জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা ডাকাত নুর আলমকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) দুদক সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দত্ত বাদী হয়ে চট্টগ্রামের দুদক সমন্বিত কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে রোহিঙ্গা ডাকাত নুর আলমকে জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে কাউন্সিলর সরফরাজসহ ছয়জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আজ এই ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- চসিক ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা সরফরাজ কাদের রাসেল, চসিকের জন্ম নিবন্ধন সহকারী মো. ফরহাদ হোসাইন, সাবেক পাঁচলাইশ নির্বাচন কার্যালয়ের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও বর্তমান সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে কর্মরত মোহাম্মদ শাহজামাল, পাঁচলাইশ নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ, একই অফিসের প্রুফ রিডার (অস্থায়ী) উৎপল বড়ুয়া ও রন্তু বড়ুয়া।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন নুর আলম। ওই সময় জানা যায়, তার বাংলাদেশি জাতীয়তার সনদ ছিলো। ২০১৬ সালে তিনি ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। নুর আলম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে ভোটার হলেও ২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বর্তমান কাউন্সিলর মোবারক আলী জানিয়েছেন, নুর আলম কখনও এই এলাকায় বসবাস করার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
স্থায়ী ঠিকানায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি এলাকার নাম উল্লেখ থাকলেও ওই এলাকায় গিয়ে এই নামে কারও পরিচয় পাওয়া যায়নি। তদন্তে উঠে আসে, নুর আলম ও তার স্ত্রী নুর কাইয়াস বেগম রোহিঙ্গা হওয়ার সত্ত্বেও চসিক ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সরফরাজ কাদের রাসেল ও চসিকের জন্ম নিবন্ধন সহকারী মো. ফরহাদ হোসাইন জন্ম সনদ প্রদান করেন। এরপর ওই জন্ম সনদ দিয়ে তৎকালীন পাঁচলাইশ থানার ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মোহাম্মদ শাহজামাল, পাঁচলাইশ নির্বাচন অফিসের প্রুফ রিডার (অস্থায়ী) উৎপল বড়ুয়া, একই অফিসের প্রুফ রিডার (অস্থায়ী) রন্তু বড়ুয়া ও সাবেক থানা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখের সহায়তায় এ রোহিঙ্গা দম্পতি ভোটার হন।