তিন দশকে প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে বদলেছে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের রূপ। আগামী এক দশকে এই পরিবর্তন সাংবাদিকতাকে আরও ত্বরান্বিত করবে। একইসঙ্গে সবাই মুখোমুখি হবে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের। সেগুলো মোকাবিলায় যারা নিজেকে যত প্রস্তুত করতে পারবে, সাফল্য আসবে তাদেরই।
ডিজিটাল সাংবাদিকতা এসে অ্যানালগ পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এর ধাক্কা সবাই সমানভাবে সামলাতে পারেনি। প্রতিযোগিতার দৌড় থেকে ছিটকে গেছে একসময়ের অনেক সুপ্রতিষ্ঠিত নাম। বহুগুণ বেশি তথ্য-উপাত্ত ও দ্রুততা ডিজিটাল মিডিয়াকে প্রতিনিয়ত যেমন সমৃদ্ধ করেছে, ঠিক তেমনই ঘটেছে ফেইক নিউজের প্রসার।
ডিজইনফরমেশন, মিসইনফরমেশনের যুগে পাঠকের কাছে সঠিক সংবাদটি পৌঁছে দেওয়া এখন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় সামাজিক সম্পর্কের বন্ধন ও মানুষের নিরাপত্তা নির্ভর করে সংবাদের ওপর। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্রান্তিকালে বাংলা ট্রিবিউন এক দশক ধরে দক্ষতা ও স্থিরতার সঙ্গে এমন সব সত্য উপস্থাপনের কাজ যেভাবে করে এসেছে, সেজন্য প্রকাশক হিসেবে আমি গর্বিত। এর সব কৃতিত্ব আমাদের সাহসী, ধীমান ও একনিষ্ঠ সহকর্মীদের দিতে চাই।
পাঠকের কাছে সহজে পৌঁছে যেতে বেড়েছে নিউ মিডিয়া তথা অডিও-ভিজ্যুয়াল প্রযুক্তি এবং নতুন নতুন প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার। এসব নতুনত্বের সঙ্গে এখন যুক্ত হতে যাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। প্রযুক্তির এই নতুন যাত্রা আয়ত্ত করা এবং এর নানা ঘাত-প্রতিঘাত সামাল দেওয়া হয়ে উঠবে সামনের দিনগুলোর বড় চ্যালেঞ্জ।
এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাজনিত পরিবেশে বিপুল আকারে বেড়ে যেতে পারে ডিজইনফরমেশন, প্লেজারিজম ও প্রপাগান্ডা। ভুল তথ্যের আসন্ন অভিঘাতের বিপরীতে একই প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে মিডিয়াকে দায়িত্বশীল হওয়া চাই।
এক অর্থে, আমরা প্রবেশ করতে যাচ্ছি তথ্যযুদ্ধের যুগে। বরাবরের মতো বাংলা ট্রিবিউন সেই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত ও পারঙ্গম।
আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সব পৃষ্ঠপোষক ও সহযাত্রীকে আমরা বিনীতভাবে পাশে চাই, যেমনভাবে তারা আমাদের সাহস ও সমর্থন জুগিয়ে এসেছেন এতদিন। এর পাশাপাশি আইনের আধুনিকায়ন এখন আরও জরুরি। নির্ভয়ে সৎ সাংবাদিকতার জন্য জুতসই পরিবেশের পাশাপাশি দরকার ডিজইনফরমেশন রোধ ও প্রাইভেসির সুরক্ষা। একটির অজুহাতে যেন অন্যটিকে ক্ষুণ্ন করা না হয়। সব দায়িত্বশীল পক্ষের সঙ্গে সাংবাদিকতার স্মার্ট যুগে অবদান রাখতে বাংলা ট্রিবিউন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
লেখক: প্রকাশক, বাংলা ট্রিবিউন।