নীলফামারীর পাম্পগুলোতে ‘নো হেলমেট নো পেট্রোল’ কর্মসূচি না মানার অভিযোগ

নীলফামারীতে ‘নো হেলমেট নো পেট্রোল’ কর্মসূচি মানছেন না পাম্প মালিকরানীলফামারীতে পুলিশের নেওয়া ‘নো হেলমেট নো পেট্রোল’ কর্মসূচি পেট্রোল পাম্প মালিকরা মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করে হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালকদের কাছেও পেট্রোল বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে।

গত শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) জেলা পুলিশের এক আলোচনা সভায় ‘নো হেলমেট নো পেট্রোল’ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।  এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলার সব ফিলিং স্টেশনে একটি করে নোটিশও লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল চালকরা হেলমেট না পড়লে তাদের কাছে পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই পেট্রোল বা অকটেন বিক্রি করতে পারবে না। তবে পাম্পগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি না থাকায় এই কর্মসূচি শতভাগ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

সরেজমিনে শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা সদরের রশিদা ফিলিং স্টেশন, হক ফিলিং স্টেশন, রাজা ফিলিং স্টেশন, রকিবুল আলম চৌধুরি ফিলিং স্টেশন, মুক্তা ফিলিং স্টেশন, লাহিন অ্যান্ড ব্রার্দাস ফিলিং স্টেশনে দেখা গেছে, হেলমেটবিহীন চালকদের কাছেও তেল বিক্রি করা হচ্ছে।

সদরের রশিদা ফিলিং স্টেশনের মিটারম্যান মতিবুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকেই এসে অনুরোধ করেন, ভাই এবার পেট্রোল দিন, বাসায় ফিরে হেলমেট কিনবো। সেক্ষেত্রে সহানুভূতির কারণে পেট্রোল দিয়ে দেওয়া হয়। তবে দ্বিতীয়বার ওই ব্যক্তি এলে তাকে কোনোভাবেই পেট্রোল দেওয়া হয় না।’

নীলফামারীতে ‘নো হেলমেট নো পেট্রোল’ কর্মসূচি মানছেন না পাম্প মালিকরা

রশিদা ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘পাম্পে সবসময় পুলিশ থাকার কথা। কিন্ত তারা নোটিশ লাগিয়ে দায়সারাভাবে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে বসে আছে। হঠাৎ মাঝে মাঝে পুলিশ এসে তদারকি করে যায়।’

রশিদা ফিলিং স্টেশনে হেলমেটবিহীন গ্রাহক আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমার বাড়ি জেলার জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের বালারপুকুর গ্রামে। শহর থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে। আমি এ খবর জানি না। তাই হেলমেট ছাড়া পেট্রোল কিনতে এসেছি।’

এ ব্যাপারে রাজা ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার হুমায়ন কবির বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে হেলমেট ছাড়া কোনও মোটরসাইকেল চালকের কাছে পেট্রোল বা অকটেন বিক্রি করা যাবে না। আমরা এই নির্দেশ মেনে পেট্রোল বিক্রি করছি। তবে খোলা বাজারে যেসব দোকানে পেট্রোল বিক্রি করছে তারা এসব দেখছে না। তাদেরও এই নির্দেশনার আওতায় আনা উচিত।’নীলফামারীতে ‘নো হেলমেট নো পেট্রোল’ কর্মসূচি মানছেন না পাম্প মালিকরা

সদরের দারোয়ানী সুতাকল এলাকার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘হেলমেট ছাড়া পেট্রোল নেওয়া যাবে না আগে জানতাম না। হেলমেট পড়ে মোটরসাইকেল চালানো ভালো। এতে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।’

রকিবুল আলম চৌধুরী ফিলিং স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ‘নো হেলমেট নো পেট্রোল’ কর্মসূচি মানা হচ্ছে না। তারা সাংবাদিক বা পুলিশ দেখলে হেলমেট দেখে পেট্রোল বা অকটেন বিক্রি করছে। এছাড়া আগের মতোই সবার কাছে তেল বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে।

নীলফামারী সদর থানার ওসি (তদন্ত) এরশাদ আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুর্ঘটনা থেকে মোটরসাইকেল চালকদের রক্ষা করতে হেলমেট পড়ে রাস্তায় চলাচল বাধ্য করার জন্য নীলফামারী পুলিশ প্রশাসন নো হেলমেট নো পেট্রোল কর্মসূচি শুরু করেছে। নিজ উদ্যোগেই সবার এই কর্মসূচি মানা উচিত।’

আরও পড়ুন- মোটরসাইকেলে তিনজন চড়লেও তেল মিলবে না রাজশাহীতে