ভবন পরিত্যক্ত, তাই গাছের নিচে পাঠদান

ভবন পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ায় গাছতলায় চলছে পাঠদানস্কুলটির ভবন মাত্র একটি। পাঁচ বছর আগে সেটিকেও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠদান এখন চলছে গাছের নিচে। একটু বৃষ্টি হলেই ছুটি দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। স্কুল আঙ্গিনার একপাশে ছোট্ট একটি টিনের ঘর তুলে কোনোমতে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে দাফতরিক কাজ। সব মিলিয়ে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দিন দিন শিক্ষার্থীও কমে যাচ্ছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ১১৭নং নলুয়া ফিডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। ১৯৯০ সালে নির্মাণ করা হয় চার কক্ষের একটি পাকা ভবন। কয়েক বছর যেতে না যেতেই ভবনটির ছাদসহ দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়তে থাকে। এরই মধ্য দিয়ে চলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। ২০১২ সালে ভবনটি পুরোপুরি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লে কর্তৃপক্ষ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।
বর্তমানে এই স্কুলটিতে ৭২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে বছরের শুরুতে বিদ্যালয়টিতে ৮৫ জন শিক্ষার্থী ছিল। ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বিদ্যুৎ কান্তি মজুমদার। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘১৬৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল স্কুলটি। যতদিন ভবন ছিল, ততদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেনি। এখন ভবন না থাকার কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ভবনের অভাবে আমরা গাছের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে বাধ্য হচ্ছি।’ একটি সংস্থার নির্মাণ করে দেওয়া টিনের ঘরে বিদ্যালয়ের দাফতরিক কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন১১৭নং নলুয়া ফিডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রমি মজুমদার ও মিলন হালদারের ভাষ্য, ‘ভবনের অভাবে আমাদের গাছের নিচে ক্লাস করতে হয়। একটু বৃষ্টি হলেই বাধ্য হয়ে স্যাররা আমাদের ছুটি দিয়ে দেন। এভাবে গাছের নিচে ক্লাস করতে ভালো লাগে না।’
স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বরেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, ‘শুধু ভবন সংকটই নয়, বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকটও রয়েছে। পাঁচটি পদের মধ্যে বর্তমানে তিন জন শিক্ষক কাজ করছেন। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জরুরিভিত্তিতে বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণ ও শিক্ষক সংকটের সমাধান দাবি করছি।’
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শহিদুল ইসলামের কাছে স্কুলটি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০১৬ সালে বিদ্যালয়টির ভবন চেয়ে আমরা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। আশা করি, খুব শিগগিরই বিদ্যালয়টির জন্য একটি নতুন ভবন পাস হবে। এছাড়া, আপাতত পাঠদান চালিয়ে নেওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদের থেকে দুই লাখ টাকা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে দেওয়া হয়েছে।’ এই টাকা দিয়ে একটি টিনের ঘর তুলে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন-

বছরের ৯ মাসই পানির নিচে স্কুল মাঠ!
বাংলা ট্রিবিউনে প্রতিবেদনের পর চাল পেলেন ২০০ জেলে
কুয়েতে মা-সন্তানসহ একই পরিবারের পাঁচ বাংলাদেশি নিহত