উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতীক বরাদ্দ, প্রচার শুরু রাজশাহীতে

রাজশাহী সিটি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দরাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নির্বাচন উপলক্ষে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ চলছে। মঙ্গলবার (১০ জুলাই) সকাল ৯টায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতীক পাওয়ার পরপরই বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রচারণায় নেমেছেন। তারা দলীয় প্রতীক সম্বলিত পোস্টার-ব্যানার টাঙানোর পাশাপাশি নগরীতে মাইকিং দিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন।

রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার সৈয়দ আমিরুল ইসলামের কাছ থেকে বিএনপির মেয়র পদ প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের প্রতীক নেন জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু। প্রতীক নিয়ে বেরিয়ে আসার সময় তিনি বলেন, ‘নগরীর দরগায় বেলা ১২টায় শাহ মুখদুম (রা.) মাজার জিয়ারত করে প্রচারণা শুরু করেছেন আমাদের প্রার্থী ও নেতাকর্মীরা।’ এরপর নগরীর ৯ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বুলবুলসহ নেতাকর্মীরা প্রচারণা করেন।রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা শুরু

তোফাজ্জল হোসেন তপু আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নিয়মনীতি মেনে আমরা প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করেছি। তবে জনগণের স্বাধীনভাবে সুষ্ঠু ভোট উৎসবের পরিবেশ দেশে নেই। এরপরও নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতির কারণে আমরা রাজশাহীতে নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রচারণা শুরু করেছি। রাজশাহীতে আগামীতে কেমন পরিবেশ থাকবে তা এখন বলতে পারবো না।’

অপরদিকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার  নির্বাচন অফিস থেকে ১৪ দলের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নৌকা প্রতীকের বরাদ্দ গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘আগে থেকেই দলীয় প্রতীক বরাদ্দ থাকায় প্রস্তুতিটা গ্রহণ করা হয়েছিল। এজন্য মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচারণা শুরু করেছেন। সেই সঙ্গে পোস্টার-ফেস্টুন-লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। দলীয় কার্যালয় থেকে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণার মধ্যে দিয়ে আমাদের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রচারণা শুরু করেছেন। এরপর নগরীর সাহেব বাজারে আমাদের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ নেতাকর্মীরা প্রচারণায় নামেন।’    রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা শুরু

স্বতন্ত্র মেয়র মুরাদ মোর্শেদ হাতি প্রতীক পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ছাপাখানায় প্রতীক দিয়ে পোস্টার-লিফলেট ছাপিয়ে টাঙানো হবে। তবে এমনিতে আমরা প্রচারণা শুরু করেছি।’  

মঙ্গলবার সকাল থেকেই নিজেদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নির্বাচন কার্যালয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর সেই প্রতীক নিয়ে স্লোগান তুলে মিছিল নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় ফিরছেন তারা। ফলে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারপাশ।রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা শুরু

রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার আতিয়ার রহমান জানান, সকাল ৯টায় সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের প্রার্থিদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ শুরু হয়। এছাড়া বেলা সাড়ে ১১টায় মেয়র এবং দুপুর ১২টা থেকে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের প্রার্থিদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। তিনি জানান, ‘প্রতীক বরাদ্দের সময় প্রথমে একটি ওয়ার্ডের সব প্রার্থীদের তাদের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে বরাদ্দকৃত প্রতীকগুলো দেখানো হচ্ছে। প্রার্থীরা নিজের পছন্দমতো প্রতীক গ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছেন। তবে একাধিক প্রার্থী একটি প্রতীককেই পছন্দ করলে সেক্ষেত্রে লটারি করা হয়েছে। সকাল থেকে খুব সুন্দরভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে।’

গত ১৩ জুন রাজশাহী সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। সেদিন থেকেই প্রার্থীদের মাঝে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়। মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা নেওয়ার এই কার্যক্রম চলে ২৮ জুন পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে মেয়র পদে ছয় জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৯ জন এবং নারী কাউন্সিলর পদে ৫২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দেন।রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা শুরু

গত ১ ও ২ জুলাই মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সোমবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়েছে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় বাতিল ও প্রত্যাহারের পর এখন মোট প্রার্থীর সংখ্যা ২১৭ জন। এর মধ্যে মেয়র পদে রয়েছেন পাঁচজন। আর ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আছেন ১৬০ জন প্রার্থী। এছাড়া এসব ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদের প্রার্থী ৫২ জন।

এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে মেয়র পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে সাধারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের নির্বাচন হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দ করা প্রতীকেই। রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীরা আগেভাগেই তাদের প্রতীক সম্পর্কে অবগত থাকায় আগেই তারা প্রচারপত্র প্রস্তুত করে রেখেছিলেন।

আরও পড়ুন- প্রতীক পেয়েই প্রচারে নেমেছেন সিলেটের প্রার্থীরা