জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার প্রিন্স সদরুদ্দিন আগা খানের সঙ্গে কথা বলছিলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি কলকাতা থেকে এইদিন সকালে ঢাকা পৌঁছান এবং গণভবনে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে এক ঘণ্টারও বেশি সময় কথা বলেন।
এ সময় গণভবনে অপেক্ষমান সাংবাদিকরা আগা খানের সফরের উদ্দেশ্য ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুললে তিনি ‘কাজ আছে’ বলে এড়িয়ে যান। এর আগে সকালে ঢাকা পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন ও পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে দেখা করেন।
বাংলাদেশকে আপস করতে বলব না
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রশ্নে আপস করার জন্য বাংলাদেশকে রাজি করানোর কোনও ইচ্ছে ভারতের নেই। অস্ট্রেলীয় ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইন্দিরা গান্ধী বলেন, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে অনেকখানি ছাড় দিয়েছে। আগে স্বীকৃতি দিতে হবে সে শর্ত বাদ দিয়েছে, একটা সমঝোতার মনোভাব দেখিয়েছে। পাকিস্তান এসব উদ্যোগে সাড়া দেয়নি।
ইন্দিরা গান্ধী আরও বলেন, উপমহাদেশে বর্তমান অচলাবস্থা দূর করতে ভারত সবকিছুই করেছে। অথচ পাকিস্তান সিমলা চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে। তিনি বলেন, ‘ভারত অচলাবস্থা দূর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। তবে আমাদের মনে হচ্ছে যুদ্ধবন্দিদের সম্পর্কে অনেকেই বলেছেন, কিন্তু পাকিস্তানে যেসব বাঙালি রয়েছেন তাদের সম্পর্কে তারা মোটেও উদ্বিগ্ন নন।’
আটক বাঙালিদের উদ্ধারে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন
পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের উদ্ধারে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট বিপ্লবী সংগীতশিল্পী ডিন রিড। তিনি বলেন, পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন শুরু করবেন।
এইদিন সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘরোয়া পরিবেশে কথা বলছিলেন তিনি। সদ্য সমাপ্ত এশীয় শান্তি সম্মেলনে যোগদানের জন্য ঢাকায় আসেন তিনি। এইদিনের খবরে বলা হয়, মার্কিন বিপ্লবী শিল্পী যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণাত্মক পররাষ্ট্রনীতির কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি এশিয়াসহ বিশ্বের শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে বলেন, সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহ উৎখাত না হওয়া পর্যন্ত শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সমালোচনা করে তিনি অবিলম্বে যুদ্ধবন্ধের উদ্দেশ্যে জনমত সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
যুদ্ধাপরাধের বিচারের অধিকার বাংলাদেশের আছে
ভারতের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভি কে কৃষ্ণ মেনন বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক অভিমত বাংলাদেশের অনুকূলে। তিনি বলেন, তারা (পাকিস্তানি সেনারা) বাংলাদেশে সব ধরনের অপরাধ করেছে। এমনকি শিশুরাও নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি।
খবরে বলা হয়, ঘরোয়া বৈঠকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন তিনি। এর আগে ডিইউজে-এর সভাপতি নির্মল সেন ও সাধারণ সম্পাদক জনাব গিয়াস কামাল চৌধুরী তাকে স্বাগত জানান। বাংলাদেশ সাংবাদিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান কে জি মোস্তফা এই বিশিষ্ট অতিথিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।