দিনাজপুরের হিলিতে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। যে দামে চামড়া কিনেছেন তার চেয়ে কমে বিক্রি করছেন তারা। বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সকালে হিলির মুন্সিপট্টির আড়তে চামড়া বিক্রি করতে আসা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী এনামুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গিয়ে চামড়া কিনে বাজারে বিক্রি করি। এটি আমার পেশা। প্রতি বছরের মতো এবারও লাভের আশায় চামড়া কিনেছি। কিন্তু যে দামে চামড়া কিনেছি তার চেয়ে কমে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যে গরুর চামড়া ১৬০-১৮০ টাকায় কিনেছি এখন সেটি ১২০-১৩০ টাকা বিক্রি করছি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কীভাবে চলবো। বিভিন্ন অজুহাতে চামড়ার সঠিক দাম দিচ্ছেন না আড়তদাররা। এ নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই।’
চামড়া বিক্রি করতে আসা সেলিম হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা গ্রাম থেকে চামড়া কিনি। গত বছর ২০০-২৫০ টাকায় চামড়া কিনে ৩০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এবারও ওই দাম ধরেই কিনেছি। এর মধ্যে শুনেছি, চামড়ার দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু এখন বিক্রি করতে এসে দেখি ১৫০ টাকার ওপরে চামড়া কিনছেন না আড়তদাররা। গুনতে হচ্ছে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘গরুর চামড়া এই দামেই বিক্রি করছি। কিন্তু ছাগলের চামড়া কেউ কিনতে চায় না। শেষে ১০ টাকা দরে এক আড়তে দিয়েছি। ঈদের দিন ১০ হাজার টাকার চামড়া কিনে বিক্রি করলাম আট হাজার টাকা। দুই হাজার টাকা শেষ। সারাদিনের পরিশ্রম ব্যথা। এভাবে প্রত্যেক বছর লোকসান দিলে চামড়ার ব্যবসা ছাড়তে হবে।’
মুন্সিপট্টির চামড়া ব্যবসায়ী স্বপন মুন্সি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত বছর যে চামড়া মোকামে পাঠিয়েছি তার টাকা এখনও পাইনি। এরপরও চামড়া কিনে মোকামে পাঠানোর চেষ্টা করছি। কারণ চামড়া না দিলে আগের টাকা দেবে না। সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া কিনছি। প্রতি গরুর চামড়া আকারভেদে ২০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত কিনছি। ছাগলের চামড়া ১০-২০ টাকা পর্যন্ত কিনেছি। ছাগলের চামড়া কেউ কিনতে চায় না। শ্রমিকের মূল্য আগের তুলনায় বেশি ও বস্তাপ্রতি লবণের দাম ৫০ টাকা করে বেড়ে যাওয়ায় বেশি দামে চামড়া কেনা যায় না। শুক্রবার (২৩ জুলাই) থেকে আবার কঠোর লকডাউন। চামড়া কিনে কি করবো বুঝতে পারছি না। যদি লকডাউনে চামড়া বিক্রি করতে না পারি তাহলে মারা যাবো।’