রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় গত ৮ দিনে করোনায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৪৭২জন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. আহাদ আলী। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, রংপুরে এখন পর্যন্ত ভাইরাসটিতে ৪১৯ জন মারা গেছেন। এ বিভাগে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন দিনাজপুর জেলায় ১৫২ জন, এরপর রয়েছে রংপুর; ১০১ জন। গত ৮ দিনে যে ২৭ জন মারা গেছে তাদের মধ্যে দিনাজপুরে ১০, ঠাকুরগাঁওয়ে ৫, কুড়িগ্রামে ৪, লালমনিরহাটে ৫ এবং রংপুরের ৪ জন রয়েছেন।
বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুরে এ পর্যন্ত এক লাখ ৩৫ হাজার ৬৪১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে রংপুর জেলায় ৪০ হাজার ৭১৩, পঞ্চগড়ে ৫ হাজার ৬০৩ জন, নীলফামারীতে ১২ হাজার ২২১, লালমনিরহাটে ৬ হাজার ২৬৬, কুড়িগ্রামে ৭ হাজার ৮০২ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৯ হাজার ৭৯০, দিনাজপুরে ৪৪ হাজার ১৩ এবং গাইবান্ধায় ৯ হাজার ২৩৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১৯ হাজার ৪৭৩ জন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে দিনাজপুরে ৬ হাজার ২১; এর পরে রয়েছে রংপুর জেলায় ৫ হাজার ১০৫ জন। এছাড়া পঞ্চগড়ে ৮৪৪, নীলফামারীতে ১ হাজার ৫৯৩, লালমনিরহাটে ১ হাজার ১১৬, কুড়িগ্রামে ১ হাজার ২৫৭, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ হাজার ৭৬০ এবং গাইবান্ধায় ১ হাজার ৭৮২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৯৬১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৮ হাজার ৪৬ জন।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর বিভাগীয় সহকারী পরিচালক ডা. জাকিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দিনাজপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি। সেখানে আক্রান্তের হার ৩৪ ভাগ এবং রংপুরে ২০ ভাগের কাছাকাছি। তবে সীমান্তবর্তী জেলা হিসেবে দিনাজপুর ছাড়াও কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে ইদানীং আক্রান্ত বাড়ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ভারত থেকে বৈধভাবে আসা বাংলাদেশি নাগরিকরা সাধারণত লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আসছেন। আসার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। ভারত থেকে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ১৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ পাওয়ায় সেগুলো ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ কর্মকর্তা আরও জানান, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় ট্রাকে করে বিভিন্ন মালামাল আমদানি করা হয়। এসব ট্রাকে ভারতীয় ড্রাইভার ও হেলপারদের জিরো লাইনের ভেতরে আসতে না দেওয়াসহ তাদেরও শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভাগীয় পরিচালক ডা. আহাদ আলী জানান, রংপুর মহানগরীতে করোনা রোগীদের জন্য ১০০ বেডের একটি স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন, আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর আছে। রংপুর ও দিনাজপুরে ১৮টি সিসিইউ বেড রয়েছে। এটা আরও বৃদ্ধি করা এবং রংপুর ও দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।