স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীসহ দুই জনের যাবজ্জীবন

ঝিনাইদহঝিনাইদহের মহেশপুরে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীসহ দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক এমজি আযম এ রায় দেন। সেই সঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-মহেশপুর উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে উজ্জল হোসেন ও একই গ্রামের হুজুর আলীর ছেলে শুকুর আলী।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পিপি অ্যাড. আব্দুল খালেক জানান, ১৯৯৯ সালের ৩১ মে মহেশপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে মনোয়ারা খাতুনের সঙ্গে কানাইডাঙ্গা গ্রামের উজ্জল হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী ও তার বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করতো। তাছাড়াও তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়। এ ঘটনায় মনোয়ারা খাতুন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করে।

পরবর্তীতে ২০০১ সালের ২৯ জুন উজ্জল হোসেন তার বাড়িতে এসে মনোয়ারা খাতুনকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর মনোয়ারা খাতুনের বাবা শহিদুল ইসলাম উজ্জলের বাড়িতে গিয়ে মেয়ের খোঁজ করেন। কিন্তু উজ্জল হোসেন ও তার বাড়ির লোকজন বলেন মনোয়ারা বাবার বাড়িতে চলে গেছে। এরপর থেকে শহিদুল ইসলাম বিভিন্ন স্থানে মেয়ের খোঁজ করতে থাকেন। ওই বছরের ১ জুলাই চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার বলাতলা খাল থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে থানায় গিয়ে মেয়ের পোশাক ও ছবি দেখে মনোয়ারার লাশ বলে শনাক্ত করে।

এ ঘটনায় ৬ জুলাই নিহতের বাবা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় আট জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত মনোয়ারার স্বামী উজ্জল হোসেন ও প্রতিবেশী শুকুর আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

এ মামলার আসামি আব্দুর রাজ্জাক বিচার চলার সময়ে মারা গেছেন। অন্য দুইজন আসামি আজিজুল হক ও মেঘা মন্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেন বিচারক।