X
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫
২৩ আষাঢ় ১৪৩২

‘সবকিছু অন্ধকার লাগছে’, স্কুলে যেতে না পারা আফগান মেয়ে

বিদেশ ডেস্ক
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:০৩আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:০৩

আফগানিস্তানে মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে মেয়েদের অধ্যয়ন নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। শুক্রবার অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শুধু ছেলে ও পুরুষদের শ্রেণিকক্ষে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কট্টরপন্থী তালেবানের এমন ঘোষণায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন দেশটির কিশোরিরা। স্কুলে ফিরতে না পারা এক কিশোরী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসকে জানায়, তার কাছে এখন সবকিছু অন্ধকার লাগছে।

অবশ্য এক তালেবান মুখপাত্র বলেছেন, শিগগিরই মেয়েদের স্কুল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আফগানরা তালেবানের ১৯৯০ দশকের কঠোর শাসন ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন। ওই সময় মেয়েদের স্কুলে পড়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

কেবল ছেলেদের স্কুলে ফিরতে বলার নির্দেশের পরে তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদকে উদ্ধৃত স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বাখতার বার্তা সংস্থা জানায়, মেয়েদের স্কুল শিগগিরই চালু হবে। এজন্য শিক্ষকদের বিভক্ত করাসহ বিভিন্ন ‘প্রক্রিয়া’ নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তারা।

কিন্তু স্কুলগামী মেয়ে ও তাদের অভিভাবকরা বলছেন, এমনটি ঘটার সম্ভাবনা খুব কম।

আইনজীবী হতে চাওয়া এক আফগান মেয়ের কথায়, আমি নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। সবকিছুই মনে হচ্ছে অন্ধকার। প্রতিদিন ঘুম থেকে জেগে উঠি এবং নিজেকে প্রশ্ন করি আমি কেন বেঁচে আছি? আমার কী বাড়িতে বসে কারও অপেক্ষায় থাকা উচিত যে দরজার নক করে বলবে আমাকে বিয়ে করতে চায়? নারী হওয়ার এটাই কি উদ্দেশ্য?

এই কিশোরীরা বাবা বলেন, আমার মা ছিলেন অশিক্ষিত। আমার বাবা তাকে নিয়মিত নির্যাতন করতেন এবং গর্দভ বলতেন। আমি চাই না মায়ের মতো হোক আমার মেয়ে।

কাবুলের ১৬ বছর বয়সী আরেক স্কুলছাত্রী ভাষায়, এটি ছিল তার দুঃখজনক দিন। আমি চিকিৎসক হতে চাই! আমার স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে গেছে। আমার মনে হয় না আমি আর স্কুলে ফিরতে পারব। এমনকি যদি তারা আবার হাই স্কুল চালু করেও, তারা চায় না নারীরা শিক্ষিত হোক।

গত সপ্তাহে তালেবান ঘোষণা দেয়, নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে পারবেন। কিন্তু পুরুষ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বসতে পারবে না এবং নতুন পোশাকবিধি মেনে চলতে হবে। অনেকেই মনে করছেন, এর মধ্য দিয়ে নারীদের শিক্ষা থেকে বাদ দেওয়া হবে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পৃথক ক্লাস নেওয়ার মতো সক্ষমতা ও সামর্থ্য নেই। মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়েদের শিক্ষা নিষিদ্ধ করার অর্থ হলো তারা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে না।

২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর আফগানিস্তানের শিক্ষা ও সাক্ষরতা হারের প্রভূত উন্নতি হয়। বিশেষ করে মেয়ে ও নারীদের। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের সংখ্যা শূন্য থেকে ২৫ লাখে পৌঁছায়। এক দশকে নারীদের সাক্ষরতার হার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়ায় ৩০ শতাংশে। যদিও এই অগ্রগতির বেশিরভাগ শহুরে অঞ্চলে হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক মুখপাত্র নোরোরিয়া নিজহাত বলেন, এটি আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েদের শিক্ষার জন্য অবনতি। এটি তালেবানের ৯০ দশকের কথা সবাইকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে তখন আমরা নিরক্ষর ও অশিক্ষিত নারীদের একটি প্রজন্ম পেয়েছিলাম।

 

/এএ/
সম্পর্কিত
চীন-ফ্রান্স হবে স্থিতিশীলতা ও ঐক্যের শক্তি: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিশেষ বিমানে গুজরাট থেকে দুই শতাধিক ‘বাংলাদেশি’কে সীমান্তে পাঠালো ভারত 
তালেবানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কোন্নয়নকে স্বাগত জানাল চীন
সর্বশেষ খবর
টিভিতে আজকের খেলা (৭ জুলাই, ২০২৫)
টিভিতে আজকের খেলা (৭ জুলাই, ২০২৫)
মধ্যরাতে সংবর্ধনায় বিশ্বকাপ স্বপ্নের কথা বললেন ঋতুপর্ণা ও আফঈদারা 
মধ্যরাতে সংবর্ধনায় বিশ্বকাপ স্বপ্নের কথা বললেন ঋতুপর্ণা ও আফঈদারা 
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদ জয় করবো: নাহিদ ইসলাম
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদ জয় করবো: নাহিদ ইসলাম
একটি দলের কারণে ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা আটকে যাচ্ছে: আখতার
একটি দলের কারণে ঐকমত্য কমিশনে মৌলিক সংস্কারের প্রস্তাবনা আটকে যাচ্ছে: আখতার
সর্বাধিক পঠিত
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
আসছে নতুন কারিকুলাম: ফ্রেমওয়ার্ক ডিসেম্বরে, ‘বড় পরিসরে’ থাকবে জুলাই
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক 
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক 
ফার্মেসিতে ওষুধের আড়ালে ‘ট্যাপেন্টাডল’ বিক্রির অভিযোগ, আটক ৫
ফার্মেসিতে ওষুধের আড়ালে ‘ট্যাপেন্টাডল’ বিক্রির অভিযোগ, আটক ৫
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
লোহিত সাগরে জাহাজে হামলায় আগুন, ডুবে যাওয়ার শঙ্কা
সেই ব্যাংক কর্মকর্তার খোঁজ মিলেছে
সেই ব্যাংক কর্মকর্তার খোঁজ মিলেছে