নুসরাত হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ

নুসরাত হত্যা মামলাফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনীর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলমকে জেরার মধ্য দিয়ে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে টানা ১১ দিন চলা শাহ আলমের সাক্ষ্য ও জেরা বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) শেষ হয়।  

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান সাজু বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এই  মামলায় আদালতে ৮৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নুসরাতের বান্ধবী নাসরিন সুলতানা ফুর্তি ও নিশাত সুলতানাকে আগামী রবিবার পুনরায় জেরা করার আদেশ দিয়েছেন।

পিপি হাফেজ আহাম্মদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলমকে আসামি রুহুল আমিন ও আফছার উদ্দিনের পক্ষে আইনজীবী কামরুল হাসান জেরা করেন। এছাড়া আসামি সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, সাইফুর রহমান মো. জোবায়ের ও কামরুন নাহার মনির পক্ষে জেরা করেন অ্যাডভোকেট ফারুক আহমেদ। ইতোমধ্যে ১৪ আসামির পক্ষে তাকে  জেরা করা হয়।’

গত ২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী ও নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার কাজ শুরু হয়।

এর আগে ২৯ মে আদালতে পিবিআই ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করে। চার্জশিটভুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ১০ জুন আদালত মামলাটি আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত। 

উল্লেখ্য, নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে তিনি যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে ওই মাদ্রাসাকেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে মিথ্যা কথা বলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান। এই ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।