লকডাউন ও কঠোর বিধিনিষেধের পরেও রাজশাহী অঞ্চলে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ কমছে না। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চার জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। এদের ছয় জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। বাকিরা করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা মারা যান। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর তিন জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয় জন, নাটোরের তিন জন এবং নওগাঁর একজন রয়েছেন। এ নিয়ে গত ২১ দিনে (১ জুন সকাল থেকে ২১ জুন সকাল ৮টা পর্যন্ত) রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ২১৬ জন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেছেন ১১২। বাকিরা মারা যান উপসর্গ নিয়ে। এদের নমুনা পরীক্ষার পর দুই-একজন ছাড়া সবারই করোনা পজিটিভ এসেছে।
রাজশাহী মেডিক্যালে করোনায় মারা যাওয়াদের বেশিরভাগই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার শামীম ইয়াজদানী বলেন, মৃতদের বেশিরভাগেরই চিকিৎসাকালে অবস্থা খারাপ থাকছে। তাদের শারীরিক সমস্যা গতবছরের করোনার লক্ষণের চেয়ে আলাদা।
হাসপাতালে গ্রামের রোগী বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা রোগীর ৪০ শতাংশই গ্রামাঞ্চলের। কারণ হিসেবে আমরা দেখছি- গ্রামের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি কম মানা, অবাধে সব জায়গায় চলাচল, মাস্ক না পরাসহ অন্য কারণে সংক্রমণ ও অসুস্থ হয়ে ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬২ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৪৫ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯, নাটোরের ৩, নওগাঁর ৩, পাবনা ও জয়পুরহাটের একজন করে রোগী রয়েছেন। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩৪ জন।
হাসপাতালে সোমবার সকাল পর্যন্ত ৩০৯ বেডের বিপরীতে মোট ভর্তি রোগী আছেন ৪০২ জন। এরমধ্যে রাজশাহীর ২৬৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৭০, নাটোরের ৩০, নওগাঁর ২৯, পাবনার পাঁচ, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার দুই জন করে রোগী রয়েছেন। এছাড়া আইউসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ১৯ জন।