শনিবার বিকেলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক এমপি ফুলের ফিতা কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে মধুমেলার উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সাগরদাঁড়িতে পর্যটন বিকাশে বর্তমান সরকার কাজ করবে। সেলক্ষ্যে এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট সংস্কার এবং সাগরদাঁড়িতে একটি পাঁচ তলা মোটেল গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করা হবে।
আগামী ২৫ জানুয়ারি বাংলা সনেটের জনক কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৩তম জন্মজয়ন্তী। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও মধুকবি স্মরণে তার বাস্তুভিটা যশোরের কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়িতে মধুমেলা শুরু হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ মেলা চলবে আগামী ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও যশোর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী এ মেলায় থাকছে যাত্রা, সার্কাস, যাদু প্রদর্শনীসহ নানা বিনোদনমূলক আয়োজন।
মেলা উপলক্ষে মধুমঞ্চে প্রতিদিন আয়োজন করা হয়েছে কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য, সংগীত ও নাটকের। শনিবার প্রথম দিনে যশোরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের কর্মসূচি পালন করে। বেলা সাড়ে তিনটা থেকে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের মধ্যে যশোরের সাহিত্য পরিষদের শিল্পীরা আবৃত্তি করেন কবিতা, গান পরিবেশন করেন অগ্নিবীণা, শিল্পকলা অ্যাকাডেমি ও কিংশুক যশোরের শিল্পীরা। এছাড়া নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্য নিকেতন এবং শিল্পী সৃষ্টির উদ্যোগে একটি হাসির নাটক মঞ্চস্থ করা হয়।
সন্ধ্যায় আলোচনা সভা শেষে এই মঞ্চে নড়াইলের দিদার বয়াতি ও তার দল পরিবেশন করেন পালাগান এবং রাতে জারিগান পরিবেশন করেন অভয়নগরের অগ্নিবীণা ও বাঘারপাড়ার মুক্তা জারি শিল্পী দল।
মেলার আয়োজক কেশবপুর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘মধুকবির প্রতি দেশের মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জাগ্রত রাখতেই প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন করা হয়।’ তিনি জানান, ‘মেলায় কোনও অশ্লীলতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’
এদিকে, মেলাকে ঘিরে উৎসব আমেজের সৃষ্টি হয়েছে সাগরদাঁড়ি ও এর আশপাশের এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল রায় জানান, ‘মূলত মধুমেলাকে ঘিরে তাদের স্বজনরা গ্রামে আসেন। এই সময়টাতে অনেকেই বাড়িতে আসেন শীতকালীন পিঠা-পায়েসের স্বাদ নিতে। এই সময়টাতে অলিখিতভাবে একটা উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়।’
মধুমেলাকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন যশোরের জেলা প্রশাসক ড. মায়ুন কবীর।’
উল্লেখ্য, মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে প্রায় ১২৬ বছর ধরে এই মেলার আয়োজন করা হয়। কবির ভাইয়ের মেয়ে কবি মানকুমারী বসু ১৮৯০ সালে প্রথম স্মরণসভার আয়োজন করেন সাগরদাঁড়িতে। সেই থেকে শুরু হয় মধুমেলার।
এপিএইচ/