স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল

৭১-এর গণত্যার দায়ে পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবি

১৯৭১-এর গণহত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন তরুণ প্রজন্ম। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদির পাশে প্ল্যার্কাড হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে এক তরুণকে। তার প্ল্যাকার্ডে লেখা রয়েছে, ‘হে-পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তোমরা যদি সত্যি মানুষ হও, ৭১ এর গণহত্যা, ধর্ষণের অপরাধে রাষ্টীয়ভাবে ক্ষমা চাও।’

রাজধানীর লালমাটিয়া থেকে আসা মোকলেছুর রহমান সাগর নামের এই তরুণ বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কুটনৈতিক সম্পর্কও রয়েছে। তবু এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনও ক্ষমা চায়নি তারা।’

ধামরাই কলেজের শীক্ষার্থী তন্ময় ও শাকিল বলেন, ‘অনেক যুদ্ধাপরাধী দেশের বাহিরে অবস্থান করছে।’ অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানান তারা।

এদিকে দিনটি উদযাপনে ভোর থেকেই মানুষের ঢল নামতে শুরু করে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। সকাল পৌনে ছয়টায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক অর্পণের পর আপামর জনতার ফুলে ফুলে ভরে ওঠে সৌধপ্রাঙ্গণ। হাতে লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসতে থাকেন সর্বোস্তরের মানুষ। রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে পরিণত হয় এই এলাকা।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে যেকোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সৌধপ্রাঙ্গণ ও এর আশপাশের এলাকায় বসানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। পোশাকধারী পুলিশ-র‌্যাব ছাড়াও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কড়া নজরদারিতে রাখে পুরো এলাকা।

শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধে এসে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে এনে ঘুষ-দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হবে। এর জন্য জনগণকেই সংগঠিত হয়ে সব কিছু অর্জন করতে হবে।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনা ও আদর্শ নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম, তা লুন্ঠিত হয়েছে। দেশে এখন বাকশালের মতো এদকদলীয় শাসন কায়ের করা হচ্ছে।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দেশে এখন রাতে ভোট হয়। আমরা এমন বাংলাদেশের জন্য ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করিনি।’