হিলারি ‘আফা’ আসছেন!

মাসুদা ভাট্টিহঠাৎ করে নয়, বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক আগ্রহ সেই শুরু থেকেই। আমরা যদি প্রাক-ঔপনিবেশিক আমলের দিকে তাকাই তাহলেও দেখতে পাই যে, এই ব-দ্বীপে খাদ্য, নারী আর নিরাপদে বসবাসের জন্য সুদূর ইউরোপ এবং আরবভূমি থেকে দস্যু-তস্করেরা এসেছে। ধর্মের নামে কচুগাছের মতো মানুষ কাটতে কাটতে উত্তর দিক থেকে এসেছে দখলদার বাহিনী।
এদেশের নরম পলিমাটির মতো মানুষ তাদেরকে মেনে নিয়েছে কিংবা একটু রূঢ় কথায় বলতে গেলে, তাদেরকে প্রতিরোধের সাহসই হয়তো পায়নি। পরবর্তীতে ঔপনিবেশিক শক্তির দীর্ঘ দু’শো বছরের শাসনকাল বাংলাকে কেন্দ্র করেই ভারত উপমহাদেশের দখল নিয়েছে। ততোদিনে পৃথিবী একটু আধুনিক হয়ে উঠেছিল বিধায় ব্রিটিশ রাজত্ব ধর্ম দিয়ে বিভেদ তৈরি করে শাসনব্যবস্থায় বজায় রাখতে চাইলেও সেটা সম্ভব হয়নি তাই তারা বিদায় নিয়েছে কিন্তু ভারত উপমহাদেশকে স্থায়ী বিভক্তিও দিয়ে গেছে। কিন্তু একমাত্র পাকিস্তানিদের ক্ষেত্রে বাঙালির যে সম্মিলিত বিরোধ তা বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদেরকে একটি নতুন মাত্রা দিতে পেরেছে। এর আগ পর্যন্ত বাঙালি জাতিসত্ত্বার এই দৃঢ় ও স্বাধীনচেতা অভিব্যক্তিটি ঠিক লক্ষ্য করা যায়নি, মোটা দাগে বড় দু’টি ধর্মবিশ্বাসীদের একত্রিত প্রয়াস পাকিস্তান-বিরোধিতাতেই মৌলিকত্ব লাভ করেছিল। কিন্তু আজকের লেখার বিষয়বস্তু সেটা নয়, বরং বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক দখলদারীদের বা মোড়লদের কর্মকাণ্ড যে এখনও প্রবলভাবে সক্রিয় সেকথাটিই আজকের লেখায় তুলে ধরতে চাইছি।
ভূরাজনৈতিক গুরুত্বে বাংলাদেশের অবস্থান সুবিধাজনক সেকথা অত্যন্ত পুরোনো। কিন্তু তার চেয়েও বেশি গুরত্বপূর্ণ কিছু আছে কিনা বাংলাদেশকে গিয়ে আন্তর্জান্তিক বিরোধিতার সেটি খুঁজে বের করা এখন অতীব প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। একাত্তরে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে যে বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছিল তাতে নেতৃত্ব দিয়েছিল আমেরিকা কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ইস্যুতে পাকিস্তানকে মাঝে রেখে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বন্ধুত্বের সূচনা করেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার তা কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ভেতর দিয়ে সম্পূর্ণতা লাভ করেছিল।

আজকে আমরা একথা বলতেই পারি যে, ত্রিশ লাখ শহীদের বিনিময়ে বাঙালি যদি স্বাধীনতা অর্জন করে থাকে তাহলে ৩০ লাখ শহীদের লাশের বিনিময়েই চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব পাকা হয়েছিল এবং সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ছিল সেই দুই বন্ধুর মিলিত প্রয়াস। কিন্তু গণহত্যার পাপে তৈরি বন্ধুত্ব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের শেষে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যতোই অর্থনৈতিকভাবে জড়িয়েছে ততোই দু’পক্ষের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে এবং এখনতো সম্পর্ক এমন এক বৈরিতায় পৌঁছেছে যে, দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে যে কোনও মুহূর্তে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজতে পারে।

অপরদিকে ধর্মের দোহাই দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি, ভারতের হস্তক্ষেপকে দেখেছে হিন্দুর কাছে মুসলমানের পরাজয় হিসেবে। এবং বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করা পর্যন্ত কেউ কেউ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি পর্যন্ত দেয়নি। অথচ আজকে তাদেরই ভাগ্য দেখুন, তারাই আজ ভারতের সর্ববৃহৎ বাজার হয়ে উঠেছে। কিন্তু এদেশের ধর্মবাদীরা এখনও বাংলাদেশ তথা আওয়ামী লীগ বিরোধীতায় সমান সোচ্চার। এখনও তারা বাইরের ধর্মাশ্রয়ী দেশগুলোর সঙ্গে শুধু সুর মিলিয়ে নয়, শক্তি মিলিয়ে বাংলাদেশের ভেতর অস্থিরতা সৃষ্টি থেকে শুরু করে এদেশের অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে দ্বিধাবোধ করে না।

এতো কথা বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে, বাংলাদেশের বিরোধিতাকারী আন্তর্জাতিক শত্রুবলয় আসলে আমাদের অপরিচিত নয়। কিন্তু মজার বিষয় হলো যখন বাংলাদেশে একটি গণবিরোধী সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন তারা কোনও প্রকার বিরুদ্ধাচার থেকে বিরত থাকে। প্রশ্ন হলো, কেন তারা বাংলাদেশের গণবিরোধী, ধর্মাশ্রয়ী শক্তিটির পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নকামী ও সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনতে চাওয়া কোনও সরকারের সর্বাত্মক বিরোধিতা করে? এর উত্তর হয়তো ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করা যায়। যেমন, বাংলাদেশে যখন বিএনপি-জামায়াত সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন ভারত-বিরোধী ষড়যন্ত্রের আখড়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডকে ব্যবহার করে ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলোর বিচ্ছিন্নতাবাদকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা করা তখন নৈমিত্তিক হয়ে ওঠে। আবার পশ্চিমা পরাশক্তি যা চায়, বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডকে ব্যবহার করে ভারত ও চীনের মতো দু’টি নতুন শক্তিধর রাষ্ট্রকে বসে রাখা সে সুযোগটিও তখন অবারিত হয়ে ওঠে। কোনও রকম বাধাবিঘ্ন ছাড়াই তারা তখন নিজেদের তৎপরতা চালিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এর ফলে কী হয়? যেহেতু বিদেশিদের এদেশকে অবাধ সুযোগ দেওয়া হয় সেহেতু দেশের ভেতরকার ধর্মাশ্রয়ী উগ্রবাদীদেরকেও তখন সুযোগ দিতে হয় দেশের ভেতর নিজেদের ক্ষমতা দেখানোর, কারণ এদের ক্ষমতার ওপর ভর দিয়েই বিএনপি-জামায়াত আসলে ক্ষমতায় আরোহণ করতে পারে বা করে থাকে।

এর বিপরীত চিত্রটি কিন্তু খুবই সরল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে একেবারে সোজা-সাপ্টা জনগণের ক্ষমতায়ন ঘটে, কোনও অপরিচিত ও অজানা শক্তিকে আমরা এই ক্ষমতার নিয়ামক হিসেবে দেখি না। অনেকেই হয়তো বলবেন যে, ভারত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসায়। এই কথার তীব্র বিরোধিতা হওয়া উচিত এ কারণে যে, এতে বাংলাদেশের মানুষের বোধকে আহত করা হয়। ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ দল হিসেবে ও এই দলটির নেতৃত্বের সম্পর্কটি ঐতিহাসিক ও বহুমাত্রিকভাবে দ্বি-পাক্ষিক। দু’টি প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক যদি এই ভাবে দীর্ঘকাল বজায় থাকে তাহলে গোটা রিজিয়নে স্থিতিশীলতা আসে এবং এর বিপরীতটি ঘটলে যে ভয়ঙ্কর অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয় তা ভারত ও পাকিস্তানের ভেতরকার বৈরিতা থেকে আমাদের শেখা উচিত বলে আমি মনে করি। হয়তো অনেকেই আছেন যে, ভারত-পাকিস্তানের ভেতর যে সম্পর্ক বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যেও সেরকম ভয়ঙ্কর শত্রুতার সম্পর্ক হলে হয়তো ভালো হতো। সেক্ষেত্রে, পাকিস্তানের আজকের যে পরিণতি তা যে বাংলাদেশকেও বরণ করতে হতো আরও অনেক আগেই সেকথাটি কিন্তু তারা বেমালুম ভুলে যান।

ভারতের কংগ্রেস সরকারকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে যখন নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি সরকার গঠন করে তখন বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে শেখ হাসিনা-বিরোধী শক্তিটি এতো জোরে বগল বাজাতে শুরু করেছিল যে, সেই শব্দে এদেশে ভয়ঙ্কর এক ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছিল। মনে হচ্ছিলো, এই বুঝি বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা সমেত উল্টে পড়ে। কিন্তু কার্যত দেখা গেলো সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। মোদি-সরকার বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বতো বজায় রাখলোই একই সঙ্গে বাংলাদেশকে পাশে নিয়ে দু’দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে উঠলো এবং এখনও যার ধারাবাহিকতা বর্তমান। পারষ্পারিক সম্পর্ক যখন উন্নয়নতন্ত্রে বদলায় তখন দু’টি দেশের সম্পর্ক ভিন্ন মাত্রা লাভ করে। একই কথা প্রযোজ্য চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, চীনের জন্য গোটা বাংলাদেশকে উৎসর্গ করলেও কিন্তু এদেশের কারও কিছু এসে যেতো না, কেবল চীনের জায়গায় ভারতের নামটি উচ্চারিত হলেই সকলে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন। আজকে যদি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারতের সঙ্গে নির্মিত না হয়ে যদি চীনের সঙ্গে হতো তাহলে বিরোধিতার চিত্রটি কি এরকম হতো? আমার তাতে ঘোরতর সন্দেহ আছে।

বাংলাদেশ এখন একটি সত্যিকার অর্থে নতুন অর্থনৈতিক মাত্রায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খেলুড়ে হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে বিশ্বের তিনটি প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি ভারত-চীন-রাশিয়ার সঙ্গে সমানভাবে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ফ্রান্সের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের চুক্তি সই করেছে। আটলান্টিকের অপর পাড়ে বাংলাদেশের যাতায়াত ক্রমশই কমছে। এটা নিশ্চিত ভাবেই ভালো চোখে দেখছে না দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের গণমানুষের শক্তিকে খাঁটো করে দেখে আসা শক্তিটি। এই শক্তিটি আবার একা নয়, তাদের নিজস্ব একটি বলয়শক্তি রয়েছে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সম্প্রতি বাংলাদেশ বিষয়ে যে ক’টি নেতিবাচক সংবাদ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে তার বেশিরভাগই এসেছে এই মিত্রবলয় থেকে। যেমন- অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট টিমকে বাংলাদেশকে না পাঠানো, জঙ্গি হামলার আশঙ্কা বা নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে; যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ থেকে কোনও কার্গো বিমান অবতরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ, বাংলাদেশে আইএস জঙ্গি রয়েছে তা স্বীকার করার জন্য চাপ প্রয়োগ ইত্যাদি ঘটনাবলী। কিন্তু এসকল ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ অত্যন্ত দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্পর্ক নষ্ট না করেও যে কোনও নেতিবাচক প্রচারণায় যে দৃঢ়তা দেখানো সম্ভব তা এখন বাংলাদেশ দেখাতে পারছে।

কিন্তু বাংলাদেশের ভেতরে এই মিত্রবলয়ের যে দেশিয় মুরিদরা রয়েছেন তারা আশা করে আছেন যে, আসছে নভেম্বরে হয়তো পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে তাদের সম্পূর্ণ আশা-ভরসার কলসি হয়ে দাঁড়িয়েছেন হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন। তারা মনে করছেন যে, তিনি ক্ষমতায় এলেই বাংলাদেশের ক্ষমতায় তাদেরকে বসিয়ে দিতে সক্ষম হবেন। কিন্তু পরিবর্তিত বৈশ্বিক বাস্তবতায় রাজনীতিরও যে বদল হয়েছে তা হয়তো এরা ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। যেমনটি মোদি-সরকারের ক্ষেত্রে ভাবা হয়েছিল যে, মোদি ক্ষমতায় এলেই শেখ হাসিনার বিদায় ঘটবে কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তার উল্টো ঘটনা, তেমনই হিলারি ক্ষমতা গ্রহণ করলেই পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। মজার ব্যাপার হলো, এই যে দেশিয় গোষ্ঠীটির বিদেশি নির্ভর ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন এ নিয়ে কিন্তু কারোরই কোনও প্রশ্ন নেই। কোনও এক বিচিত্র কারণে তাদের বিদেশ-নির্ভরতা হালাল হয়ে যায়। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনাকে যদি আমরা একত্রিত করে দেখি তাহলে আমাদের বুঝতে অসুবিধে হয় না যে, এই বিদেশি-নির্ভর বাংলাদেশি শক্তিটি আগামি নভেম্বরে হিলাটি ক্লিনটনের ক্ষমতায় আসার আগেই বাংলাদেশকে অস্থির করার ক্ষেত্র তৈরি করছেন, যাতে তিনি ক্ষমতায় আসা মাত্র তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার আশা পূরণ করতে পারেন। প্রায়ই ঢাকার বিভিন্ন সান্ধ্য আসরে তাদেরকে আনন্দে বিগলিত হতে-হতে বলতে শুনি, ‘হিলারি আফা আসতেছেন’। দুঃখের বিষয় হলো, তাদের স্বপ্নের বেলুনটি এতোটাই চুপসানো যে, বেচারাদের জন্য সত্যিই দুঃখ লাগে। একাত্তরে পাকিস্তানি ও পাকিস্তানপন্থীরা ভেবেছিল যে, সপ্তম নৌবহর আসবে তাদেরকে উদ্ধার করতে, যে কোনও সময় চীন ভারত আক্রমণ করবে; এই কিছুদিন আগে অনেকেই ভেবেছিলেন যে, এই যে মোদি এলেই শেখ হাসিনার বিদায় ঘটবে, আবার এখন অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন, হিলারি এলেই শেখ হাসিনার বিদায় ঘটবে---- এদের সবার কাছে সব কথার শেষ কথা হলো শেখ হাসিনার বিদায়; এতো বিরোধিতার জন্যও বোধ করি ভাগ্য নিয়ে জন্মাতে হয়, শেখ হাসিনা সত্যিই তার বাবার মতোই ভাগ্যবান।

লেখক: কলামিস্ট