সোনাইমুড়ী উপজেলার আমিশাপাড়া ইউনিয়নের আবিরপাড়া এলাকার মো. আব্দুল্যাহ আল নাফিজ (৮) হত্যার রহস্য ৮ ঘণ্টার মধ্যে উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সৎ মাকে গ্রেফতার করে আদালতে উপস্থিত করা হলে নিজের দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বালিশ, একটি কাঁথা ও এক বোতল ভিক্সল উদ্ধার করা হয়েছে। পারিবারিক দ্বন্দ্ব ও কলহের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে সোনাইমুড়ী থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম (পিপিএম)। গ্রেফতার নূরজাহান আক্তার নুপুর (২২) মামলার বাদী আজগর বেপারী বাড়ির মো. ওমর ফারুকের (৩৩) দ্বিতীয় স্ত্রী।
পুলিশ সুপার জানান, শনিবার (৭ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে যেকোনও এক সময়ে নূরজাহান আক্তার নুপুর তার স্বামীর আগের ঘরের শিশু সন্তান মো. আব্দুল্যাহ আল নাফিজকে হত্যা করেছেন। খবর পেয়ে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাইমুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহমেদ রবিবার (৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় নিহতের সৎ মা নুপুরকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। থানায় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নুপুর জানান তিনিই নাফিজকে হত্যা করেছেন।
মো. শহীদুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে নুপুর জানিয়েছেন ফারুকের সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রীর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে নাফিজকে তার বাবা ফারুক নিজের কাছে নিয়ে আসেন। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার কয়েকদিন পর ফারুক নুপুরকে বিয়ে করেন। তবে বিয়ের সময় ফারুক আগের ঘরের সন্তান থাকার তথ্য গোপন করেন। বিয়ের পর থেকেই নুপুর নাফিজকে সহ্য করতে পারতেন না। তাকে কারণে-অকারণে মারধর করতেন। পরবর্তীতে ফারুক তার ছেলেকে উপজেলার আমিশাপাড়া এলাকার এতিমখানায় রেখে লেখাপড়া করাতে থাকেন। ঈদ উল আজহা উপলক্ষ্যে নাফিজ বাড়িতে এলে, নুপুর অকারণে তাকে মারধর ও গালমন্দ করতে থাকেন। পরে, গত শনিবার দুপুরে খাবার খেয়ে নাফিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। দুপুর ৩টায় ফারুক ছেলেকে ঘুম থেকে উঠিয়ে ঘরে থাকার জন্য বলে বেরিয়ে যান। রাত ৯ টায় ফারুক বাড়ি ফিরে বিছানায় ছেলের লাশ দেখতে পান।
খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং নুপুরকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম ও সোনাইমুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিসান আহমেদ।