বাসায় ডেকে নিয়ে মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে পেটালেন যুবলীগ নেতা!

হাসপাতালে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ (ছবি- প্রতিনিধি)

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বাসায় ডেকে নিয়ে ফতেহপুর জিএস ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। তবে ওই যুবলীগ নেতা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বুধবার (২১ মার্চ) সকালে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু ইউছুফ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম রাকিবুল হাসান মাসুদ। তিনি রামগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। ছাত্রলীগের সাবেক এই সহ-সভাপতি ফতেহপুর জিএস ফাজিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিও। মাদ্রাসার শিক্ষকরা জানান, এর আগেও মাসুদ বেশ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছেন। মারধরে আহত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে স্থানীয় ফেমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ জানান, শিক্ষকদের মাসিক বেতন তুলতে হলে বিল সংক্রান্ত কাগজপত্রে মাদ্রাসা সভাপতি মাসুদের সই নিতে হয়। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরেই মাসুদ সই দিচ্ছিলেন না।

অধ্যক্ষের অভিযোগ, ‘আজ সকালে সভাপতি আমাকে তার বাসায় ডেকে পাঠান। মাদ্রাসার পাশেই তার বাসা। আমি শিক্ষকদের মাসিক বেতনের কাগজপত্র নিয়ে তার বাসায় যাই। এসময় অফিস সহকারী নুর হোসেনও আমার সঙ্গে ছিল। কাগজপত্রে সই করার পর তা নুর হোসেনের হাতে দিয়ে মাসুদ তাকে মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দেন। এরপর আমাকে তার বাসার অন্য এক কক্ষে আটকে রেখে মারধর শুরু করেন। এর একপর্যায়ে তিনি খালি স্ট্যাম্পে আমার সই নেন। এরপর আবার আমাকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসার দিকে রওনা দেন মাসুদ। মাদ্রাসার কাছাকাছি যাওয়ার পর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’

অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের সহকর্মীরা জানান, এর আগেও বিভিন্ন শিক্ষককে মাসুদ লাঞ্ছিত করেন। আজকের ঘটনায় তারা ইউএনও-এর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মারধর ও স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার কথা অস্বীকর করে রাকিবুল হাসান মাসুদ বলেন, ‘উনি (অধ্যক্ষ) কিছু বিলের কাগজপত্র নিয়ে আমার বাসায় আসেন। তাতে সই করার পর উনাকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসা পৌঁছালে তিনি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন।’ তিনি আরও দাবি করেন, মাদ্রাসার আগের কমিটি স্ট্যাম্পে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের সই নিয়েছিল।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোতা মিয়া বলেন, ‘মারধরের ঘটনার অভিযোগ এখনও কেউ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইউএনও আবু ইউছুফ বলেন,‘এ ঘটনায় শিক্ষকরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। মারধর এবং খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার কারণে ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করছি।’