‘আর বেশি কাঁদালে উড়াল দিবো আকাশে’ গানের কথার মতোই রুপালি গিটার ফেলে আকাশে উড়াল দিয়েছেন গিটার ও সুরের জাদুকর আইয়ুব বাচ্চু। ব্যান্ড ‘এলআরবি’র প্রাণ ছিলেন তিনি। ভালোবেসে সবাই তাকে ডাকতেন ‘এবি’ বলে। আর সংগীতাঙ্গনের মানুষরা ‘বস’ বলে সম্বোধন করতেন।
মৃত্যুবার্ষিকীর আগমুহূর্তে তাকে নিয়ে বিশেষ স্মৃতিকথা লিখলেন আইয়ুব বাচ্চুর আমৃত্যু সঙ্গী গিটারিস্ট সাইদুল হাসান স্বপন। জানান, ‘বসের’ মৃত্যু তারিখের ঠিক দুদিন আগে ২০১৬ সালের ১৬ অক্টোবর স্বপনের মা-ও মারা যান।
তখন ব্যান্ড সদস্যরা সবাই ছিলেন কানাডায়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বপন লিখেছেন, ‘‘ডেটলাইন ১৬ অক্টোবর, ২০১৬। কানাডার সাসকাটুন কনসার্টে শেষ গান করে হঠাৎ বাচ্চু ভাই হলভর্তি মানুষের সামনে ঘোষণা দিলেন, ‘আজ সকালে আমাদের স্বপনের মা মারা গেছেন, আমি আমার ‘মা’ গানটা এখন স্বপনকে উৎসর্গ করে গাইছি। এরপর গেয়ে ওঠেন, ‘ওই দুর আকাশের তারা রে বলে দে না, কোনটা আমার মা, মা কি আমায় দেখতে পায় না? কতদিন দেখি না মায়ের মুখ...’’।
ঠিক এভাবেই ব্যান্ড সদস্যদের পরিবারের সঙ্গে মিশে ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। তবে সেই ঘটনার ২ বছর ২ দিন পর ২০১৮ সালের এই দিনে (১৮ অক্টোবরের) সবাইকে কাঁদিয়ে পরপারে চলে যান এই মহাতারকা।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ড এলআরবির দলনেতা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন একাধারে গায়ক, গিটারিস্ট, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক। গিটারের জাদুকর হিসেবে আলাদা সুনাম ছিল তার। ভক্তদের কাছে তিনি ‘এবি’ নামেও পরিচিত। আইয়ুব বাচ্চুর স্টুডিওর নাম- এবি কিচেন।
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৭৮ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের মাধ্যমে সংগীত জগতে তার পথচলা শুরু হয়। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সোলস ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে এলআরবি ব্যান্ড গঠন করেন আইয়ুব বাচ্চু। এর প্রথম অ্যালবাম ‘এলআরবি’ বাজারে আসে ১৯৯২ সালে। এটাই দেশের প্রথম ডাবল অ্যালবাম।