‘পুলিশ থাকলে সামাজিক দূরত্ব থাকে, এরপর থাকে না’

20200407_110928

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগম কমানোর জন্য হাটবাজারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। এসময় সরকারের উদ্যোগে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য স্বল্প মূল্যে খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) চলছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বিক্রির সময় কোনও সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হচ্ছে না।  কুড়িগ্রাম জেলা শহরের পৌর এলাকার দশটি স্পটে ডিলারের মাধ্যমে সপ্তাহে তিন দিন ওএমএস-এর মাধ্যমে চাল বিক্রির সময় মানুষের ভিড় সামলাতে পারছে না খাদ্য বিভাগ।

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) পৌর এলাকার বিভিন্ন ডিলার পয়েন্ট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

কুড়িগ্রাম শহরের ভকেশনাল মোড়, পৌরসভা সংলগ্ন, দাদামোড়সহ বিভিন্ন ডিলার পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়- চাল কিনতে সাধারণ মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। ডিলার প্রতি বরাদ্দের তুলনায় ভোক্তার সংখ্যা বেশি হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহে তিন দিন (রবি,মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার) ডিলারপ্রতি দশমিক ৮ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বরাদ্দের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি থাকায় মানুষের ভিড় সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম জানান, প্রথম দিন ডিলারপ্রতি এক টন করে চাল বিতরণের জন্য বরাদ্দ থাকলেও পরে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তা কমিয়ে দশমিক ৮ টন করা হয়। কিন্তু মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই বরাদ্দ দিয়ে ভিড় সামলানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

চাল বিক্রির ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোনও কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না- এমন কথার পরিপ্রেক্ষিতে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তদারকি কর্মকর্তাদের বিষয়টি বলে দেওয়ার পরও তারা সামাল দিতে পারছেন না। পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতা নিলেও এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। পুলিশ থাকলে সামাজিক দূরত্ব থাকে, পুলিশ চলে গেলে সামাজিক দূরত্ব থাকে না। তখন সবাই হুড়োহুড়ি শুরু করে।’

আনসার বাহিনীর সার্বক্ষণিক উপস্থিতির প্রসঙ্গে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘সেই লক্ষ্যে আমরা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। আগামী দিন থেকে সব নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশা করছি।’

সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করার ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘বরাদ্দ কম থাকায় ওএমএস-এর চাল বিক্রিতে (জনতার চাপে) সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ দিয়ে চেষ্টা করেও কাজ হচ্ছে না। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি, আগামী দিন থেকে বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পাশাপাশি বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাবও পাঠানো হবে।’

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পুলিশের পাশাপাশি আনসার ভিডিপি সদস্যদের সহায়তা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এই নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘এই পরামর্শটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিচ্ছি।’