করোনা প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত নারী প্রতিবন্ধীদের কার্পেট কারখানা

92811019_3302913813052248_5084045198791540736_nসারা দেশের মতো ময়মনসিংহেও করোনার প্রভাব পড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ময়মনসিংহের কার্পেট কারখানার অর্ধশতাধিক নারী প্রতিবন্ধী। কারখানা বন্ধ থাকায় বেতন না পেয়ে তারা খাদ্য সংকটে পরেছেন। এদিকে এখন পর্যন্ত এসব নারীদের সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসেনি অভিযোগ তাদের।

ময়মনসিংহ মহানগরীর কাঁচিঝুলি এলাকার প্রতিবন্ধীদের কারখানায় অর্ধশতাধিক নারী কার্পেট তৈরির কাজ করেন। এই কাজ করে যে আয় হয় তাই দিয়ে চলে তাদের সংসার। এই কারখানার তৈরি কার্পেট চলে যায় আমেরিকা, জাপান, ফ্রান্সসহ প্রায় ১০টি দেশে। বেশিরভাগ পর্যটকরা কারখানায় এসে প্রছন্দমতো কার্পেট কিনে থাকেন। কার্পেট বিক্রির আয় দিয়েই নারীদের বেতন, ভাতাসহ অন্যান্য খরচ মেটানো হয়ে থাকে।

করোনারভাইরাসের কারণে মার্চ মাস থেকে বিদেশি কোনও ক্রেতা না আসায় কার্পেট বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

কার্পেট কারখানার ইনচার্জ শেফালি আক্তার জানান, নারী প্রতিবন্ধীদের তৈরি একেকটি কার্পেট বিদেশি ক্রেতাদের কাছে ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়।

91987709_148096179954418_8109232987419181056_nএই মুহূর্তে কারখানার গুদামে বিভিন্ন আকারের শতাধিক কার্পেট মজুদ থাকলেও মার্চ মাস থেকে এখন পর্যন্ত একটি কার্পেটও তারা বিক্রি করতে পারেননি। ব্যাংকে জমানো অর্থ থেকে মার্চ মাসের বেতন কর্মীদের দিয়েছেন। সরকারি নির্দেশনা মতো অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো কার্পেট কারখানাও মার্চ মাসের ২৬ তারিখ থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন প্রতিবন্ধী নারী কর্মীরা ঘরে বসে আছেন। এখানে কাজ করে যে আয় হয়, সেই টাকা দিয়ে তাদের সংসার খরচ চলে। এখন কাজ না থাকায় এবং কার্পেট বিক্রি বন্ধ হওয়ায় এসবকর্মীদের কোনও আর্থিক সহায়তা করা যাচ্ছে না। কীভাবে তাদের সংসার চলবে এটিই বড় দুশ্চিন্তা বলে জানান শেফালি।

কার্পেট কারখানার নারী প্রতিবন্ধী বাবলি আক্তার বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকেন বাঁশবাড়ি কলোনী বস্তিতে। কার্পেট কারখানা থেকে পাওয়া মার্চ মাসের বেতনের পুরো টাকা খরচ হয়ে সংসারের জন্য বাজার করতে গিয়ে। বাবলি জানান, ঘরে জমানো কোন টাকা নাই, এখন বাকী দিনগুলো কিভাবে চলবে এই নিয়ে চিন্তিত সে। এখন পর্যন্ত সরকারি কোন সহায়তা পাননি বাবলি।

92020191_1519372811559552_295254348487720960_nকার্পেট কারখানার কর্মী হুইলচেয়ার প্রতিবন্ধী নোপালী চাম্বুগং জানান, কার্পেট তৈরি করে যে টাকা আসে তা দিয়ে নিজের খরচ চালানোর পর ছোট বোনকে লেখাপড়ার জন্য কিছু টাকা দিয়ে থাকেন। কারখানা বন্ধ থাকায় একদিকে কাজ নাই অন্যদিকে বেতনও পাবেন না সংসারই কিভাবে চলবে, আর ছোট বোনের জন্য কিভাবে টাকা পাঠাবেন এই নিয়ে চিন্তিত নোপালী। 

এসব নারী প্রতিবন্ধীদের সরকারের ত্রাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এসব অসহায় নারী প্রতিবন্ধীদের সাহায্যে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।