দিনাজপুরের বিরামপুরে খাদ্য গুদামে বোরো ধান দেওয়ার ভুয়া বিল দিয়ে ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা ভেস্তে দিয়েছে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় রোববার (০৬ জুন) খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) রবিউল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বিরামপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গুদামে ধান দিয়েছেন উল্লেখ করে ৮১ হাজার টাকা উত্তোলনের জন্য একেএম জাকিউল কবিরের নামে গত ১ জুন সোনালী ব্যাংকে ভুয়া বিল জমা দেন রেজাউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। ব্যাংক ব্যবস্থাপক লক্ষ্য করেন, বিলের যে সিরিয়াল নম্বরের সঙ্গে খাদ্য গুদামের দেওয়া সিরিয়াল নম্বরের মিল নেই। ব্যাংক ম্যানেজার এর কারণ জানতে চাইলে রেজাউল ইসলাম কৌশলে সেখান থেকে চলে যান।
ব্যবস্থাপক তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। খাদ্য কর্মকর্তা ধান সংগ্রহ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানান।
সোনালী ব্যাংকের বিরামপুর শাখার ব্যবস্থাপক শ্রী হরি চন্দ্র বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বিরামপুরের সাবেক এক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি গত ১ জুন ব্যাংকে এসে জানান, একেএম জাকিউল ইসলামসহ তাদের কয়েকটি বিল আসবে। এসব বিলের অর্থগুলো যেন দ্রুত ছাড় দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের কয়েকজন জানান, বিরামপুরে একটি চক্র দীর্ঘদিন থেকে ভুয়া বিল দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে আসছে। ইতোপূর্বেও বিরামপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি কোনও ভুয়া বিল জমা দেননি। খাদ্য গুদামে ধান দেওয়ার জন্য লটারিতে একেএম জাকিউল কবিরের নাম উঠেছিলো। তাই তিনি জাকিউল কবিরের হয়ে বিল জমা দিতে গিয়েছিলেন।
বিরামপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সরকারিভাবে ধান কেনার জন্য কৃষক বাছাইয়ে যে লটারি হয়েছে, সেখানে একেএম জাকিউল ইসলামের নাম নেই।
খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করার বিষয়টি মোস্তাফিজুর রহমান স্বীকার করলেও কোন ঘটনায় করা হয়েছে তা তিনি উল্লেখ করেননি।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বিষয়টি জানার পর গত ৩ জুন তিনি ভুয়া বিল জমাদানকারী রেজাউল ইসলামকে তার কার্যালয়ে ডাকেন। রেজাউল ইসলাম ইউএনওকে জানান, বিরামপুর খাদ্য গুদামের ওসি-এলএসডি রবিউল ইসলামের শ্যালক এসব বিল দিয়েছেন। এ চক্রের সঙ্গে আরও যারা জড়িত রয়েছেন তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। জড়িত সবার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।