জলবায়ুর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় কার্বন নির্গমন কমানোর দাবি

জলবায়ু ন্যায্যতা সপ্তাহ উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনপ্যারিস চুক্তি অনুযায়ী কার্বন নির্গমন কমালেও কোনও ক্রমেই পৃথিবী রক্ষা করা যাবে না। কারণ চুক্তিতে শিল্পোন্নত ও অগ্রসর উন্নয়নশীল দেশগুলো নির্গমন কমানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা একেবারেই অপ্রতুল। এছাড়া প্রতিশ্রুত অর্থ দিতে এসব দেশ যেভাবে গড়িমসি করছে তা প্রতারণার সমান। তাই উন্নত দেশগুলোর প্রতি জলবায়ুর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।

শনিবার বেলা ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সপ্তাহ ২০১৬’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ক্লিন-এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যাপক মাত্রায় কার্বন নির্গমন কমানো, জলবায়ু-দুর্গতদের পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া, জলবায়ু তহবিলের অর্থ বরাদ্দ ও ব্যবহারে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জন-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, জলবায়ু-বাস্তুচ্যুতদের আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক অভিবাসনেরঅধিকার দেয়া, প্রশমনের তুলনায় অভিযোজনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া ও জাতীয় জলবায়ু কর্তৃপক্ষ গঠন করা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেতাদের প্রতি এসব দাবি তুলে ধরতে ২২ থেকে ২৮ অক্টোবর (শনিবার-বৃহস্পতিবার) সারাদেশে ‘জলবায়ু ন্যায্যতা সপ্তাহ’ পালন করা হবে। জলবায়ু ন্যায্যতা সপ্তাহে ঢাকা, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর, ঝিনাইদহ, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী ও কক্সবাজারে জলবায়ু বাস্তুচ্যুতদের মিছিল, সমাবেশ, প্রতীকী ন্যায় বিচার, প্রতীকী জি-৮ সম্মেলন, কফিন সমাবেশ, ভেলায় চড়ে যাত্রা, উদ্বাস্তুদের শোভাযাত্রা ইত্যাদি কর্মসূচি পালিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্যারিস চুক্তি অনুসারে শিল্পোন্নত এবং চীন ও ভারতের মতো অগ্রসর উন্নয়নশীল দেশগুলো কার্বন নির্গমন কমানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সে অনুসারে ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এভাবে তাপমাত্রা বাড়লে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত ও নিম্নভূমির দেশগুলো বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রতিবছর ১০ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার কথা থাকলেও সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ) থেকে এ পর্যন্ত মাত্র একশ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো জলবায়ু দুর্ভোগ ব্যবহার করে গরিব দেশগুলোকে ঋণ দিচ্ছে।

ক্লিন-টিআইবি-সনাক ওয়ার্কিং গ্রুপের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- তথ্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. জাভেদ ইকবাল, সনাক-খুলনার সাহিদা আক্তার পুতুল, অ্যাডভোকেট অশোক কুমার সাহা, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, নাগরিক নেতা শেখ আব্দুল হালিম, স্পেস-এর সালাহ্উদ্দীন টিটল, টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার ফিরোজ উদ্দীন, আশরাফুল আলম, ইয়েস সদস্য মাহমুদুন নবী সুজন, এস এম মামুনুর রশীদ, সুস্মিত সরকার, ফয়জুন-নাহার পিংকী, উত্তম তরফদার, ক্লিন-খুলনার নাসিম রহমান কিরন, সূবর্ণা ইসলাম দিশা প্রমুখ।

/এসএনএইচ/