গাজীপুরের লবলং খাল। কোনোদিন যাত্রীবাহী জলযান চলতে দেখা যায়নি এতে। বর্ষাকালে তিন মাস পানি থাকে ঠিকই, তবে তাতে বড় জলযান চলার কথা নয়। অথচ ওই খালের সড়কঘাটা বাজার অংশে উত্তরবঙ্গ থেকে কমপক্ষে ২৫টি ট্রলার এসে ভিড়েছে। মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকাল থেকেই যাত্রী ওঠানো হচ্ছে এগুলোতে। একটি একটি করে ছেড়ে যাচ্ছে পাবনা ও সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে। যাত্রীরাও বাড়ি যাচ্ছেন নির্বিঘ্নে।
সড়কঘাটা বাজারের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘রবিবার এলাকার কিছু কারখানায় ছুটি হয়েছে। ওইদিন থেকেই সড়কঘাটা বাজার থেকে যাত্রীবাহী ট্রলার উত্তরবঙ্গে ছেড়ে গেছে। প্রতিদিন আসছে-যাচ্ছে। রবিবার থেকে দিনে কমপক্ষে ২০টি ট্রলার যাতায়াত করছে।’
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে আসা ট্রলারচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘গত তিনবছর ধরে বর্ষা মৌসুমে তারা গাজীপুরের লবলং খালের সড়কঘাটা বাজারে ট্রলার নিয়ে আসেন। এবার জ্যাম এড়াতে ট্রলারে ছুটে আসছেন উত্তরবঙ্গের যাত্রীরাও। বাড়তি আয় করতে পেরে ট্রলার মালিকও খুশি।’
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের উদ্দেশ্যে ট্রলাড়ে চড়েছেন সোহাগ আলী। তিনি গাজীপুরের একটি কারখানায় চাকরি করেন। গাড়িতে গেলে ঈদের আগে পৌঁছাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল তার। তাই ট্রলারে চেপে বসলেন। জানালেন, ট্রলার-যাত্রা কিছুটা স্বস্তিদায়কও। যানজট নেই। খাল অগভীর বলে এ ভ্রমণ নিরাপদও।
গাজীপুরের মন্ডল টেক্সটাইলে চাকরি করেন হারুন অর রশীদ। বাড়ি পাবনার বেড়া উপজেলায়। তিনি বলেন, ‘এবার ঘরমুখো মানুষের চাপ বেশি। লবলং খালে পানি থাকলে মাঝেমধ্যে ট্রলারে যাতায়াত করেন। তিনবছর এভাবেই চলছেন। উত্তরবঙ্গের জন্য নদীপথের পরিকল্পনা করা গেলে মানুষের দুর্ভোগ কমতো।’
ট্রলারচালক নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি প্রায় আড়াই শ’ যাত্রী নিয়ে সিরাজগঞ্জের ইনুদপুর, কৈডুরি, জামিরদিয়া, জৈমুশা এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। নদীপথে যাতায়াতে কোথাও চাঁদাও দিতে হয় না। লবলং খাল, তুরাগ নদ, যমুনার নদীপথে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌঁছাতে আট থেকে ১০ ঘণ্টা লাগে বলে জানান তিনি।
পাবনার সুজানগর থেকে ট্রলার নিয়ে আসা কিসমত আলী বলেন, ঈদের পরও তারা যাত্রী নিয়ে আসবেন। ঈদের আগে ও পরে লবলং খালের সড়কঘাটায় মোট আট থেকে দশ দিন তারা যাতায়াত করতে পারেন। সাধারণত দুই শ’ যাত্রী ধারণ করার মতো ট্রলারগুলো লবলং খালে আসা-যাওয়া করে।