পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের সীমান্ত এলাকা ধোবাউড়া উপজেলার পুড়াকান্দুলিয়া গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও সাবেক চেয়ারম্যান জিন্নত আলী বিশ্বাসের পুত্র সোহেল রানা বিশ্বাস। সোহেল রানা ১৯৯৩ সালে ময়মনসিংহের মুকুল নিকেতন হাই স্কুল থেকে এসএসসি, ১৯৯৫ সালে ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৯৮ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা পিতার পুত্র হওয়ার সুবাদে ২০০০ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেয়ে ডেপুটি জেলার হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কারাগারে যোগদান করেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে নরসিংদী কারাগার থেকে ৮ মাস আগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলার হিসেবে যোগদান করেন।
সোহেল রানার পিতা জিন্নত আলী বিশ্বাস বর্তমানে ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। জিন্নত আলী জানান, তার পুত্র সোহেল রানা ৫-৬ বছর আগে ময়মনসিংহ মহানগরীর পণ্ডিতপাড়া এলাকায় মোমেনশাহী টাওয়ারের অষ্টম তলায় ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। ওই বাসায় সোহেল রানার স্ত্রী হোসনে আরা, কন্যা কৌশি ও পুত্র তাফিন বসবাস করেন। শনিবার (২৭ অক্টোবর) রাতে মোমেনশাহী টাওয়ারে সোহেল রানার ফ্ল্যাটে খোঁজ নিতে গেলে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। কেয়ারটেকার জমশেদ জানান, সোহেল রানার পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার সকালে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে, এরপর আর আসেনি।
এদিকে, জেলার সোহেল রানা গ্রেফতার হওয়ায় তার গ্রামের বাড়িসহ ধোবাউড়া উপজেলা জুড়ে চলছে তোলপাড়। ধোবাউড়া উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাম্মেল হক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সোহেল রানা চাকরি পাওয়ার পর গ্রামের বাড়িতে খুব কমই আসতেন। অবৈধ অর্থ উপার্জনের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল বিশ্বাস মাস্টার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অর্থ ও মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতার হওয়া দেশের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ক্ষমতা ব্যবহার করে অবৈধ অর্থ উপার্জন করলে কোনও একসময় পরিণতি এরকমই হয় বলে জানান তিনি। তবে সোহেল রানা গ্রামের বাড়িতে খুব বেশি যেতেন না বলে তার সম্পর্কে আশপাশের মানুষ কিছুই জানে না দাবি করে তিনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার দাবি করেছেন।