X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১
পরিবহন শ্রমিকের ক্ষোভ

সমিতির কেউ আমাদের খোঁজ রাখেনি

রিয়াদ তালুকদার
১৪ মে ২০২১, ১১:০৮আপডেট : ১৪ মে ২০২১, ১১:০৮

‘আল্লাহর ওপর ভরসা করে বেঁচে আছি। দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল বন্ধ, কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করছি; এ বিষয়ে দেখভালের জন্য মালিক-শ্রমিক সমিতির কেউ আমাদের খোঁজখবর রাখেনি। আর কোন ত্রাণ পাওয়া তো দূরের কথা। কিছুই জুটেনি আমাদের।’

ক্ষোভ নিয়ে শুক্রবার (১৪ মে) সকালে গাবতলি বাস টার্মিনালে দিগন্ত পরিবহনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হেলপার কথাগুলো বলছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের ঈদ বলে কিছু নেই। কবে পরিবহন চালু হবে, সে প্রতীক্ষায় রয়েছি।

অভিমান নিয়ে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় দূরপাল্লার বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। এই করোনা মহামারির সময় বিশেষ করে দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রয়েছে। পরিবহন বন্ধ থাকার ফলে আমরা পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছি। সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাদের কোন খোঁজ নেয়নি। কোন ধরনের সহায়তা বা সাহায্য পাওয়া তো দূরের কথা। আর যেসব সহায়তা বা সাহায্য বিভিন্ন সময় দেয়া হয়েছে, তা সাধারণ শ্রমিকরা পায়নি। যারা সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে চলাফেরা করে তারাই এগুলো পেয়েছে।

বিভিন্ন সময় চাঁদা এবং কল্যাণ ফান্ডের জন্য যে টাকা নেওয়া হয় তা শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা কী করেন সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, আমাদের কাছ থেকেই ভবিষ্যতে সহায়তার জন্য চাঁদা নেওয়া হয়। কিন্তু বিপদের সময় সেই চাঁদার কিংবা কল্যাণ ফান্ডের কোন সহযোগিতা আমি পাইনি।

আরেকজন শ্রমিক বলেন, আমার এক মেয়ে। লকডাউন শুরুর পর থেকে কাজ ছাড়া রয়েছি। অনেক কষ্টে সংসার চালাচ্ছি। শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের কাছে গিয়েছিলাম, তারা শুধু আশাই দিয়েছেন। কাজ না থাকায় লোকজনদের কাছে চেয়ে চেয়ে পরিবারের জন্য খাবার জোগাড় করতে হচ্ছে। আমাদেরকে ডাকা হয়েছে আজ মালিকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সেজন্য। শ্রমিকদেরও ডাকা হয়েছে, তাই আমরা এসেছি।

গাবতলি বাস টার্মিনালে স্পেশাল পরিবহন সিটিং সার্ভিস’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক হেলপার বলেন, বর্তমানে খুবই সংকটে রয়েছি। শুধু পাওয়ার মধ্যে কয়েক দিন আগে উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলামের পক্ষ থেকে তিন কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি পেঁয়াজ আর তেল পেয়েছিলাম। এছাড়া শ্রমিক সংগঠন কিংবা মালিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে কোনকিছুই সহায়তা আমরা পাইনি।

ক্ষোভ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনে দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ থাকায় আমিসহ আরও কয়েকজন আমাদের পরিবহনগুলোর দেখাশোনা করছি। প্রতিদিন ১২০ টাকা করে পাচ্ছি। যা দিয়ে তিন বেলা খেয়ে কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে না খেয়েও থাকতে হয়। বিভিন্ন সময় চাঁদা এবং কল্যাণ ফান্ডের টাকা থেকে কোন সহায়তা আমরা পাইনি। যদি কেউ কিছু বলতে যায়, তাকে টার্মিনাল ছাড়া করে দেওয়া হয়। এজন্য ভয়ে সবাই চুপ থাকে। আমার মত অনেকেই কোন ধরনের সহায়তা পায়নি শ্রমিক কিংবা মালিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। না পেয়েও তারা চুপ থাকতে বাধ্য হচ্ছে চাকরি যাওয়ার ভয়ে।

একদিকে পেটের ক্ষুধা, অন্যদিকে সহায়তা না পাওয়ার যন্ত্রণায় কুরে কুরে খাচ্ছে সাধারণ পরিবহন শ্রমিকদের। মালিকরা শুধু নিজেদের স্বার্থ দেখেন। শ্রমিকদেরকে তারা ব্যবহার করছেন এমন অভিযোগও করেন অনেকেই। তবে সবাই চুপ থাকেন যদি কিছু বললে চাকরি চলে যায়।

 

/আরটি/এনএইচ/
সম্পর্কিত
বাড্ডায় নারীর মরদেহ উদ্ধার
জমি নিয়ে বিরোধ, বৈদ্যুতিক শকে চাচাতো ভাইকে ‘হত্যা’
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
সর্বশেষ খবর
কৃষকের মুখে হাসি কপালে চিন্তার ভাঁজ
কৃষকের মুখে হাসি কপালে চিন্তার ভাঁজ
টিভিতে আজকের খেলা (৫ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৫ মে, ২০২৪)
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
বরিশালে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক থ্রি-হুইলার ভাংচুর
বরিশালে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক থ্রি-হুইলার ভাংচুর
সর্বাধিক পঠিত
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ
মিল্টন সমাদ্দারের তিন মামলার বাদীরই মুখে কুলুপ