রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ও উপসর্গে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জুলাইয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৫৬৬ জনে। রামেক হাসপাতালে এক মাসে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু। শনিবার (৩১ জুলাই) সকালে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে করোনায় পাঁচ ও উপসর্গে আট জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে রাজশাহীর তিন, নাটোরের এক, চাঁপাইনবাগঞ্জের এক, পাবনার পাঁচ ও নওগাঁর তিন জন। আর সাত জন পুরুষ ও ছয় জন নারী। মৃতদের মধ্যে চার জনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। অন্যদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছয় জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে দুই জন ও ১১ থেকে ২০ বছর বয়সের মধ্যে এক জন।
শামীম ইয়াজদানী আরও জানান, জুলাই মাসে (১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই সকাল পর্যন্ত) মৃত ৫৬৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ১৮৪ জন মারা গেছেন। আর শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর নমুনা পরীক্ষার আগেই মারা গেছেন ৩৪৪ জন। বাকি ৩৮ জন করোনা পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
এর আগে গত মাসে (জুন) রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪০৫ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে করোনা শনাক্তের পর মৃত্যু হয় ১৮৯ জনের। অন্যরা করোনার উপসর্গ নিয়ে নমুনা পরীক্ষার আগেই মারা যান। এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৭, মার্চে ৩১, এপ্রিলে ৭৯ ও মে মাসে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রামেক হাসপাতালের গত বছরে জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ১১১ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া গত বছরের মে মাসে পাঁচ, জুনে ৩৭, আগস্টে ৯৭, সেপ্টেম্বরে ৫০, অক্টোবরে ২৮, নভেম্বরে ৩১ ও ডিসেম্বরে ৩৪ জন মারা যায়।
শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন ৪৮ জন। একই সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩২ জন। শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ৫১৩ শয্যার বিপরীতে ৪৩৩ জন ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ১৯ জন আইসিইউতে রয়েছেন।
করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে ১৮৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৭৮ জন। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া করোনা পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ৬৭ জন।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার রাতে দুইটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ২৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। বৃহস্পতিবার ছিল ২২ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এছাড়া বুধবার ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ, মঙ্গলবার ২২ দশমিক ৭৬ শতাংশ, সোমবার ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ, রবিবার ৩০ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং গত শনিবার ছিল ৪৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।