ভোটগ্রহণ উপলক্ষে ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন অফিস। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার সব কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। আর শুক্রবার (৪ অক্টোবর) কেন্দ্রে-কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বাকি নির্বাচনি সরঞ্জাম। শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে উপ-নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জিএম শাহাতাব উদ্দিন। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান রংপুরে কর্মরত র্যাব-১৩ এর কমান্ডার রেজা ফেরদৌস আহমেদ।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ (সদর) আসনের ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪১ হাজার ২২৪ জন। এই নির্বাচনে সবকেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহাতাব উদ্দিন বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নেওয়া হয়েছে চার স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সব কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টিম। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বও তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সব কেন্দ্রে আয়োজন করা হয় মক (ডামি) ভোটের।’
উল্লেখ্য, সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের স্বার্থে প্রতিটি কেন্দ্রে চারজন পুলিশ, আনসার সদস্য ছয় জন, দুই জন মহিলা আনসার নিয়োজিত করা হয়েছে। পুরো আসনে ১৮ প্লাটুন বিজিবি’র পাশাপাশি র্যাবও টহল দেবে। এছাড়া ২৪ জন ম্যাজিট্রেট পুরো নির্বাচনি আসনে দায়িত্ব পালন করবেন।
জরুরি প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করবে র্যাব
আলাদা আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৩-এর কমান্ডার রেজা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, র্যাবের ২০টি ইউনিট আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভ্রাম্যমাণ দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হলে র্যাব হেলিকপ্টারের মাধ্যমে দ্রুত সেখানে পৌঁছে যাবে।’ র্যাব সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে বলে তিনি জানান।
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৭৬টি
স্থানীয় নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর-৩ উপ-নির্বাচনের পুরো আসনের ১৭৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৭৬টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ আসন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে ৪৯টি কেন্দ্রকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এসব কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ নজর থাকবে। তবে, এসব কেন্দ্রের ক্ষেত্রে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ শব্দটির পরিবর্তে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ শব্দ ব্যবহার করতে চান রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহাতাব উদ্দিন। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমরা ৭৬টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে এবং এর মধ্যে ৪৯টিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছি।’
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের অংশ হিসেবে শুক্রবার সকাল থেকেই পুরো নির্বাচনি এলাকায় যানবাহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া যেকোনও বেসরকারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বহিরাগতদের এলাকা ত্যাগের নির্দেশের পাশাপাশি বাইরের কাউকে নির্বাচনি এলাকায় প্রবেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।