থিতির উন্নতি হলে এই পদ্ধতি নিয়ে এগুতে পারবো।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষতির বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কাটাতে আমাদের সব অবকাঠামো ব্যবহার করছি। কিন্তু নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীর কাছে আমরা পৌঁছাতে পারছি না। কিন্তু শিক্ষা সকলের জন্য। যাদের আনতে পারছি না তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে।

সচিব আরও বলেন, ‘আমরা সারা বাংলাদেশের জন্য একটা পলিসি নিয়েছি।  কিন্তু যেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম, এখন বোধহয় সময় এসেছে গ্রামভিত্তিক বা এলাকাভিত্তিক পলিসি নিতে হবে। ঢাকা শহরের একজন শিক্ষার্থীর যত এক্সেস আছে চর এলাকার একজন শিক্ষার্থীর সেইটা নেই। কিন্তু তারও একটা সুবিধা রয়েছে, সেখানে করোনার ততটা প্রকোপ নেই।  সেই বিষয় ও বাস্তবতাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্কের মধ্যে আনতে পারি। ’

মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকের ইন্টার‌্যাকশনের সুযোগ রেখেছিলাম। সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছি। অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। সেটি বন্ধ করেছি। একজন শিক্ষক যেনও প্রতিটি শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে তার একটি ফ্রেমওয়ার্ক আমরা তৈরি করছি। ’

এলাকাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সংলাপে আলোচকরা বলেন, ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’র মত নিয়ে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করতে হবে।  আঞ্চলিক কমিটি জাতীয় কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কোন এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে। করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তাব উঠে আসে গণস্বাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত সংলাপে।

সম্প্রতি ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিট ‘র সদস্য অধ্যাপক ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আমার মনে হয় আগামী তিন মাসের আগে করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল অবস্থায়  আসবে না।’

এই পরিস্থিতিতে আগামী ২৩ মে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।  এসব পরিস্থিতিতে ‘করোনা বিপর্যস্ত শিক্ষা : কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক ভার্চুয়াল শিক্ষা সংলাপে বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্ব পায়।

উল্লেখ্য, গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় তা বড়িয়ে আগামী ২২ মে পর্যন্ত প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়।  তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা সিদ্ধান্ত রয়েছে আগামী ২৪ মে। আর হলগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে ১৭ মে। 

/এসএমএ/এমআর/
সম্পর্কিত
শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ
সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন: শিক্ষা উপদেষ্টা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সোশ্যাল থিংকিং রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান তামিজী, সেক্রেটারি হামিদা
সর্বশেষ খবর
হত্যা মামলায় কারাগারে এনসিপি নেতা, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 
হত্যা মামলায় কারাগারে এনসিপি নেতা, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 
৩ সমন্বয়ককে পিটিয়ে আহত করলেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা
৩ সমন্বয়ককে পিটিয়ে আহত করলেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা
মুম্বাইয়ের ছয় ম্যাচের জয়যাত্রা থামিয়ে গুজরাট শীর্ষে
মুম্বাইয়ের ছয় ম্যাচের জয়যাত্রা থামিয়ে গুজরাট শীর্ষে
এনসিপির রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটি গঠন
এনসিপির রাজনৈতিক লিয়াজোঁ কমিটি গঠন
সর্বাধিক পঠিত
প্রাথমিকে আরও একটি অধিদফতর হচ্ছে
প্রাথমিকে আরও একটি অধিদফতর হচ্ছে
ঈদুল আজহায় ছুটি ১০ দিন, দুই শনিবার খোলা থাকবে অফিস
ঈদুল আজহায় ছুটি ১০ দিন, দুই শনিবার খোলা থাকবে অফিস
৩০ পেরোনোর পর বলিরেখা আটকাতে এই ৫ টিপস মেনে চলা জরুরি
৩০ পেরোনোর পর বলিরেখা আটকাতে এই ৫ টিপস মেনে চলা জরুরি
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আসছে নতুন আইন
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আসছে নতুন আইন
শব্দচয়ন ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’, হেফাজতের দুঃখপ্রকাশ
শব্দচয়ন ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’, হেফাজতের দুঃখপ্রকাশ