মৎস্যচাষীদের সূত্রে জানা যায়, চৈত্র থেকে মধ্য আষাঢ় রেণু পোনা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। কয়েকদিন ধরে এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। আর তাপদাহের কারণেই রেণু পোনা উৎপাদনে এ বিপর্যয় বলে জানিয়েছেন হ্যাচারি মালিকরা।
সহনীয় তাপমাত্রার চেয়ে বেশি হওয়ায় ছোট পুকুর বা খানাগুলোতে প্রতিদিন পোনা মাছ মারা যাচ্ছে। এজন্য তারা হ্যাচারি থেকে মাছ সংগ্রহ ও বিক্রি করা কমিয়ে দিয়েছেন। আর চাহিদা কমে যাওয়ায় হ্যাচারিগুলোও উৎপাদন কমিতে দিতে বাধ্য হয়েছে।
শহরের চাঁচড়া এলাকার মাছচাষী অহিদুল্লাহ লুলু বলেন, গরমের কারণে পুকুর মালিকরা রেণু বা পোনা ক্রয় কমিয়ে দিয়েছেন। প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ না থাকায় তাপ নিয়ন্ত্রণে থাকছে না।
তিনি জানান, শিগগির বৃষ্টি না হলে হ্যাচারি মালিকদের পাশাপাশি পুকুর মালিকরাও চরম ক্ষতির মুখে পড়বে।
জেলা হ্যাচারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান গোলদার এ বিষয়ে জানান, সাধারণত এ সময়ে যশোরের সব হ্যাচারি মিলিয়ে সপ্তাহে গড়ে দেড় কোটি টাকার রেণু ও চারা পোনা উৎপাদন হয়। অথচ গত দুই সপ্তাহে তার নিজের হ্যাচারিতেই প্রায় ২ লাখ টাকার রেণু ও মা মাছ মারা গেছে। তার মতো যশোরের অধিকাংশ হ্যাচারিই একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব কারণে উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। তাই গত দুই সপ্তাহে তাদের ক্ষতি কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
জেলা মৎস্য অফিসার মো. আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, যশোর অঞ্চলের ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরে যে তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে, তা মাছ চাষের জন্য খুবই প্রতিকূল। এমন তাপমাত্রায় রেণু উৎপাদন সম্ভব হয় না।
তিনি জানান, বছরের এই সময়টা মাছচাষীদের জন্য খুবই খারাপ। এ সময়ে রেণু উৎপাদনকারীদের সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি হলে বা তাপমাত্রা কমে গেলে রেণু উৎপাদন স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।
যশোরে বিমান বাহিনী নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে যশোরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই; বরং বাড়তে পারে।