X
রবিবার, ০৫ মে ২০২৪
২২ বৈশাখ ১৪৩১

রংপুরে প্রথম ত্বীন চাষ, সাত মাসে লাখ টাকা আয়

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর 
২৫ জুলাই ২০২১, ১৩:০৬আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২১, ১৩:০৬

মরু অঞ্চলের জনপ্রিয় ফল ত্বীন চাষে রংপুরের তরুণ উদ্যোক্তা দুই সহোদর সাফল্য পেয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে স্বল্প সময়ে পুষ্টি ও ওষুধিগুণ সম্পন্ন এ ফলের চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন তারা। ফল ও চারা বিক্রি করে তারা সাত মাসে লাখ টাকার ওপরে আয় করেছেন। তবে দেশে অপ্রচলিত এ ফলের সঠিক দাম পেতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি করেছেন ত্বীন ফল চাষি দুই ভাই।

জানা যায়, রংপুরে প্রথমবারের মতো ডুমুর সদৃশ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এ ফলের চাষ হয়েছে মিঠাপুকুর উপজেলার শাল্টিগোপালপুরে। তরুণ উদ্যোক্তা ইনাম হাসান রাহাত ও তার বড় ভাই আসিফ হাসান রাতুল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তিনশ’ চারা দিয়ে ৩৩ শতাংশ জমিতে ত্বীনের আবাদ শুরু করেন। রোপণের তিন মাসের মাথায় শুরু হয় ফল সংগ্রহ। এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার টাকা ব্যয় করে সাত মাসের মধ্যে লাভের মুখ দেখেছেন তারা। বিষমুক্ত উপায়ে ত্বীন উৎপাদনে বাগানে ব্যবহার করা হচ্ছে জৈব বালাইনাশক। করোনা পরিস্থিতিতে এলাকার কর্মহীন হয়ে যাওয়া ছয় জন শ্রমিকও এ বাগানে নিয়মিত কাজ করছেন।

তরুণ উদ্যোক্তা ইনাম হাসান রাহাত জানান, সৌদি আরবসহ মরু অঞ্চলে পবিত্র ফল হিসেবে ত্বীনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ডুমুর সদৃশ এই ত্বীন ফল যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টি সমৃদ্ধ। মুসলিম অধ্যুষিত মরু অঞ্চলে এই ফল পবিত্র হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়। এ ফল ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করেন মরু অঞ্চলের মানুষ। 

রাহাত বলেন, মরু অঞ্চলের এই পবিত্র ফলের অনেক গল্প শুনেছি। এরপর সৌদি আরব থেকে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করি। দুই ভাই মিলে নিজেদের ৩৩ শতক জমিতে শুরু করি ত্বীন চাষ। আমাদের এলাকা বালুময় না হলেও লালমাটি সমৃদ্ধ এলাকা। প্রথমদিকে ভেবেছিলাম হয়তো এখানে এই ফলের চাষ ভালো হবে না। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই ত্বীন ফলের গাছ পুষ্ট হয়ে বড় হতে থাকে। ছয় মাসের মধ্যে সেই গাছে ত্বীন ফল আসে। দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের ডুমুর ফল মনে হলেও গোলাপী রঙ ধারণ করা এক একটি ত্বীন ফল খেতে বেশ সুস্বাদু।

ত্বীন ফলের চাষের কথা জানাজানি হওয়ায় দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন ফলের গাছ দেখতে। অনেকেই ত্বীন চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।

রাহাতের বড় ভাই রাতুল বলেন, আমরা ফল বিক্রির পাশাপাশি বাগান থেকে উচ্চমূল্যে চারা বিক্রি শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ফল ও চারা বিক্রি করে লাখ টাকারও বেশি আয় হয়েছে বলে জানান তারা। 

রাতুল বলেন, এখন পর্যন্ত বাগান তৈরি ও ফল উৎপাদনে আসতে ৭০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রতিকেজি ফল ৮০-১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে চারা বিক্রি করে ৭০ হাজার টাকার বেশি আয় করেছি। তিন মাস পর পর ফল আসে। এছাড়া চারা বিক্রি করেও ভালো লাভ হচ্ছে। তবে অপ্রচলিত এ ফলের দেশীয় চাহিদা সৃষ্টি হলে আরও ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। এ জন্য তিনি সরকারি সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতার কথা বলেন।  

তিনি আরও জানান, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ত্বীন ফলের চাষ করা হলে লাভবান হওয়া যাবে। তারা দুই ভাই আরও জমিতে ত্বীন চাষ করে স্বাবলম্বী হতে চান। ফল বিক্রির পাশাপাশি চারা বিক্রি করে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ত্বীন ফলের চাষ ছড়িয়ে দিতে চান।  

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফজালুল হক জানান ত্বীন ফল মরু অঞ্চলে ব্যাপক জনপ্রিয় ও পবিত্র ফল হিসেবে পরিচিত। এর ওষুধিগুণও অনেক। এ ফলের বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষাবাদ করলে অনেক অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। একইসঙ্গে যেহেতু এ ফলের বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চাহিদা রয়েছে সে কারণে ত্বীন ফল চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। 

/টিটি/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (৫ মে, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (৫ মে, ২০২৪)
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
দুবাইতে বিশ্বের ২৩ নম্বর চীনের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
বরিশালে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক থ্রি-হুইলার ভাংচুর
বরিশালে পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, অর্ধশতাধিক থ্রি-হুইলার ভাংচুর
জিরোনার মাঠে বার্সেলোনার নাটকীয় হারে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
জিরোনার মাঠে বার্সেলোনার নাটকীয় হারে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল
সর্বাধিক পঠিত
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
জাল দলিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ!
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
রবিবার থেকে স্কুল-কলেজ খোলা, শনিবারও চলবে ক্লাস
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
মাঠ প্রশাসনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের লাগাম টানবে সরকার
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
স্বর্ণের ভরিতে বাড়লো ১ হাজার টাকার বেশি
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ
লিথুয়ানিয়ার ড্রোন হামলা ব্যর্থ হয়েছে: বেলারুশ