X
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
৫ চৈত্র ১৪৩০
পর্ব—তিন

সাহিত্যতত্ত্ব : একটি সংক্ষিপ্ত পরিক্রমা

মুহম্মদ মুহসিন
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০৫আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:৫৪

পূর্বপ্রকাশের পর

এরিস্টটলের সাহিত্যতত্ত্ব

এরিস্টটল (৩৮৪ খ্রি. পূ.-৩২২ খ্রি. পূ.) ছিলেন প্লেটোর সবচেয়ে বিখ্যাত ছাত্র। তাঁর জন্ম মেসিদোনিয়ায়। ১৭ বছর বয়সে তিনি এথেন্সে এসে প্লেটোর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। ৩৪৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে প্লেটোর মৃত্যুর পরে তিনি এথেন্স ত্যাগ করেন। ৩৩৫ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে তিনি পুনরায় এথেন্সে ফিরে আসেন এবং তাঁর স্কুল লাইসিয়াম শুরু করেন। ৩২২ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে তিনি লাইসিয়াম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন এবং ঐবছরই ক্যালচিস নামক শহরে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বলতে গেলে জ্ঞানবিজ্ঞানের এমন কোনো শাখা যার ওপর এই ৬২ বছরের জীবনে এরিস্টটল কাজ করেননি। জ্ঞানবিজ্ঞানের এই সকল শাখায় তিনি যে বইগুলো রচনা করেছিলেন সেগুলো হারিয়ে গেছে। যা আছে তা সম্ভবত তার লেখা বই নয়, বরং খুব সম্ভবত তাঁর কাছ থেকে নেওয়া বিভিন্ন লেকচার নোটের সংকলন। ফলে এগুলো প্লেটোর ‘দি রিপাবলিক’-এর মতো সুলিখিত নয় এবং সাহিত্যগন্ধীও নয়। সাহিত্য বিষয়ে ‘পোয়েটিকস’ নামে তাঁর যে বইটি আমাদের কাছে আছে সেটিও সেরকম একটি লেকচার নোটের সংকলন। নোটগুলো তিনি হয়তো তাঁর লাইসিয়ামে লেকচারের জন্য তৈরি করেছিলেন। ফলে গ্রন্থভুক্ত বিষয়গুলোর আলোচনায় সুসংগঠিত পরম্পরা নেই, এবং ক্ষেত্রবিশেষে অনেক অস্পষ্টতা ও দুর্বোধ্যতা রয়েছে। তারপরও এটিই সাহিত্যতত্ত্ব বিষয়ে দুনিয়ার সকল দেশে সবচেয়ে বেশি রেফারেন্স দেওয়ার একটি বই। এরিস্টটলের সাহিত্যতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা মানে হলো এই বইটি নিয়েই আলোচনা।

‘পোয়েটিকস’ গ্রন্থের পরিচ্ছেদগুলোকে তিনটি পর্বে ভাগ করা যায়। পরিচ্ছেদ-১ থেকে পরিচ্ছেদ-৫ পর্যন্ত বিস্তৃত প্রথম পর্বটিকে বলা যেতে পারে গ্রন্থটির সূচনা পর্ব যেখানে মাইমেসিস বা শিল্পের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য অনুকরণের অর্থ ও প্রকরণের আলোচনা রয়েছে। দ্বিতীয় পর্বের বিস্তৃতি পরিচ্ছেদ-৬ থেকে পরিচ্ছেদ-২২ পর্যন্ত। এ পর্বে মাইমেটিক আর্ট বা অনুকরণ শিল্পের একটি রূপ হিসেবে ট্র্যাজেডির গঠন ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা রয়েছে। পরিচ্ছেদ ২৩ থেকে ২৬ পর্যন্ত তৃতীয় পর্বে রয়েছে ট্র্যাজেডির সাথে মহাকাব্যের তুলনা। আমরা এখানে বইটির পরিচ্ছেদ ধরে আলোচনা করব না। আমরা এখানে বরং ‘মাইমেসিস’ বিষয়ে এরিস্টটল ও প্লেটোর ভাবনার পার্থক্য এবং সেই পার্থক্যের সূত্র ধরে এরিস্টটল কর্তৃক সূচিত সাহিত্যবিষয়ক নতুন ভাবনার গতিপথ দেখব।

একথা বহু পণ্ডিত বলেছেন যে, এরিস্টটলের পোয়েটিকস ভিতরে ভিতরে প্লেটোর মাইমেসিস থিয়োরির একটি সমালোচনা এবং মাইমেসিসের বিরুদ্ধে প্লেটোর উচ্চারিত অপবাদগুলোর একটি জবাব। তবে সে জবাব সরাসরি নয়, হয়তো তাতে গুরুনিন্দা হয় বলেই এরিস্টটল সরাসরি প্লেটোর নামও উচ্চারণ করেননি এবং প্লেটোর অপবাদের ধরে ধরে একটি একটি করে জবাবও দেননি।

প্লেটোর আলোচনার মতোই এরিস্টটলও তাঁর আলোচনার কেন্দ্রে রেখেছেন মাইমেসিসকে, তবে মাইমেসিসের কোনো সংজ্ঞা দেওয়ার তিনি প্রয়োজন করেননি। সংজ্ঞা দিলে সে সংজ্ঞা গুরুর ভাবনার প্রতি সরাসরি দ্রোহ রূপে উচ্চারিত হবে সে ভাবনায়ও তিনি মাইমেসিসের সংজ্ঞা না দিয়ে থাকতে পারেন। তবে সংজ্ঞায় না বললেও আলোচনায় এরিস্টটল ধীরে ধীরে স্পষ্ট করেছেন তিনি কীভাবে মাইমেসিস বিষয়ে প্লেটো থেকে আলাদাভাবে ভাবছেন। প্লেটো বারবার বলেছেন যে, মাইমেসিস হলো প্রকৃতিকে এবং প্রকৃত বস্তুকে সত্য ও সঠিক রূপ থেকে ধাপে ধাপে বিকৃত করার একটি প্রয়াস। অথচ এরিস্টটল তাঁর পোয়েটিকসের ৪ নং পরিচ্ছেদে লিখেছেন ‘Poetry in general seems to have sprung from two causes, each of them lying deep in our nature. First, the instinct of imitation is implanted in man from childhood, one difference between him and other animals being that he is the most imitative of living creatures, and through imitation he learns his earliest lessons; and no less universal is the pleasure felt in things imitated.’

আশ্চর্যের সাথে লক্ষণীয় যে এই বাক্যদুটোতে এরিস্টটল যতগুলো অবধারণকে প্রকাশ করেছেন তার সবকটাই প্রায় সরাসরি মাইমেসিস বিষয়ে প্লেটোর অবধারণগুলোকে অস্বীকার করে। প্লেটো বলেছেন মাইমেসিস প্রকৃতিকে তথা প্রকৃত সত্যকে একধাপ বিকৃত করে। তার মানে প্লেটোর মতানুযায়ী মাইমেসিস একটি প্রকৃতিবিরুদ্ধ প্রক্রিয়া। কিন্তু এরিস্টটলের মতে মাইমেসিস প্রকৃতির গভীরে প্রোথিত এবং প্রকৃতির গভীর থেকে উৎসারিত (lying deep in our nature)। এরিস্টটলের মতে অনুকরণের প্রবৃত্তি মানবের জন্ম থেকে অর্জিত। তাই এ প্রবৃত্তি পরিহার্য তো নয়ই বরং এই প্রবৃত্তিই মানুষকে পশুজগতের থেকে আলাদা করেছে, অর্থাৎ এটি মানবজন্মকে মহীয়ান করে তুলতে পারে এমন এক চর্চা। অথচ প্লেটো বলেছিলেন মাইমেসিস বা অনুকরণ মানুষকে অজ্ঞানতার অন্ধকারের দিকে চালিত করে। আরো এক ধাপ এগিয়ে এরিস্টটল বলেছেন অনুকরণ একটি সার্বজনীন নান্দনিক আননন্দের উৎস। প্লেটো বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই অনুভব করতেন যে, তাঁর সুযোগ্য শিষ্য এই অবধারণগুলোর প্রতিটির মধ্যদিয়ে তাঁকে একটি করে চপেটাঘাত করছেন। 

মাইমেসিসকে এভাবে মহীয়ান করে তুলে এরিস্টটল ইহাকে শিল্পের জন্য অপরিহার্য ঘোষণা করলেন। তিনি বললেন শিল্পের যতরূপ আছে সবই আদিতে অনুকরণ। শিল্পের রূপ নির্ধারিত হয় অনুকরণের মাধ্যমের ওপর ভিত্তি করে। অনুকরণের মাধ্যম ভাষা হলে শিল্পরূপটির নাম হয় সাহিত্য, মাধ্যম সুর হলে তার নাম হয় সঙ্গীত, মাধ্যম ছন্দ (rhythm) হলে তার নাম হয় নৃত্য। অনুকরণের মাধ্যমের পরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অনুকরণের বস্তু বা বিষয়টি। অনুকরণের বিয়য়বস্তু মহৎ মানুষের কর্মকাণ্ড হলে নির্মিত হয় মহাকাব্য বা ট্র্যাজেডি আর নিচশ্রেণি বা খল চরিত্রের মানুষের অনুকরণের মধ্যদিয়ে নির্মিত কমেডি। অনুকরণের অন্তর্গত এই সকল বিষয় বিবেচনায় রেখেই মাইমেসিস সম্পর্কে ভাবতে হবে। মাইমেসিসকে ভাবতে হবে অনুকরণের মাধ্যম, বিষয় ও চারিত্র্যের সাথে সংশ্লিষ্ট করে, প্লেটোর ‘ফরম’ সম্পর্কিত মতবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট করে নয় কিংবা মিরর ইমেজের উৎপাদক হিসেবে জ্ঞান করে নয়। ‘ফরম’ সম্পর্কিত প্লেটোর মতবাদের সাথে মেলাতে গেলেই মাইমেসিসের দায় হয়ে পড়ে যে বস্তুকে সে অনুকরণ করছে তার একটি দার্পণিক প্রতিবিম্ব বা মিরর ইমেজ তৈরি করা। কিন্তু মাইমেসিস তার মাধ্যম, বিষয়বস্তু আর চরিত্রগত আচার (manner) দ্বারা এমনভাবে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন একটি বিষয় যে তার দায় পড়েনি বস্তুর দার্পণিক প্রতিবিম্ব তৈরি করা। এভাবে ভাবতে পারলে মাইমেসিসকে মুক্ত করা যাবে প্লেটোর আরোপিত অপবাদগুলো থেকে। এ কথা বোঝাতেই এরিস্টটল ‘পোয়েটিকস’-এর একদম শুরুতেই বলেছেন ও I propose to treat of poetry in itself| এই in itself এর ইঙ্গিত হলো মাইমেসিসকে প্লেটোর ‘ফরম’ সম্পর্কিত মতবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট করে ভাবা যাবে না। এভাবে এরিস্টটল প্লেটোর বিপরীতে দাঁড়িয়ে মাইমেসিসকে শুধু শিল্প অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিতই করেননি, মাইমেসিসের মাধ্যমে অর্জিত শিল্পের রূপ ও প্রকরণ সম্বন্ধেও তিনিই প্রথম তাত্ত্বিক ধারণা দিয়েছেন।

এরিস্টটলের তত্ত্বমতে সাহিত্য মাইমেটিক আর্ট হিসেবে দার্পণিক প্রতিবিম্ব তৈরি করে না, বরং বস্তুর আইকন তৈরি করে। এরিস্টটল ‘পোয়েটিকস’-এর ৪র্থ পরিচ্ছেদে লিখেছেন ‘Thus the reason why men enjoy seeing a likeness is that in cotemplating it they find themselves learning or inferring, saying perhaps ‘Ah, that is he’. For if you happen not to have seen the original, the pleasure will be due not to the imitation as such, but to the execution, the colouring, or some such other cause.’ এরিস্টটল এখানে বলেছেন যে, মাইমেসিসের কাজ হলো সাদৃশ্যভিত্তিক, সাদৃশ্যের মাধ্যমে অনুকৃত বস্তুর কাছাকাছি যাওয়া (seeing a likeness), মোটেই অবিকল বস্তুটি উৎপাদন করা নয়। আর এই সাদৃশ্যের জন্য মূল বস্তুটি আদৌ দরকারিও নাও হতে পারে। কারণ মূল বস্তু আদৌ না দেখেও, শুধু অনুকৃত বস্তু দেখেও আনন্দ লাভ ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে অনুকরণ নয়, কাজটির সম্পাদন (execution), সে সম্পাদনে রঙের ব্যবহার বা অন্য কোনো বিষয়ের কারণেও আনন্দটি লাভ করা যেতে পারে। মোটের ওপরে এরিস্টটল পুরোপুরি সরে গেছেন প্লেটোর সেই আপ্ত ধারণা থেকে যে, মাইমেটিক আর্টের কাজ হলো বস্তুর প্রতিবিম্ব উৎপাদন। এরিস্টটল বরং বলতে চান অনুকৃত বস্তু কোনো দিন না দেখেও বস্তুর এই অনুকরণশিল্পের সাধনা সম্ভব। কথাটি আরো স্পষ্ট হয় ‘পোয়েটিকস’-এর ২৫তম পরিচ্ছেদে। সেখানে এরিস্টটল বলছেন not to know that a hind has no horns is a less serious matter than to paint it inartistically । দেখা যাচ্ছে, শিংসমেত একটি হরিণী অংকন করা যা বস্তু সত্যের পুরো লঙ্ঘন তা-ও মাইমেটিক আর্টে মেনে নেওয়া সম্ভব। তার মানে হলো মাইমেটিক আর্টের কাজ নয় প্রকৃতির প্রতিবিম্ব নির্মাণ, তার কাজ হলো অনুকরণের নিজস্ব রীতি-বৈশিষ্ট্যের মধ্যে থেকে নান্দনিক আনন্দ সৃষ্টির লক্ষ্যে বস্তুর প্রতীকী উপস্থাপন বা বস্তুর আইকন নির্মাণ।

আইকন মানে ঠিক বস্তুটি নয়, বরং বস্তুর সাথে অপরিহার্য সম্পর্কযুক্ত এমন কিছু যা ঐ বস্তুকে বোঝায়। ‘গাছ’ দ্বারা আমরা যে বস্তুটি বুঝি তার সাথে ‘গাছ’ ধ্বনির কোনো অপরিহার্য সম্পর্ক নেই, বরং যে সম্পর্কটি আছে তা সম্পূর্ণ খামখেয়ালি গোছের। ফলে ‘গাছ’ শব্দটি বস্তু গাছের কোনো আইকন নয়। কিন্তু একটি মুখমণ্ডলের ছবি মুখমণ্ডলটির আইকন কারণ এর সাথে মুখমণ্ডলটির অনস্বীকার্য ও অপরিহার্য সম্পর্ক রয়েছে। একটি মুখমণ্ডলের ছবি, সত্যিকারের কোনো মুখমণ্ডলের প্রতিকৃতি না হয়েও আইকনিক হওয়ার মধ্যদিয়ে আনন্দ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়, যেমন কার্টুনের জন্য আঁকা মুখমণ্ডলগুলো আমাদেরকে আনন্দ দিয়ে থাকে। কার্টুনরূপ মনুষ্য চেহারা মানুষের চেহারার সাথে ন্যূনতম সাদৃশ্য নিয়েই মাইমেটিক আর্ট হতে পারছে, কোনো নির্দিষ্ট চেহারার সাথে আদৌ সাদৃশ্যপূর্ণ হতে হচ্ছে না। ঐ ন্যূনতম সাদৃশ্য থেকেই দর্শক চিনতে পারছে আইকনটি কিসের? আর চিনতে পারার মধ্যদিয়েই তার মধ্যে এক আনন্দ অনুভবের অনুরণন ঘটছে। আইকনিক উপস্থাপনার দ্বারা এরিস্টটল এরূপ মাইমেটিক আর্টের কথা বলেছেন যা প্লেটোর বলা মাইমেটিক আর্টের ভাবনা থেকে যোজন যোজন দূরের ভাবনা। প্লেটো মাইমেটিক আর্টকে বর্জনীয় বলছেন কারণ, এই আর্ট বস্তুর প্রতিবিম্বে খুঁত তৈরি করে (flawed image), আর এরিস্টটল মাইমেটিক আর্টের নান্দনিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে সেই খুঁতকেই মূল্যায়ন করছেন। এই ভাবনা দ্বারা এরিস্টটল নিশ্চিত করছেন যে, মাইমেটিক আর্টের উৎকর্ষের পরিমাপক মোটেই সাদৃশ্যের সঠিকতা নয় বা নিখুঁত সাদৃশ্য নয়। বরং এর উৎকর্ষের পরিমাপক হবে আর্ট হিসেবে চর্চার জন্য এর উপযোগী বিভিন্ন কলাকৌশল ও রীতিনিয়ম। যা ঘটে তার নিখুঁত বর্ণনা মাইমেটিক আর্ট হলে ইতিহাস হতো ট্র্যাজেডি বা কমেডির চেয়ে উঁচু সাহিত্য। অথচ, আমরা জানি ইহিতাস সাহিত্য নয়, বরং ট্র্যাজেডিই সাহিত্য। ট্র্যাজেডি যা ঘটেছে তার বয়ান নয়, যা ঘটতে পারে তার বয়ান। যা ঘটেছে তা নয়, বরং যা ঘটতে পারে বা পারত মাইমেসিসের মাধ্যমে তার অনুকরণের দিকেই এরিস্টটলের আহ্বান।

প্লেটো সাহিত্য বা মাইমেটিক আর্টকে নিষিদ্ধ করার পেছনে একটি যুক্তি দেখিয়েছিলেন এই যে, ইহা মানুষের অনুভবগুলোকে জাগিয়ে তুলে তার যুক্তিবুদ্ধিকে (Reason) বিনষ্ট করে। প্লেটোর এই বক্তব্যের বিপরীতে রয়েছে এরিস্টটলের ‘ক্যাথারসিস’ তত্ত্ব। এরিস্টটলের ক্যাথারসিস তত্ত্ব অনুযায়ী ট্র্যাজেডি মানুষের মাঝে ‘করুণা’ ও ‘ভীতি’র অনুভব (pity and fear) জাগিয়ে মানুষের যুক্তিবুদ্ধিকে (Reason) বিনষ্ট তো করেই না, বরং এই অনুভূতিগুলো প্রবলভাবে জাগিয়ে তুলে তা মানুষের অনুভবরাজ্য থেকে সরিয়ে দিয়ে অর্থাৎ মানুষের অনুভরাজ্যের অপদ্রব্য সরিয়ে দিয়ে মানুষটিকে বিশুদ্ধ করে তোলে এবং এর মাধ্যমে মানুষটির যুক্তিবুদ্ধি (Reason) আরো পরিষ্কার হয়, শানিত হয়। এভাবেই এরস্টিটল তাঁর পোয়েটিকসে পরোক্ষে সাহিত্যের বিরুদ্ধে তাঁর গুরুর উত্থাপিত অভিযোগসমূহ খণ্ডন করেছেন এবং অনুকরণধর্মী শিল্প হিসেবে সাহিত্যের জয়গান উচ্চারণ করেছেন যা সাহিত্যের পাঠকদেরকে সাহিত্য বুঝতে ও সাহিত্যের রসাস্বাদনে হাজার হাজার বছর চিন্তার আশ্রয় হিসেবে কাজ করেছে। সাহিত্য সম্পর্কে এরিরস্টলের এই ভাবনার পরে আমরা আসবো রোমান যুগের আর এক সাহিত্যবোদ্ধার ভাবনার সাথে পরিচিত হতে। তিনি হলেন লঞ্জাইনাস, যাঁর নাম আমরা অনেকে লঙিনুস রূপে উচ্চারণ করে থাকি। চলবে

/জেডএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এবার রাজশাহীর আম গাছে প্রচুর মুকুল, স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা
এবার রাজশাহীর আম গাছে প্রচুর মুকুল, স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মার্চ, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (১৯ মার্চ, ২০২৪)
চীনে ৯ বছরে প্রথমবারের মতো বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে
চীনে ৯ বছরে প্রথমবারের মতো বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে
‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে, রাশিয়ায়ও চেষ্টা করেছে’
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলের প্রধান ম্যাককিনি‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে, রাশিয়ায়ও চেষ্টা করেছে’
সর্বাধিক পঠিত
লিটনের বাদ পড়া নিয়ে যা বললেন হাথুরুসিংহে
লিটনের বাদ পড়া নিয়ে যা বললেন হাথুরুসিংহে
শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ
তৃতীয় ওয়ানডেশ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ
পদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন
একীভূত হলো দুই ব্যাংকপদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার