‘ত্রাণ চাই না, বিচার চাই’

লংগদুতে অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িদের বাড়িঘর

রাঙামাটির লংগদুতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়ি পরিবারগুলো সরকারের ত্রাণ সহায়তা প্রত্যাখান করেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এমনকি, প্রশাসনের অস্থায়ী পুনর্বাসন কেন্দ্রেও কেউ আসছে না। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, আমরা ত্রাণ চাই না, বিচার চাই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব জানান, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় লংগদুর ৪টি গ্রামের মোট ২১২টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনার পরপরই জরুরি সভা করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর থাকার জন্য লংগদু বালিকা বিদ্যালয়ে অস্থায়ী পুনর্বাসন কেন্দ্র চালু করা হয়। এছাড়া প্রত্যেক পরিবারকে ৩০ কেজি চাল এবং নগদ ১ হাজার টাকা করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সরকারি সহায়তা নিতে আসেনি।

ক্ষতিগ্রস্ত কিরণ চাকমা বলেন, ‘আমাদের জীবন খুব সুন্দর ও সাজানো ছিল। এখন আর তা নাই। লংগদুতে এখন আমাদের বাঁচার কোনও পরিবেশই নেই। আমরা ঘটনার বিচার চাই, ত্রাণ চাই না।’

কেবল কিরণ চাকমাই নয়; ক্ষতিগ্রস্ত আরও অনেকেই বলছেন, আমাদের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। একদিকে সহায়-সম্বল সব হারিয়েছি, অন্যদিকে আমাদের মনের সাহসও ফুরিয়েছে। সামান্য ত্রাণ দিয়ে কি হবে? আমরা ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ বিচার চাই। ঘটনার সাথে জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক, এটাই আমদের দাবি।

সিকো চাকমা, পূণ্যধন চাকমা, নিউটন চাকমাসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় জানান, পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা নিজেদের আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশির বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১ জুন) লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ দীঘিনালার চারমাইল এলাকায় পাওয়া যায়। স্থানীয় বাঙালিরা এই ঘটনার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দায়ী করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে নয়নের লাশ নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা সদরে আসার পথে পাহাড়িদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে। এসময় শতাধিক বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওইদিন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পরের দিন তা প্রত্যাহার করা হয়।

/এমএ/