কোন গ্রিডে কত লোডশেডিং

চাহিদা বাড়লেও বিদ্যুতের উৎপাদন এখনও কম। লোডশেডিংও গত কয়েক দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। ঢাকার দুই বিতরণ কোম্পানিই বলছে, লোডশেডিং করা হচ্ছে ৪৬০ মেগাওয়াট। প্রতিটি ফিডারে নিয়ম মাফিক এই লোডশেডিং করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে দেশে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

এখন দিনে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় ১০ হাজার ৮৩১ মেগাওয়াট এবং রাতে পিক আওয়ারে ১২ হাজার ৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। কিন্তু দিনে-রাতে সবসময়ই এর চেয়ে অন্তত ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের বাড়তি চাহিদা রয়েছে।

আরইবি বলছে, দেশের গ্রামীণ জনপদে বিদ্যুতের অবস্থা বেশি খারাপ। চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ কম থাকায় ৬৯টি গ্রিডের সবক’টিতে লোডশেডিং করা হচ্ছে।

 

লোডশেডিং করা গ্রিড

কড্ডা, কবিরপুর, জয়দেবপুর, টঙ্গী, রাজেন্দ্রপুর, ভুলতা, ধামরাই, সাভার, মানিকগঞ্জ, সোনারগাঁও, নরসিংদী, ভালুকা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মাগুরা, যশোর, বেনাপোল, ফেনী, চৌমুহনী, কুষ্টিয়া, খুলনা, বাগেরহাট, মংলা, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, যশোর, নওয়াপাড়া, নড়াইল, শাহাজীবাজার, শ্রীমঙ্গল, কূলাউড়া, ফেঞ্চুগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কচুয়া, ছাতক, বিয়ানীবাজার, দোহাজারী, শাহমীরপুর, শিকলবাহা, বারইরহাট, হাটহাজারী, কক্সবাজার, সিরাজগঞ্জ, শাহজাদপুর, পাবনা, ঈশ্বরদী, ভাঙ্গুড়া, আমনুড়া, পাবনা, নওগাঁ, নিয়ামতপুর, আমনূরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, কাটাখালী, বগুড়া, মহাস্থানগড়, পলাশবাড়ী, পূর্ব সাদিপুর, রংপুর, মিঠাপুকুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট।

আরইবির অধীন সমিতিগুলোর মধ্যে আছে—ঢাকা-১-এ ১০৫ মেগাওয়াট, ঢাকা-৩-এ ১৫ মেগাওয়াট, গাজীপুর-১-এ ৮৫, গাজীপুর-২-এ ২৩, মানিকগঞ্জ-১৫, নরসিংদী-১-এ ৩৫, নরসিংদী-২-এ ৩০, নারায়ণগঞ্জ-১-এ ২২, নারায়ণগঞ্জ-২-এ ২৫, ময়মনসিংহ-১-এ ৪০, ময়মনসিংহ-২-এ ৭৬, ময়মনসিংহ-৩-এ ২৩, জামালপুর ৫০, নেত্রকোনা ৩০, শেরপুর ২৫, টাঙ্গাইল ৩০, কিশোরগঞ্জ ৬০, মাগুরা ১২, ফরিদপুর ১০, সাতক্ষীরা ১৮, মেহেরপুর ৩০, কুষ্টিয়া ১০, যশোর-১-এ ১৭, যশোর-২-এ ১৬, বাগেরহাট ১২, খুলনা ৩৭, পিরোজপুর ০৪, নোয়াখালী ৩০, হবিগঞ্জ ৩৫, ফেনী ৩০, চাঁদপুর-১-এ ২০, সুনামগঞ্জ ১৫, মৌলভীবাজার ১৮, সিলেট-১-এ ২৫, চট্টগ্রাম-১-এ ৪৮, চট্টগ্রাম-৩-এ ১৫, কক্সবাজার ৩৫, সিরাজগঞ্জ-১-এ ২০, সিরাজগঞ্জ-২-এ ২২, পাবনা-১-এ ২০, পাবনা-২-এ ২১, বগুড়া-২-এ ১২, নওগাঁ-১-এ ৩০, রাজশাহী ৩৪, গাইবান্ধা ৪, দিনাজপুর-১-এ ৩৭, রংপুর-১-এ ২৩, রংপুর-২-এ ৩০, ঠাকুরগাঁও ২৭, কুড়িগ্রাম ১৯ মেগাওয়াট করে লোডশেডিং করা হচ্ছে।

লোডশেডিং নিয়ে ঢাকার দুই বিতরণ কোম্পানির অভিজ্ঞতা অনেক দিন পর বদলাচ্ছে। যেখানে রাজধানীতে প্রায় শূন্য লোডশেডিং হতো, সেখানেও এখন হচ্ছে।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আজ লোডশেডিং বেড়েছে। এখন ঘাটতি ৪০০ মেগাওয়াট। গতকাল পর্যন্ত আধঘণ্টা করে লোডশেডিং করলেও আজ একঘণ্টা করে করা হচ্ছে।

ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমির আলী বলেন, আমাদের আজ ঘাটতি কম। বিকালে মাত্র ৬০ মেগাওয়াট ঘাটতি হয়েছে। এখনও আমরা আধঘণ্টা করেই লোডশেডিং করছি।

এদিকে নর্দার্ন পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (নেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, নেসকোর অধীন রাজশাহীতে বিদ্যুতের মোট চাহিদা ৪০০ থেকে ৪৫০ মেগাওয়াট। ঘাটতি হচ্ছে ১০০ মেগাওয়াটের মতো। রংপুরে চাহিদা ১৯০ মেগাওয়াট। ৯০ মেগাওয়াট কম পাচ্ছি।

পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ওজোপাডিকো’র এক কর্মকর্তা জানান, তাদের অধীন এলাকায় মোট বিদ্যুতের চাহিদা ৬১৩ মেগাওয়াট। বিপরীতে গতকাল রাত ৯টায় ঘাটতি হয়েছে ৬২ মেগাওয়াট।

পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা গ্যাস পেয়েছি গড়ে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। গতকাল রাতে পিক আওয়ারে গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ৪ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে হয়েছে ৫ হাজার ৪৯৫ মেগাওয়াট।

তিনি আরও বলেন, এলএনজির মতো জ্বালানি তেলের দামও বাড়ছে। ফলে গ্যাসের মতো তেলের কিছু ঘাটতি তো হবেই। তেলের সব কেন্দ্র পূর্ণ ক্ষমতায় চালানো গেলে ৬ হাজার মেগাওয়াটের মতো উৎপাদন করা সম্ভব।